.header-button .inner > span { font-size: 18px !important; } .header-button .inner i.fa { font-size: 40px !important; } .comment-form-message { background-color: #f4f4f4 !important; font-size: 14px !important; }

মলয় রায়চৌধুরীর সাক্ষাৎকার


১৯৬১ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে হাংরি আন্দোলন শুরু করেন মলয় রায়চৌধুরী, তাঁর বন্ধু দেবী রায়, বড় ভাই সমীর রায়চৌধুরী ও কবি শক্তি চট্টোপ্যাধ্যায়। পরবর্তীকালে উৎপলকুমার বসু, বিনয় মজুমদার, সুবিমল বসাক, সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়, ফাল্গুনী রায়, ত্রিদিব মিত্র এবং তার বান্ধবী আলো মিত্র, সুভাষ ঘোষ, বাসুদেব দাশগুপ্ত, শৈলেশ্বর ঘোষ, প্রদীপ চৌধুরীসহ আরো অনেকে। ১৯৬৪ সালের হাংরি বুলেটিনে মলয় রায় চৌধুরী’র ‘প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক ছুতার’ কবিতা প্রকাশিত হয় এবং ‘হাংরি বুলেটিন ১৯৬৪’ প্রকাশের পরে ভারতীয় আদালতে হাংরি আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়।

১৯৬৪ সালের ২রা সেপ্টেম্বর হাংরি আন্দোলনকারীদের ১১ জনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ড বিধির ১২০বি (রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ), ২৯২ (সাহিত্যে অশ্লীলতা ) ও ২৯৪ (তরুণদের বিপথগামী করা) ধারায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়; এদের ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৬৫ সালের মে মাসে অন্য সবাইকে রেহাই দিয়ে কেবল মলয় রায় চৌধুরী’র বিরুদ্ধে ২৯২ ধারায় চার্জশিট দেয়া হয়। গ্রেফতারি পরোয়ানার দরুন উৎপলকুমার বসু অধ্যাপকের চাকরি থেকে বরখাস্ত হন। প্রদীপ চৌধুরী বিশ্বভারতী থেকে রাসটিকেটেড হন। সমীর রায়চৌধুরী সরকারি চাকরি থেকে সাসপেন্ড হন। সুবিমল বসাক ও দেবী রায়কে কলকাতা থেকে মফঃস্বলে বদলি করে দেয়া হয়।

গ্রেফতারের সময়ে মলয় রায় চৌধুরীকে হাতকড়া পরিয়ে, কোমরে দড়ি বেঁধে দুই কিলোমিটার হাঁটিয়ে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৯৬৬ সালে ব্যাংকশাল কোর্ট মলয় রায় চৌধুরীকে দুশো টাকা জরিমানা, অনাদায়ে একমাসের কারাদণ্ড দেয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে মলয় রায় চৌধুরী কলকাতা হাইকোর্টে আপিল করেন এবং ২৬ জুলাই ১৯৬৭ সালে হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের রায় নাকচ করে দেয়।

মলয় রায়চৌধুরীর সাক্ষাৎকার

...ছন্দে গদ্য লেখার খেলাকে কবিতা নাম দিয়ে চালাবার খেলা এবার শেষ হওয়া প্রয়োজন। টেবলল্যাম্প ও সিগারেট জ্বালিয়ে, সেরিব্রাল কর্টেক্সে কলম ডুবিয়ে, কবিতা বানাবার কাল শেষ হয়ে গেছে। এখন কবিতা রচিত হয় অরগ্যাজমের মতো স্বতঃস্ফূর্তিতে। সেহেতু ত্রশ্নূ বলাৎকারের পরমুহূর্তে কিংবা বিষ খেয়ে অথবা জলে ডুবে ‘সচেতনভাবে বিহ্বল’ হলেই, এখন কবিতা সৃষ্টি সম্ভব। শিল্পের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা কবিতা সৃষ্টির প্রথম শর্ত। শখ করে, ভেবে-ভেবে, ছন্দে গদ্য লেখা হয়তো সম্ভব, কিন্তু কবিতা রচনা তেমন কওে কোনো দিনই সম্ভব নয়। অর্থব্যঞ্জনাঘন হোক অথবা ধ্বনিপারম্পর্ষে শ্রুতিমধুর, বিক্ষুব্ধ প্রবল চঞ্চল অন্তরাত্মার ও বহিরাত্মার ক্ষুধা নিবৃত্তির শক্তি না থাকলে, কবিতা সতীর মতো চরিত্রহীনা, প্রিয়তমার মতো যোনিহীনা, ঈশ্বরীর মতৌ অনুন্মেষিণী হয়ে যেতে পারে।...

প্রশ্ন: একজন লোক কেন লেখে? কেন?

মলয়: সবাই একই কারণে লেখেন না। প্রতিটি লেখা একই কারণে রচিত নয়। একই লোক বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বয়েসে একই কারণে লেখেন না। আমার মনে হয়, আমি লেখালিখি শুরু করেছিলুম প্রাকযৌবনের উচ্ছৃঙ্খল সাহিত্যপাঠ, বঙ্গসংস্কৃতিতে আউটসাইডার-বোধ, পারিবারিক গোঁড়ামি, সাবর্ণ চৌধুরী ক্ল্যানের সীমালঙ্ঘনের প্রেক্ষিতে।
আমি যে কেন লিখি, এই অমূলক প্রশ্নটা আমার কোনো ভারবাহী জিজ্ঞাসাবোধের অন্তর্গত ছিল না যদিও, একটি দার্শনিক সমস্যা হিসাবে প্রতিনিয়ত আমাকে এমনভাবে চিন্তিত রেখেছে যে, প্রশ্নহীনতা, চিন্তাহীনতা, এমনকি চেতনাবোধ গুলিয়ে ফেলেও, আমার লেখার সম্ভাবনা থেকে, লিখিত পাঠবস্তু থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেবার, কোনো সদুত্তর পাই না। আমার মধ্যে আমার লেখার প্রক্রিয়াটি নিজে, ওই প্রশ্নটির সঠিক উত্তর। আমি কেন লিখি, এই সমস্যাটি, সারাজীবন একই দার্শনিকতার কেন্দ্রে অধিষ্ঠিত থাকতে পারে না, কেন না, একজন মানুষের মানসিক অবস্থানগুলোর সুস্পষ্ট জলবিভাজন থাকে না।

যাঁরা মার্কসবাদী, গান্ধিবাদী, রামকৃষ্ণ অথবা শ্রীঅরবিন্দে বিশ্বাসী, কিংবা রাজ্য সরকার বা রাষ্ট্রযন্ত্রের সঙ্গে সমঝোতা করে ফেলেছেন, তাঁদের, মনে হয়, এই সমস্যাটির হাঙরের হাঁ-মুখে পড়তে হয় না। লেখালিখিটা যাঁদের ব্যবসা, তাঁরা তো জানেই কেন লিখছেন; তাই বলে আমি মনে করি না যে তাঁদের নিজস্ব অবস্থানের জন্যে তাঁদের অশ্রদ্ধা করতে হবে।

প্রশ্ন: আপনি কি হিন্দু?

মলয়: হ্যাঁ, আমি হিন্দু। কিন্তু একেশ্বরবাদ ও অরগ্যানাইজড রিলিজিয়নে বিশ্বাসী নই। আমি প্রকৃতিকে ডিভাইন বলে মনে করি। প্যাগান হিন্দুর মতো জল, আলো, বাতাসকে ডিভাইন মনে করি। তাদের নিয়ে কবিতা লিখি না।

প্রশ্ন: আপনি বলেছিলেন আত্মার ইরিটেশান থেকে হাংরি কবিতার জন্ম। ‘আত্মার ইরিটেশান’ ভাবকল্পটা একটু সহজ করে উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দিলে কঠিনতা দূর হয়।

মলয়: ঝিনুকের মধ্যে বালুকণা ঢুকলে যে ইরিটেশান হয়, তার দরুন মুক্তো তৈরি হয়। কবি যেহেতু সর্বব্যাপী এবং নিজেকে নিজে জানেন, তাই আত্মা শব্দটা প্রয়োগ করেছিলুম। আরো জানার প্রক্রিয়া থেকে ইরিটেশান হয়, যার দরুন বিজ্ঞানীরা বিজ্ঞানে প্যারাডাইম শিফ্ট ঘটান। হাংরি আন্দোলনকারীরা প্যারাডাইম শিফ্ট ঘটাবার চেষ্টা করলেন সাহিত্যে।

প্রশ্ন: আপনার কবিতাকে কেন হাংরি বলা হবে?

মলয়: কেননা আমি কবিতা থেকে কিচ্ছু বাদ দিইনি। কবিতার হাঁ-মুখে ছিল সবই গ্রাহ্য। অমুক হলে কবিতা হবে না, তমুক হলে কবিতা অসফল, এই ধরনের তর্ক সদ্য উত্তর-ঔপনিবেশিক বাংলায় মনে হত বুদ্ধিহীন।

প্রশ্ন: হাংরি আন্দোলনের কবিরা যে ক্ষুধার কথা বলতে চেয়েছেন সেটা অনেক ক্ষেত্রে স্পষ্ট হয়ে ওঠে না। এতে আপনার অভিমত কী?

মলয়: একটু-আধটু পড়াশোনা না করলে বোধগম্য না হতেই পারে। অনেক পাঠকই লেখকের ক্ষুধা খুঁজে মরেন, যখন কি না ক্ষুধাটা ডিসকোর্সের।

প্রশ্ন: হাংরিয়ালিজমের সঙ্গে ডাডাইজম এবং সুররিয়ালিজমের পার্থক্য কী?

মলয়: ডাডাইজম ও সুররিয়ালিজম হল সময়-তাড়িত চিন্তাতন্ত্রের ফসল, জুডিও-ক্রিশ্চিয়ানিটির ফসল । হাংরিয়ালিজম হল পরিসরলব্ধ চিন্তাতন্ত্রের ফসল, বহুত্ববাদী ভাবনার ফসল। ডাডাইজম ও সুররিয়ালিজম লেখককে তার মস্তিষ্ক থেকে আলাদা করে ভেবেছে। হাংরিয়ালিজম লেখককে একলেকটিক বলে মেনে নিয়েছে। ডাডাবাদী-পরাবাস্তববাদীরা জন্মেছেন আর্ট ফর আর্ট সেক-এর পৃষ্ঠপটে, তাই ভাঙচুর করছেন। হাংরিয়ালিস্টরা ‘আর্ট’ কনসেপ্টটাকেই আক্রমণ করেছেন।

প্রশ্ন: কোনো একটি কবিতা যে হাংরি সেটা বোঝার জন্য কোন বৈশিষ্ট্যগুলোকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে? সাধারণ পাঠক কী করে বুঝবেন যে কবিতা-বিশেষটি হাংরি?

মলয়: সাধারণ পাঠক কি আর কবিতা পড়েন? মনে হয় না। পাঠ্যবস্তুটি যদি সাহিত্যের তদানীন্তন উর্ধ ও নিম্ন সীমাগুলো লঙ্ঘন করে, তাহলে টের পাওয়া যেতে পারে। শৈলেশ্বর, প্রদীপ, ত্রিদিব, সুবিমল, দেবী, সুবো, ফালগুনী, উৎপল, সমীর, আমার ওই সময়ের কবিতা পড়ো। মুক্তসূচনা, ও মুক্তসমাপ্তির কবিতা, বিষয়কেন্দ্রহীন, শিরোনাম দিয়ে বিষয় চিহ্ণিত হয় না, শব্দের ও ছন্দের যথেচ্ছাচার, লজিকাল সিকোয়েন্স বর্জিত, গুরুচন্ডালি ভাষা, ইন্দ্রিয় পালটা-পালটি, প্রতীক বর্জিত, ছেঁড়া চিত্রকল্প ইত্যাদি। অথাৎ পাঠবস্তুটি বিবেচ্য, লেখক নন।

প্রশ্ন: আপনি ১৯৬৫ সালে পালামৌতে সম্বর্ধনায় লেখা ইংরেজি বক্তৃৃতায় বলেছিলেন, “আমি কবিতাকে জীবনে ফিরিয়ে দিতে চাই”। পেরেছেন কি?

মলয়: না, পারিনি মনে হয়। বঙ্গসমাজ সম্পূর্ণ বদলে গেছে, কবিতাহীন হয়ে গেছে। বাজার হয়ে উঠেছে প্রধান ডিসকোর্স। ফলে কবিতা প্রক্রিয়াটাই আজ কাউন্টার-ডিসকোর্সের চেহারা নিতে বাধ্য হয়েছে। কবিরা যেন গোপন সমিতির সদস্য। তার বাইরে বেরোলেই ঢুকতে হবে বাজারে। এখন কবিরাই শুধু কবিতা পড়ে। সে-সময়ে রাজনীতিকরাও কবিতা পড়তেন।

প্রশ্ন: দীর্ঘদিন লেখা থেকে বিরতি ঘটিয়ে যখন দ্বিতীয়বার লেখারজগতে ফিরে এলেন, তখন আপনি বলেছিলেন, নিজেকে ক্ষুধার্ত মনে করি না। কেন? ক্ষুধার্ত প্রজন্মের স্রষ্টা আপনি। তার মানে ক্ষুধা শেষ? যখন আন্দোলন করেছিলেন, তখনও কি ক্ষুধা ছিল না? কিন্তু অনেকেরই যে ক্ষুধা ছিল এবং রয়েছে?

মলয়: তুমি আবার পেটের খিদের সঙ্গে হাংরি আন্দোলনকে গুলিয়ে ফেলছ। আমলাশোল আর ডুয়ার্সে চাষি আর মজুররা না খেতে পেয়ে মারা যাচ্ছে বলে সরকারের তুলোধুনা করব। নিজেকে ক্ষুধার্ত বলতে যাব কেন? হাংরি আন্দোলন থেকে বেরিয়ে যারা সিপিএমের ছত্রছায়ায় ঢুকেছিল—যেমন সুভাষ, বাসুদেব, শৈলেশ্বর— তারাই এই গোলমালটা বাঁধিয়েছে। দিব্বি চাকরি-বাকরি করে আরামে থেকেছে আর নিজেদের বলেছে সর্বহারা।

নিজেকে সেই সময়ে হাংরি আন্দোলনকারী বলতুম, ক্ষুধার্ত বলতুম না। তাছাড়া, নিজেকে ক্ষুধার্ত মনে না করার বহুবিধ কারণ আছে। যেমন, যাঁরা মুচলেকা দিয়ে রাজসাক্ষী হলেন (সুভাষ ও শৈলেশ্বর), তারাই ‘ক্ষুধার্ত’ নামে পত্রিকা বের করতেন। তাঁদের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, পড়াশোনা, মূল্যবোধের সঙ্গে আমার কোনো মিল নেই।

...যাঁরা নিজেদের ক্ষুধার্ত বললেন তাঁরা শাসকদল ও তার শিক্ষক সংগঠনে ঢুকলেন। হাংরি আন্দোলনকারীর তো অচলায়তন ভাঙার কথা। তারা তাতে ঢুকে আশ্রয় নেবে কেন? এটা তো জোচ্চুরি। আত্মসন্মানবোধহীনতা।

উত্তরবঙ্গ আর ত্রিপুরায় অনেকে ক্ষুধার্ত ঘোষণা করেছিলেন নিজেদের। দেখলুম তাঁদের চেয়ে আমি সব ব্যাপারেই আলাদা অভিজ্ঞতা ও ভাবনাচিন্তায় তো বটেই। আবার যখন লিখতে আরম্ভ করলুম তখন চাকুরিসূত্রে সারা ভারতবর্ষ চষে বেড়াচ্ছি, বিশেষ করে গ্রামে-গ্রামে।

প্রশ্ন: শিল্পকৃতির জন্যে আন্দোলন জরুরি নয়; শিল্পী ও ভাবুকদের মধ্যে অনেকেই নির্জনে সাধনা করার পক্ষপাতি, কথাটা আপনি কতটুকু সমর্থন করেন?

মলয়: মন্দিরের আরাধ্যরা শিল্পকৃতি নন। তাঁদের উপড়ে চুরি করে ইউরোপ-আমেরিকায় কোটি-কোটি ডলারে বিক্রির পর তাঁরা হয়ে যান শিল্পবস্তু। অর্থাৎ তা থেকে ডিভিনিটি নিষ্কাশিত। শিল্প শব্দটা হল আর্ট শব্দের বাংলা, যে কনসেপ্ট এসেছে সাম্রাজ্যবাদের কাঁধে চেপে।

কবিতা, উপন্যাস লেখার জন্যে আন্দোলন জরুরি নয়, এটা ঠিক। সে-সময়ে কাউন্টার কালচারাল মুক্তধারা বইয়ে দেবার জন্যে প্যারাডাইম শিফ্ট দরকার ছিল।

আর নির্জনে একা বা অনেকের মাঝে বসে যারা কখনও সাধনা ব্যাপারটা কী, তা জানার চেষ্টা করেননি, তাঁরা অমন মধ্যযুগীয় অভিব্যক্তি প্রয়োগ করতেন। আমি আচার্য রজনীস (তখন তিনি চন্দ্রমোহন জৈন ছিলেন), রামকৃষ্ণ আশ্রম, বালটিবাবা, মোহন্ত গোরখনাথ, গাঁজাপায়ী নিরক্ষর সন্ন্যাসী, সব সঙ্গ করে দেখে নিয়েছি। লেখালিখির জন্যে দরকার বিপুল অভিজ্ঞতা। জীবনানন্দ রাস্তায়-রাস্তায় ঘুরতেন। রবীন্দ্রনাথ হিলি-দিল্লী করতেন। নানা এলাকার নানা রকম মানুষের সঙ্গে যত বেশি মেশা যায়, একজন লেখক ও ভাবুক তত বেশি সমৃদ্ধ হন। নির্জনে নয়।

প্রশ্ন: যৌনতা ব্যক্তিজীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মানুষের যৌনক্ষুধা বিলুপ্ত হয়ে গেলে অনেকটা জড়পদার্থে পরিণত হয়ে যায়। যৌনতা মস্তিষ্কগত, যে-কারনে পশুদের মত মানুষের যৌনতার ঋতু হয় না। বিজ্ঞানমতে যার যৌনশক্তি যত প্রখর, তার তত মেধার জোর, এবং সৃষ্টিশক্তি। তাহলে কাব্য-সাহিত্যে এর প্রকাশকে যাঁরা অপরাধ বলেন, তাঁরা কি ঠিক করেন?

মলয়: তারা সব বাঁজা বা হিজড়ে।

প্রশ্ন: আপনি কখনও আত্মহত্যার কথা ভেবেছেন?

মলয়: হ্যাঁ । ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার ফল আশানুরূপ না হওয়ায়। পটাশিয়াম ফেরিসায়েনাইড খেয়ে, যে কেমিকাল তখনকার দিনে বাবার ফোটোগ্রাফি ব্যবসায় প্রয়োজন হত। পিসেমশায় ধরে ফেলেছিলেন। ওরই বড়ছেলে সেন্টুদা, মানে অজয় হালদার, যাঁর কথা তুমি একবার জানতে চেয়েছিলে। শক্তিদাকে উনিই মদ খেয়ে বেহেড হবার পথে নিয়ে যান। ওই বেহেড হবার কারণেই মারা যান শক্তিদা। আমাকে পিসেমশায় আত্মহত্যা থেকে বাঁচিয়েছিলেন, কিন্তু নিজে আত্মহত্যা করে মারা যান।...

...এসটাবলিশমেন্ট ও অ্যান্টিএসটাবলিশমেন্ট শব্দদুটো বঙ্গসমাজে আমিই প্রথম এনেছিলুম। দুর্ভাগ্যবশত ক্ষমতালোভী বামপন্থীরা শব্দ দুটোর সঙ্গে আনন্দবাজারকে গুলিয়ে দিয়েছিল। মনে রাখতে হবে যে আমরা নাড়া দিতে চেয়েছিলুম প্রশাসনকে, যে অক্টোপাসের একটা আঁকশি ছিল আনন্দবাজার। এখন অন্য আঁকশিগুলোকে গণশক্তি, বাংলা আকাদেমি, তথ্যসংস্কৃতি বিভাগ, নন্দন, আলিমুদ্দিন, মহল্লা কমিটি, পঞ্চায়েত ইত্যাদি দিয়ে সহজে চিহ্ণিত করা যায়। এখন এসটাবলিশমেন্ট আরও ভয়ংকর। তার চাই লাশের পর লাশ।...
...তলিয়ে না দেখে কোনও কিছু ঘটলেই যারা গদ্য-পদ্য-গান-আঁকার মাধ্যমে একটা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন, তাঁরা ইনটেলেকচুয়াল বাফুন।...

...বাস্তবজগত একটি জীবন্ত ব্যাপার। এই জীবন্ত ব্যাপারটিকে নিয়ন্ত্রণের জন্যে খন্ডবাদ থেকে চাগিয়েছে আর প্রশ্রয় পেয়েছে সন্ত্রাস।...

[ পুনঃপ্রকাশ করা হলো। -সম্পাদক ]

মন্তব্য

BLOGGER: 1
মন্তব্য করার পূর্বে মন্তব্যর নীতিমালা পাঠ করুন।

নাম

অনুবাদ,31,আত্মজীবনী,25,আর্ট-গ্যালারী,1,আলোকচিত্র,1,ই-বুক,7,উৎপলকুমার বসু,23,কবিতা,298,কবিতায় কুড়িগ্রাম,7,কর্মকাণ্ড,17,কার্ল মার্ক্স,1,গল্প,54,ছড়া,1,ছোটগল্প,11,জার্নাল,4,জীবনী,6,দশকথা,24,পাণ্ডুলিপি,10,পুনঃপ্রকাশ,13,পোয়েটিক ফিকশন,1,প্রতিবাদ,1,প্রতিষ্ঠানবিরোধিতা,4,প্রবন্ধ,150,বর্ষা সংখ্যা,1,বসন্ত,15,বিক্রয়বিভাগ,21,বিবিধ,2,বিবৃতি,1,বিশেষ,23,বুলেটিন,4,বৈশাখ,1,ভিডিও,1,মাসুমুল আলম,35,মুক্তগদ্য,36,মে দিবস,1,যুগপূর্তি,6,রিভিউ,5,লকডাউন,2,শাহেদ শাফায়েত,25,শিশুতোষ,1,সন্দীপ দত্ত,8,সম্পাদকীয়,16,সাক্ষাৎকার,21,সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ,18,সৈয়দ রিয়াজুর রশীদ,55,সৈয়দ সাখাওয়াৎ,33,স্মৃতিকথা,14,হেমন্ত,1,
ltr
item
বিন্দু | লিটল ম্যাগাজিন: মলয় রায়চৌধুরীর সাক্ষাৎকার
মলয় রায়চৌধুরীর সাক্ষাৎকার
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEi23AFkPvS5U7w8U0kD82k4tTAyEqjYjaPbG_vss5OlZK0h_iE_DLCxZ9yJAkrqnmEyHZ-DYlKRYPBNt-LiWCEHD7gd_1zu3ClEbjhFNK9vdi35RoWwiIvGnZMncx6T5QR5DdYOdncY-X4/s320/%25E0%25A6%25AE%25E0%25A6%25B2%25E0%25A7%259F-%25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%25BE%25E0%25A7%259F%25E0%25A6%259A%25E0%25A7%258C%25E0%25A6%25A7%25E0%25A7%2581%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%2580-%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25A6%25E0%25A7%2581-%25E0%25A6%25B8%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%2595%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25B7%25E0%25A6%25BE%25E0%25A7%258E%25E0%25A6%2595%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0.jpg
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEi23AFkPvS5U7w8U0kD82k4tTAyEqjYjaPbG_vss5OlZK0h_iE_DLCxZ9yJAkrqnmEyHZ-DYlKRYPBNt-LiWCEHD7gd_1zu3ClEbjhFNK9vdi35RoWwiIvGnZMncx6T5QR5DdYOdncY-X4/s72-c/%25E0%25A6%25AE%25E0%25A6%25B2%25E0%25A7%259F-%25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%25BE%25E0%25A7%259F%25E0%25A6%259A%25E0%25A7%258C%25E0%25A6%25A7%25E0%25A7%2581%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%2580-%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25A6%25E0%25A7%2581-%25E0%25A6%25B8%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%2595%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25B7%25E0%25A6%25BE%25E0%25A7%258E%25E0%25A6%2595%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0.jpg
বিন্দু | লিটল ম্যাগাজিন
https://www.bindumag.com/2019/03/blog-post_80.html
https://www.bindumag.com/
https://www.bindumag.com/
https://www.bindumag.com/2019/03/blog-post_80.html
true
121332834233322352
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts আরো Readmore উত্তর Cancel reply মুছুন By নী PAGES POSTS আরো এই লেখাগুলিও পড়ুন... বিষয় ARCHIVE SEARCH সব লেখা কোন রচনায় খুঁজে পাওয়া গেল না নীড় Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy