.header-button .inner > span { font-size: 18px !important; } .header-button .inner i.fa { font-size: 40px !important; } .comment-form-message { background-color: #f4f4f4 !important; font-size: 14px !important; }

স্বগত কথন (কয়েকটি ছোটগদ্য ও পেইন্টিং) │ সৈয়দ রিয়াজুর রশীদ


এই উপন্যাস সেই উপন্যাস/সৈয়দ রিয়াজুর রশীদ


প্রস্তাবনা:


বলা যেতে পারে লেখকের জবানবন্দী।

লেখক আলাপ করবে পাঠকের সাথে তার নতুন বই নিয়ে।

কেন এই বই ?  কী নিয়ে লেখা  ?

পাঠক অনুভব করবে  লেখকের শ্বাস-প্রশ্বাস।

পাঠক-ই শেষ পর্যন্ত লেখকের উৎসবের উপলক্ষ।

বইমেলায় প্রকাশিত বই —ভীড়ের মধ্যে হারিয়ে যায়।

এমনকি পাঠক জানতে পারে না সব বইয়ের খবর।

কত লেখক-কবির  বই, তাদের সাহিত্য ন্যূনতম জানতে পারে নাই আমার দেশের অগণিত পাঠক।

ভাষা শহীদের রক্তের বিনিময়ে যে ভাষা দয়িতার মত আমাদের জীবনে প্রবাহিত ,  এই রক্তস্নাত ভাষায় হাতে গোনা সাহিত্যিক জন্ম নিতে পারে না!

বিবিধ বিষয়ে দারুন বই বের হচ্ছে ,  কিন্তু পাঠকের অন্তর্মহলে, বর্তমান ব্যবস্হার সীমাবদ্ধতায় পৌঁছে যেতে পারছে না।

সকল পাঠকের সঙ্গে লেখকের মিলন ও বিনিময়ের মধ্য দিয়েই তো বইটির পূর্ণাঙ্গ প্রকাশ সম্পন্ন হয়।


বই বিক্রি হয়,  পাঠক জানে না ,  এই দায় লেখকের।

সমালোচনা গড়পেটা হয়ে কেবল সমালোচকের লেখকগিরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পাঠক, – লেখক নয় এমন সব তৃতীয় ব্যক্তিদের কথায় নিজের নিজের বিবেচনা সমর্পন করছে।

এখন লেখকের বলবার সময়।

সে  তার বইকে উপস্হাপন করুক।

লেখক জানে বিষয়ের তাপ,

কী চড়াই উৎড়াই অতিক্রম করতে করতে তার লেখা হয়ে উঠল তার সন্তান।

কেন পাঠক পড়বে তার বই?

কী আছে যা অনিবার্য করে তুললো বই প্রকাশ?

অতঃপর—

পাঠক মননে  বর্ণিত পাঠসূত্র আমার বইকে পূর্ণপ্রাণ করবে বলে নিবেদিত হলাম।

জন্মদিনকে বলা যায় ব্যক্তিজীবনের পুনরাবিস্কারের তারিখ।বই প্রকাশ লেখকজীবনের পুরাত্থান, আবিস্কার ও ছায়াপথ খুঁজে নেয়ার বিরল মুহূর্ত।

হিসাবের খাতা খোলা হয়, পাঠকের মতানুসারে স্হান পায় জমা-খরচ-ইজা।পাঠকের ইস্কুলে গিয়ে শিখে নিতে যাই অজানা।

বই প্রকাশ হয়েছে রবীন আহসানের বেপরোয়া আয়োজনে শ্রাবণ প্রকাশনীর

হাতিয়ারওয়ালা।

এখানে রয়েছে একযোগে দু'টি উপন্যাস।অপরটি হচ্ছে এক যে ছিল কল্পনা।কল্পনা চাকমাকে নিয়ে।

রাষ্ট্রীয় বেনিয়াতন্ত্রের গণহত্যার দলিল হিসেবে এখানে  History  থেকে Story হয়ে উঠেছে যেন আমরা Story থেকে  Historyতে আবার প্রবর্তিত হতে পারি।

সৈয়দ শামসুল হক:আমাদের আধুনিকতার কয়েকটি দিক।–শ্রাবণ হতে আমার আরেকটা বই:যারা গড়েছেন সাহিত্য, তাদের অন্যতম সৈয়দ হক, তাকে পাঠ করেছিলাম--প্রতিটি পাঠ ছিল রচনা তৈরি হওয়ার সমসময়ে। কীভাবে সেই সময়ে অভিযোজন এবং এখনো রসায়ন চলেছে তা পরখ করে নিতে ,  আধুনিকতার প্রত্নচিহ্ন খোঁজার উপলক্ষ্য করে এই গ্রণ্থ আমাদের মনোভূমির অস্তি নাস্তি।আমাদের আধুনিকতা আখ্যান লিপিময় রয়েছে।


বেহুলা বাংলা থেকে প্রকাশ হয়

কুসুম অমৃত কথা।

এই উপন্যাস আমার অবলোকিত জীবনের আলোকিত ঘটনার উপাখ্যান।নারী-পাঠ হয়ে উঠল শেষ পর্যন্ত মেঘ তাড়িয়ে আকাশ দেখার মুহূর্ত।

লিখতে মাকে পেয়েছি ,  খুঁজে পেয়েছি নারীগণকে :ইলেক্ট্রা থেকে গাইনোকোলজি ,  এনাটমি থেকে সেক্স সাইকোলজি ও ফিজিক্স যা আমার প্রফেশনাল ডিগ্রিকে কান মলা দিয়েছে।


দ্বিতীয়:


মানুষ এখন ষোড়শ উপাচারে অনর্গল তথ্য দিয়ে আক্রান্ত, ব্যতিব্যস্ত। অজস্র তথ্যঘন মেঘের নিচে তার বোধ -বুদ্ধি মন্ত্রহীন ;সে খুঁজে পায় না তথ্য দিয়ে তথ্য গেঁথে তুলতে।

আমাদের হৃদয় আজ ঘাস। এখন কাহিনী বলার চেয়ে জরুরি হয়ে পড়েছে তথ্যকে সাহিত্যের মধ্য দিয়ে বলতে থাকা ,  সুচেতনাকে শেষ পর্যন্ত তথ্যের ক্লান্তি কাটিয়ে দ্রুত রেখ ছিনিয়ে আনতে পারবে মননের শস্য; উসকে দেবে পাঠকের সৃজন শীলতা যেন শাদাকালো কখন আলাদা হয়ে যাবে।


তৃতীয়:



শ্রাবণ প্রকাশনী থেকে পাঠকের কাছে পরিবেশিত উপন্যাস সংকলন হাতিয়ারওয়ালা। এই গ্রন্থে রবীন আহসানের সরাসরি নেমে পড়ায় একযোগে স্হান পাচ্ছে দু'টি উপন্যাস।হাতিয়ারওয়ালার মধ্যে অন্যটি কল্পনা চাকমাকে নিয়ে লেখা এক যে ছিল কল্পনা।

রাষ্ট্র মাত্র বৈধ এক নিপীড়ক ব্যবস্হা।এই রাষ্ট্রীয় বেনিয়াতন্ত্রের গণহত্যার দলিলে যুক্ত নাম কল্পনা চাকমা।

ধর্ষণ,  হত্যা ,  আগুন ও ধ্বংসের প্রেক্ষপটে জন্ম নেয়া দেশে আকাঙ্ক্ষা ছিল এই জনপদে নয় শুধু কোথাও কোন স্হানে কখনও গণহত্যায় রাষ্ট্রটি শরীক হবে না ,  হাতে মাখবে না রক্ত।

স্বাধীন দেশে আমাদের হাতে রঞ্জিত হয়েছে এই জনপদ।তখন স্বৈরকাল চলছিল।অগ্নি পরিবৃত্ত সেসময়ে পাক-প্রেতাত্মা ছুঁ মন্তর দিল যেন। গণহ্ত্যা চললো সমমানসিকতায়।একদা জাতীয়তাবাদী বাঙালি আমরা  যেভাবে জাতি নিধনের শিকার হয়েছিলাম তেমনি দুঃখজনক কাজ আমরাওঅনুরূপ নিবর্তন সুস্পন্ন করে ছিলাম।

যে অপরাধ আমাদের বিরুদ্ধে করা হয়েছিল,  সেই একই অপরাধ আমরা করেছিলাম অপর জাতি-সত্তার বিরুদ্ধে।

এক যে ছিল কল্পনা ,  উপন্যাসে  ,  গণহত্যাকে defined-redefined,  reconstruct করেছে।


হাতিয়ারওয়ালাদের কুকীর্তিতে সজনে বিজনে,  দেশে বিদেশে খুন ঝরেছে।

হাতিয়ার কেবল গোলা-বারুদ, অস্ত্র-শস্ত্র নয়, খাদ্য,  ধর্ষণ,  আতঙ্ক,  উন্নয়নের স্বপ্ন দেখানো এমন বিচিত্র বিষয়কে অস্ত্র হিসেবে হাতিয়ার হিসেবে খড়গকৃপাণ করা যায়।

কেন্দ্রীয় চরিত্র হাতিয়ার। এই হাতিয়ার ইয়োরোপীয় রেনেসাঁর পর আরও বিশদ ধ্বংসাত্মক হয়ে উঠেছে।ফলে বোমাপতন, পারমানবিক হামলায় অপর পক্ষের সৈন্য ছাড়াও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও মৃত্যুর শিকার হয় নিরীহ নারী- শিশু -পুরুষ -বৃদ্ধ।

ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা ও গুণগত মান পরিবর্তন হয়েছে।এখন যুদ্ধ শিল্পে উত্তীর্ণ হয়েছে।

বাংলায় মন্বন্তর হয়েছে।১৯৪৩-এ বা বাংলা ছিয়াত্তরে।

এসবই রাষ্ট্রীয় বেনিয়াতন্ত্রের গণহত্যা  অথচ এই গণনিধন স্বীকৃতি পায় নাই,  বিচার তো দূরের কথা।

দেশভাগ-দেশত্যাগ। মানব বিনিময়।মস্তক বিনিময়।মানুষকে তার জীবিকা,বসত,দেশ,  ঐতিহ্য থেকে উৎপাটিত করার মধ্য দিয়ে ইহুদি নিধনের চেয়েও বড় হলোকাস্ট হয়ে গেল,--  কোটি মানুষ মরল, নারী সম্ভ্রম হারালো।


এইসব আন্তর্জাতিক উদাসীন বিষয়কে উপস্হাপন করা গেল যার মধ্য দিয়ে গণহত্যাকে দেখা ও বোঝার জন্য একটি ক্ষেত্র খুঁজে পাবে পাঠক।


দুই দশক ব্যাপী ভিয়েতনাম যুদ্ধ, নানকিং গণহত্যা ,  ইরাক যুদ্ধ ;মার্টিন লুথার কিং ,  কেনেডি, গান্ধী , জিন্নাহ, চে গেভারা,  সিরাজ শিকদার ,  বঙ্গবন্ধু,  খালেদ মোশাররফ,  মঞ্জুর হত্যা : প্রাসাদ রাজনীতি ও গুণে গুণে তাদের সহযোগী মতাবলম্বীদের হত্যা ,  সব মিলিয়ে হাতিয়ারওয়ালারা করতে পারে না কোন কাজ?... সব উঠে এসেছে  এই উপন্যাসে।এই উপন্যাস লিখে চলতে চলতে চোখে লবনাক্তা অনুভব করেছিলাম।

প্রাক পেশাদারীত্বের কালপর্বে সেনার দল নরমেধ যজ্ঞ নিজের ও অপরের জন্য পরিচালনা করেছিল।

রাজনীতিতে জাসদ,  বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের আওয়াজ, খাদ্যাভাব –দেশী- বিদেশী ষড়যন্ত্র, দেশ গড়ার বদলে ভাগ্য গড়া এমন এক পরিবেশে রাজনৈতিক হত্যা, ক্যু দেতাঁ ,  সব মিলিয়ে স্বাধীনতার পর ভায়োলেন্স, কিলিং ,  বিচার ছাড়া হত্যা সব মিলিয়ে নরক গুলজারে মধ্যে হাতিয়ারের রাজনীতি, খেলা,  অস্ত্রবাজি নিয়ে আখ্যান রচনা করতে করতে যে বলাটা অনিবার্য তা নিয়ে হত্যালেখ রচিত হয়েছে এই গ্রন্থে।

History থেকে Story রচনার দিকে এই উপন্যাস নীত হয়েছে আবার যেন তৈরি করতে পারব Story থেকে  History.

এই জনপদে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিল  ১৯৭১-এ তাই আমাদের  বৈধ অবৈধ অস্ত্রধারীদের হাতে আবার কখনও গণখুনের রক্তে পৃথিবীতে কোনও নতুন কালো ইতিহাসের কলেবর বৃদ্ধি না পায় তেমন সেই নিদান ও ওঝার তুকতাক আমার এই উপন্যাসে সজ্জিত হয়েছে।


চতুর্থ:


বেহুলা বাংলার চন্দন চৌধুরী প্রকাশ করেছে আরেক উপন্যাস কুসুম কথা অমৃত।

ও মনে করে অপ্রাপ্ত বয়স্কদের না পড়া উত্তম।আমি বলি জীবনশৈলী।

আমরা কুসুমকে মনে করতে পারব।

শরীর।শরীর। তোমার মন নাই কুসুম। -পদ্মা নদীর মাঝি।

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই আলোকপাতের এন্টিথিসিস আমার এই লেখা গড়ে তুলেছে সিনথেসিস।

চতুষ্কোনে দরকার পড়েছিল বহু নারীর। তাদের ভেতর দিয়ে দেখাটার মধ্যে সত্তার বিভাজনের প্রতিপক্ষে যে নারী গড়ে উঠলো তাকে দেখলাম মেনোপজের পর বিরতিসূচক পজ দিয়ে হয়ে পড়ল স্পর্শ -আলিঙ্গন -রতিমিলন -শৃঙ্গারের ভায়োলিন,  সেই তার অর্কেস্ট্রা উৎপাদন ক্ষমতার বাইরে এসে পেয়ে গেল সত্তার ভেতরে এমন অগ্নিকাণ্ড যা তাকে পুরাণ থেকে এনে তুলে লোকায়েত পেশীর সঙ্গে নিজ জংঘার উত্থান পর্বে।

মনের একটা ভাষা থাকে। শরীরেও।এই দুই ভাষা কখনো সম্পূরক, কখনো বিপ্রতীপ।

অবলোকিত জীবনের আলোকিত পর্বের সূত্রবদ্ধ এই নারী-পাঠ।

এখানে যে Story বাহাদুরি করে সেখান থেকে ঘটবে History যা কখনও মুণ্ডুপাত করবে না।

এই উপন্যাসে নারী শরীরের ধূসরতা সূর্যঘ্রাণ পেয়েছে।

তবে পর্নোগ্রাফি কি ?

মানুষকে নিচে নামায় পর্নোগ্রাফি।

যৌনতা যোগায় জীবনের আনন্দ।উদ্দীপনা।

কুসুমের মধ্যে পেয়ে গেছি সেই ঘন নিঃশ্বাস।

সুস্হ সতেজ ভরা যৌন সম্বন্ধের পক্ষে সমাজকে  প্রস্তুত করার অংশ এই উপন্যাস।


নারীকে পুরুষের খোরাক করা হয়েছে –সিনেমার রূপকথায় তাকে পুঁজি করা হয়েছে— বাচ্চা দিতে সংসারে লগ্নি করা হয়েছে —ধর্মের পরীক্ষা দিতে মনোনীত করা হয়েছে —বিছানায় ফেলে ছোবল মারা হয়েছে।

শয্যায় তাকে অবিরাম হাহাকার করতে হয়।তার শরীরের ভাষার জন্য কেউ রক্ত দেয় না। নিজেদের ক্ষরণ -মরণ নিয়ে নিজেরা মরে। বেশ্যা তাদের জন্য রাখা বেসরকারী নামাবলী ।পুরুষ নারী-শরীর ভাষার উত্তর জানে না বলে পলাতক হয়ে মনের ভাষার দোহাই দেয়।

আমার জন্যও এই উপলব্ধি বয়ানে অতি মানুষ হতে পারি নি।পাঠক যখন পড়বেন তখন অনুভব করবেন উর্দ্ধে পতন।

আমার রক্তাক্ত পুরুষ শরীর,  এই নিয়ে চ্যালেঞ্জের সম্মুখিন।

স্ব-মেহনে পুরুষ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে অথচ যৌনতা জীবনের সম-বয়সী,  তাকে ভয় থেকে গোপন হত্যা –নিজের নারীকে অথচ ব্যাভিচার যখন তাকে একতরফা মত্ত করে সে থাকে উল্লসিত যেমন ধর্ষণকালে।

রাষ্ট্রে গুম খুন হয় মানুষ অথচ নারীর শরীরী ভাষাকে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ খুন গুম করে, কোন প্রতিবাদ কেউ করে না।আমরা তো আমরাই।

জীবনের তথ্যগুলো বায়োলজি বইয়ে শ্লীল অথচ সাহিত্যে অশ্লীল।

এই উপন্যাস লিখতে লিখতে শিখেছি অনেক।

উপন্যাসটি নারী-পাঠ, শরীরের রসায়ন, সেই ভাষার ব্যাকরণ।

সে শরীরের স্বাদ পেয়েছিল প্রথম, আমাদের সাহিত্যে জীবনে এমন যে কথা প্রায়ই পাওয়া যায়, এই উপন্যাস এমন বাক্যের সমাপ্তি টানবে।

মন থেকে শরীরে কামনা তৈরি হয় কি হয় না, তাই নারীকে আলিঙ্গনে নিয়ে প্রবেশ পথ খুঁজতে থাকলে অকপটে সে বলে উঠতে পারে কি পারে না মন প্রস্তুত নয় তার।

সময় যায়।শরীরের সঙ্গে সঙ্গে মনটাও বিটোভেন কোয়েৎজার সোনাটা হয়ে যায়।

নারী সন্তান ধারণ করে।রজঃ বেলাও প্রকৃতির নিয়মে থাকে।রজঃ নিবৃতি নারীর গর্ভ সঞ্চারে অগ্রসর করে না– যেন তার উৎপাদন ক্ষমতা হারিয়ে ভাবতে থাকে পৃথিবী আর তার সৃষ্টিতে হাসবে না।

প্রকৃতির নিয়মে এমন অভিজ্ঞতা তাকে নিজের শরীর বহনকে মনে  হয় নিজের শবটানা! ! যদি তাই মনে করছি তো আমাদের আরোপ সামাজিক প্রকাশ্য হত্যা।নিজেই নিজের অনার কিলিং।

নারীর শরীর বলতে নারী নয় শুধু, পুরুষেরও যে একটা শরীরের ভাষা আছে এবং পুরুষের শরীর নারীকে টপকে যায় তেমনি নারীর মরা শরীরও হয়ে থাকে নিশ্চিত সীমাহীন।

নারীর মত পুরুষ গর্ভ দান করে না।নারীরও সব সময় তা হয় না। পুরুষ ও সেই নারী এক সমতলে দাঁড়িয়ে থাকে।উভয়ই শরীরময় ভাষা নিয়ে নদীর মত।


বৃক্ষে বৃক্ষে বিষ করবী হয়।দেহ নিঃসৃত অনুভব।কাম প্রেমের সঙ্গম।ক্ষুধা-তৃষ্ণা আনন্দ হল-প্রেমরস নইলে পাথরের নিচে কান্না জমবে।


মেঘ দে পানি দে,  সঙ্গীতের মুর্চ্ছণা এই উপন্যাস।

মনু বলেন,  নারী হল ভূমি।পুরুষ হল বীজ।তাই পাপ কোথায়?

লাঙলের ফলাও লকলকে হওয়া দরকার।


এই উপন্যাস সেই উপন্যাস।



চোখে হারাই

হৃদয়ে হারাই

সৈয়দ রিয়াজুর রশীদ 


চোখে হারাচ্ছি, হৃদয়ে হারাচ্ছি;

হারিয়েছি তাকে। বিনিময় হয়নি শেষ ভাষ্য,  চিরহারা হয়ে গেল সেই উষ্ণতা।

আটত্রিশ বয়সে বাবাকে না ফেরার দেশে পাঠিয়ে যখন তীব্র রোদ-বৃষ্টি, পায়ের তলায় ভূ-কম্প আর সামনে অজস্র সুনামি  ---

আবিস্কার করলাম নীল চাদোয়া।

এমনই সামিয়ানা যা প্রত্যহ।

মুদ্রা গুজে দেয়া নয়, পদবি ঠিক করে দেয়া নয়,  আর্থিক কৃপাভ্যাস নয় বরং অগ্নিকুম্ভে দাঁড়িয়ে নৃত্যাচারের মন্ত্র।

না,  কবি করেন নাই।সাহিত্য পদকের জন্য অঙ্গুলি হেলন করেন নাই; কত অর্থস্নাত হবার আয়োজন ঘুরে ঘুরে নৃত্য করে , – তার জন্য নিজেকে ব্যতিত এইটুকু সম্মান যে ,  তিনি আমার জন্য যোগ্য মনে করেন নাই।

তার ভাষায় গুপ্ত সমিতি করা।আমি সেই সমিতির সভ্য।তাই বিচরণ ক্ষেত্র– পৃথক পালঙ্কে আসর জমিয়েছিলাম বলেই আজও অক্ষুন্ন ও বুক উঁচু করে দাঁড়াবার জায়গা যে , আনুকুল্য ও প্রাচীন বংশের আবাদি ক্ষমতায় লেখককৃতি রচিত হয় নি।এ আমার নিজস্ব নির্মাণ।কারো দয়া নয়।ব্যর্থতা ও সফলতা– নিজস্ব।

বাবার বই সম্ভার, তার সারল্য, আমার মায়ের গল্পগাঁথা নিয়ে আজ সাহিত্য রচনার প্রেরণা তাদের করকমলে,  কতিপয় সামান্য মানুষের জন্য তুলে রাখতে পেরে আমার গৌরব।অহংকার।

আমার মুক্তি এইখানে যে ,  নিজের পরিচয়ে নিজস্ব লেখার শক্তিতে কেবলই হব বিরাজমান, কেবলই হব সর্বত্র, কেবলই পাব সম্মান এবং বরাদ্দ থাকবে আমার জন্য যা কিছু অসম্মান।

আমার জন্য লেখালেখি-দেখাদেখি আশ্রয় প্রশ্রয় রাখেন নি।হয়তো অভিমানের কাঁটা থাকতে পারে কিন্তু গৌরব এই যে ,  ভাঙাচুড়া মানুষ হিসেবে এখনো ভাল বই কেনার জন্য সংগ্রামরত, প্রাণান্ত ক্ষুন্নিবৃত্তির জন্য আধ পেটা বেঁচে থাকা এই আমি অজস্র কাঁটাতার টপকে,  তার কাছ থেকে উপহাস তীব্র"  কীভাবে চলে তোর?আমার তো কাজ না করলে চলে না।তোর চলে কীভাবে ? "

উত্তর দেয়ার প্রয়োজন ছিল না।

তিনি তো বড় হৃদয়ের মানুষ।অর্থবান লোকদের হৃদয় ব্যথা অনুভব করেন,-- তাদের জন্য যাবতীয় আয়োজন,আর নিজস্ব মৃত্যুর অধিক লালক্ষুধা।

ব্যবহার ব্যবহৃত হয়।তিনি ব্যবহার করেছিলেন।আমি করি নাই।

তিনি গোয়েবলস ছিলেন।আত্ম প্রচারিত,  চূড়ান্ত উপহার সমৃদ্ধ, পুরস্কৃত,  এবং মিথ।

মিথ্যা তাকে সমৃদ্ধ করেছে বলেই অধিক মূল্যায়িত মানুষটাকে আজ মাগরিবের গোধুলি বেলায় আমার আব্বাকে যখন খুব খুব মনে পড়ছে- মনে পড়ছে তখন

ভাবনা ও ক্রন্দন এই মত যে ,  লড়াই শেখানোর মানুষটাকে না চিনে ক্ষমতার তল্পিবাহক বাবার সততার বিপ্রতীপ অসৎ এক মানুষকে নিয়ে লিখেছি আমার সত্যস্বীকার।

এসব কথা বলছি মহাকালের বিবেচনায়।

আমি ভাঙাচোরা বিস্রস্ত মানুষ হয়েও তার দায়, তার জন্য করণীয় শেষ করেছি। যত অক্ষর পাত করেছি তার জন্য,  সেটা ঋণ স্বীকার, ঐ যে একদা তার মিথ্যা বানানো দেখে সত্য বানানোর শিক্ষা পেয়েছিলাম।

তার অকৃতজ্ঞতার মহড়া দেখে কৃতজ্ঞতা স্বীকারের ভাষা উন্মোচন করেছি।

এখন জাগতিক কোনও কাজে গেলে মুর্খের মত কেউ বলবে না, মিথ্যা বিভ্রান্তিতে ডুব খেয়ে বলবে না  ,  আপনার এত বড় ক্ষমতা ওয়ালা মানুষ থাকতে কেন কষ্ট, কেন, কেন,  কেন, কেন.....

আমাকে এখন আর কুযুক্তি দিয়ে চোরের মত পালিয়ে আসতে হবে না।

আমি মুক্ত। এবার সবাই জেনে যাক, সবাই পারে না করতে আমার জন্য, –যারা পারে সেই লোকজন এখনো পাশে কাঁধে কাঁধ দিয়ে বই -লেখা, পড়া শোনা জীবন- যুদ্ধে পরিচালনা করেছে আমাকে:কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করব তাদের কথা:শাহ মোহাম্মদ আলম,রাজা সহিদুল আলম।

সাগর নীল খান দীপ,চন্দন চৌধুরি,

রবিন আহসান।এবং যুক্ত আরো সব নাম।


ত্রাণকর্তা নারীদের নাম বললাম না।

নারীরা আজও দুর্গতিনাশিনীর মত আমার পাশে।তাদের অসামান্যতার কাছে সামান্য আমি।

জননী নিঃসন্দেহে অনন্যা।

রবিন আহসানকে বলব, চন্দন চৌধুরিকে বলব, সাগর নীল খান দীপকে বলব, রাজা সহিদুল আসলামকে বলব,শাহ মোহাম্মদ আলমকে বলব আমি তোমাদের কাছে এতটা ঋণী যে তার চেয়ে বেশি দরকার হবে না এই জীবনে।হাবিব ওয়াহিদ,  যে আমার এমন কাছের মানুষ –অনেক বেশি বন্ধু, অনেক বেশি সম্পাদক, অনেক বেশি পরিকল্পক এবং তার কাছে পাওয়া যায় জীবন বাঁচানো,  সাজানোর প্রসারিত হাত।হাবিব ওয়াহিদই তো ঋণ ব্যবস্হা করেছিল, যেখানটায় নিভৃত চর্চা প্রতিদিন লেখায়।প্রতিদিন পাঠকের বিবেচনা যেখানে।

অকল্পনীয় বন্ধুত্বের সূত্রপাত ও দিনাতিপাত ছিল যার সঙ্গে সে —ওয়াসিউদ্দিন আরজুকে কীভাবে পারব থাকতে ভুলে--আমি গর্বিত যে আরজুর বন্ধু ছিলাম।


যখন এইসব মানুষজন এবং অপরিচয় হয়তো সকলের – তাছাড়া,নিজের জানের মত প্রিয় কিছু মানুষ অনুল্লিখিত থেকে গেল যারা –তাদের কথা মনে করলে বুঝতে সক্ষম কারা সৈয়দ রিয়াজুর রশীদকে এই নামে খ্যাত করবে।


চোখে হারাই,  মনে হারাই এই জন্য প্রতিবছর যখন দারুন চৈত্রমাস,  তিনি আসতেন।আমার বই, প্রকাশিত বই কিংবা লিটল ম্যাগাজিন,  –স্বীকার করব,  বড় অধীর চিত্তে গ্রহণ করে আগলে নিয়ে বাড়ি যেতেন অথবা ফেলে দিতেন গাড়ি থেকে রাস্তার কোনও নির্জনতায়, –অজানা, –

শুনতে পাই বলে নাটকীয় প্যানারোমা কখনো পাই নি।

অথচ আমার প্রহারকারীকে আদরে,  তার বই নিয়ে উচ্ছ্বসিত অশ্রুপাতের দরকারি ভুবনে শব্দ দিয়েছেন।

আমার তুচ্ছতাকে তিনি চোখ দিয়ে বুঝিয়ে সমগ্র চরিত্রকে চিনিয়ে দিয়েও আমার কাছ থেকে যা দরকার আদায় করে আরো ঝুঁকি পূর্ণ করেছেন  আমাকে।বড় বাজে লোক ছিলেন।

তাই আমি এবারও তামাশা দেখতে না  পেয়ে খোলা মন জানালা নিয়ে আমার নতুন বই শ্রাবণ প্রকাশনী থেকে

হাতিয়ার ওয়ালা,

সৈয়দ হক, আমাদের আধুনিকতার কয়েকটি দিক;

বেহুলা বাংলা থেকে

কুসুম কথা অমৃত

বের হল যেবার তখন আরেক চৈত্র সমুপস্হিত, আসছে নববর্ষ,  খুব রংদার মানুষটাকে ভাবতে পারছি যে, না তিনি আর কোনও দিন আসবেন না।কোনও দিন তাকে আমাকে কোনও ভান করার খেলায় মত্ত হতে হবে না।

আজ কেন এত কথা,  এভাবে হারানো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ তা নিয়ে বিস্তারিত আরো বলব।

মহাকাল আমার জন্য দায়িত্ব দিয়ে গেছে।

আপাতত এইটুকু।আমার গর্বিত কোন লেখা না এটা বরং রোদন ভরা বসন্ত।



নারী ও আমি

সৈয়দ রিয়াজুর রশীদ


আঁকা-বাঁকা শরীর: বৃক্ষ ও নদীর। নারী শরীরও খাঁজকাটা, বেগবান, পল্লবিত । নদীর পাশে বৃক্ষ থাকতে হবেই। মানায় না বৃক্ষ ছাড়া কোনো নদীকে। নদী নিজের মনে আপন তালে বহে চলে। রোদের কিরণ লেখা নদীতে ভাষা রচনা ও খেলা করে। খুশিতে ডগমগ জল চিক চিক করে। মেঘ যখন আকাশে জমা হয় আবার নদীর এত বড় বাঁকময় বঙ্কীম শরীরের কোনো কোনো অংশে ছায়াপাত করে নদীকে মগ্ন রাখে। নদী কখনো কখনো কাঁচের মতো –তখন আকাশ জোড়া মেঘের অজস্র কারুকাজ মুখ দেখে আঁতসে–এবং হেসে ওঠে। নদীর পাড় ঘেঁষে রয়েছে যে বৃক্ষ, বেড়ে ওঠে, শাখা-প্রশাখা, ডাল বিস্তার ও সবুজ জামায় দেহটিকে ঘিরে বৃক্ষটির চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে উদ্ভাসিত নতুন রূপ ও বিন্যাস সৃষ্টি করে। শান বাঁধানো আসনে বসে নদী ও বৃক্ষকে তন্ময় দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে থাকতে আবিস্কার হয় যে, এক নারী শরীর, কোনো দিন তাকে দেখিনি আগে। এই শরীর ও নারীকে। নারীটির মতো নদীর শরীর প্রান্তরে বিছিয়ে থাকে। শরীরী আহ্বান করে। নিমজ্জিত করে ফেলতে চায়। কামনায় জলজ করে তোলে সত্তা। নদী, আমাদের নারীরা যেন, সকাতর চোখে অপেক্ষা করে। মাঠ ভেঙে আসবে কালপুরুষ। জলমগ্ন চোখ খুঁজে- খুঁজেও পায় না কোনো উন্মোচিত পুরুষ যে আশ্লেষে নিজেকে নদীর কাছে করবে নিবেদন। নদীকে হৃদয়ের মধ্যে ধারণ করবে। নদীতে এত জল তাই জলের প্রয়োজন পড়ে না চোখের। আরও কত জলের ও কান্নার দেখা হয় না। চোখ শুকিয়ে নদীর বুকে সব জলরাশির আশ্রয় ও সমাবেশ। নদীর ছলছলে চোখ নির্নিমেষে দেখে জলের দোলায় একলা একেকটা নৌকো। জল বিধৌত নদীর দীঘল চোখের পলকহীন, অনুসন্ধিৎসু অবলোকন করে চলে ডাইনি, মৎস্যকন্যা, মাৎস্যন্যায় ও জলচর। একদা নৌকো ও নদী জেগে ওঠে এই বাংলায়। নদী হয়ে ছিল ঠিকানা, মানুষের। নদী ছিল পদ্মা, নদী ছিল মেঘনা। মজিবর নাই, মাঝি নাই নৌকোর কোনো। জল ছলাৎ ছলাৎ নদীর চোখ কোথাও কোনো কান্ডারী দেখে না, শুধু এক শূন্যতা হাহাকার চোখের সামনে। নদীর কলকল ধ্বনি। নদীর জলতরঙ্গের মধ্যে কোথাও শীৎকারের বীজ রয়েছিল লুকোনো ফাল্গুনের পূর্ণিমার কোনো এক রাত্রে। জলের সঙ্গে জলের। নদীর সঙ্গে বৃক্ষের। নদী আর নারীর। বীজাধারে এই শীৎকার নদী অথবা বৃক্ষ অথবা বৃক্ষের শরীরে বীণার মতো বেজে চলছে। নিশুতি রাতে নদীর ভেজা-ভেজা কণ্ঠস্বর উস্‌কে দেয় চলকে দেয় তীরঘেঁষা বৃক্ষের জন্য কামনার ঝংকার। বৃক্ষকান্ড, প্রসারিত উরু যুগলের মতো উদগ্র আহ্বান করে কামনাতপ্ত শরীরে। কামাগ্নি স্পর্শে চিহ্ন রাখে বৃক্ষের শরীরে। যোনি-প্রদেশ ও নাভিমন্ডল, বর্তুলাকার যুগল স্তন, প্রশস্ত উদ্বাহু—জ্বলনে দহনে নির্বাপন সূত্র হয়। শরীরে দ্রবীভূত হয়ে যায় কামনার রশ্মি। নদী ও বৃক্ষ কতবার হয় এলোমেলো, তছনছ। নারীর মতো। নদী, বৃক্ষ ও নারী অভিজ্ঞ করে তোলে। পাঠ দেয়। কামকলায় ও শৃঙ্গার যোজনায় যৌনতা সহস্রবার পুষ্পিত হয়।


চিত্রণঃ লেখক


মৃত্যু ও আমি

সৈয়দ রিয়াজুর রশীদ


একদিন আমাকেও চলে যেতে হবে। সকলের মতো। কোনো যোগাযোগ থাকবে না। কারো সঙ্গে। স্বজনের সঙ্গে নয়। প্রেয়সীর সঙ্গে নয়। বন্ধুদের সঙ্গে নয়। কোলাহলের সঙ্গে নয়। লেখার টেবিল, পড়ার ঘর, গান শোনার বাকস, ঘর ভর্তি টেরাকোটা এইসব কোনো কিছুর সঙ্গে থাকবে না যোগাযোগ। নিষ্প্রাণ, সে অপেক্ষা করবে অনন্তের জন্য। একদা তো পা বাড়িয়ে ছিলাম। বেদনার মাস এক আগস্টে একুশ তারিখ দুই হাজার পাঁচ সেদিন। মৃত্যু হ্যাঁচকা টান দিয়েছিল নিয়ে যাবার জন্য। যন্ত্রণায় ছটফট হাসপাতালে। মৃত্যু একা ফিরে যাবে না। কবলিত করে এক বৃদ্ধাকে মৃত্যু নিয়ে যাত্রা করে অনন্তের অচেনা অমোঘ সেই পথে। বৃদ্ধা আয়ু দান করেছিল। বৃদ্ধার জন্য কান্না করার সময় মঞ্জুর না করে মৃতদেহ অপসারিত করে হৃৎপিণ্ডের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে দ্রুত প্রতিস্থাপিত নিজেকে অতঃপর ধবধবে শাদা চাদরে নাকে নল, শিরায় রক্তের সঙ্গে নলবাহী ঔষধ, স্ক্রীনে হৃৎপিণ্ডের সচল রেখা-চিত্রে ক্রমে বাহাত্তর ঘন্টা উত্তীর্ণ হয়েছিল। বেঁচে ওঠা, এই বেঁচে থাকা,-- কেবল মৃত্যুর হীম শীতল জগৎ ডাকে তবু। কফিনে শুয়ে থাকবে লেখক নীল মৃত্যু যখন নেমে আসবে। তবু দিন থাকবে অনুপম। কফিনে শোয়া লেখক। পাশে কাপড় শুকানোর তারে রোদ থেকে তাপ শুষে নেবে ভেজা ব্রেসিয়ার, জামা, পাজামা– লাল, নীল বহুরঙা, শাদা আন্ডারওয়্যার শোভা পাবে। নীল আসমানে চাঁদ ও সূর্যের গায়ে বাইসাইকেল শূন্য পরিক্রমা করবে শুধু। বালকের সাইকেলে চলমান বালক নেই। বালক শুয়ে থাকে কফিনের ভেতর। লেখকের ভেতর। সূর্যের লাল- কমলা রোদ, তারা খচিত বুটিদার আকাশ চাদরের মতো বিছিয়ে থাকবে। উড়ন্ত নীল চাদর মেঘ ও ঢেউয়ের মতো লাল রোদ সভা করবে কফিনকে ঘিরে। অনাঘ্রাতা কোনো নারী সমস্ত শরীর উপুড় করে কামনার আগুনে লাল বিদ্যুতায়িত হয়েও একটি উষ্ণ সংগমের জন্য জাগাবে না লেখকের দেহ।

চিত্রণঃ লেখক


সূচিপত্র লিংক

মন্তব্য

নাম

অনুবাদ,31,আত্মজীবনী,26,আর্ট-গ্যালারী,1,আলোকচিত্র,1,ই-বুক,7,উৎপলকুমার বসু,23,কবিতা,298,কবিতায় কুড়িগ্রাম,7,কর্মকাণ্ড,17,কার্ল মার্ক্স,1,গল্প,54,ছড়া,1,ছোটগল্প,11,জার্নাল,4,জীবনী,6,দশকথা,24,পাণ্ডুলিপি,10,পুনঃপ্রকাশ,13,পোয়েটিক ফিকশন,1,প্রতিবাদ,1,প্রতিষ্ঠানবিরোধিতা,4,প্রবন্ধ,150,বর্ষা সংখ্যা,1,বসন্ত,15,বিক্রয়বিভাগ,21,বিবিধ,2,বিবৃতি,1,বিশেষ,23,বুলেটিন,4,বৈশাখ,1,ভিডিও,1,মাসুমুল আলম,35,মুক্তগদ্য,36,মে দিবস,1,যুগপূর্তি,6,রিভিউ,5,লকডাউন,2,শাহেদ শাফায়েত,25,শিশুতোষ,1,সন্দীপ দত্ত,8,সম্পাদকীয়,16,সাক্ষাৎকার,21,সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ,18,সৈয়দ রিয়াজুর রশীদ,55,সৈয়দ সাখাওয়াৎ,33,স্মৃতিকথা,14,হেমন্ত,1,
ltr
item
বিন্দু | লিটল ম্যাগাজিন: স্বগত কথন (কয়েকটি ছোটগদ্য ও পেইন্টিং) │ সৈয়দ রিয়াজুর রশীদ
স্বগত কথন (কয়েকটি ছোটগদ্য ও পেইন্টিং) │ সৈয়দ রিয়াজুর রশীদ
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiQ_SLPx8jtMMnOq8PGfHW9iOovZF4A35RxxmruUDS1YvWU-fBE9lMqJlVDUSqY-D2IQwblF4u8XiVziPfmbnW0jTqYviYVFbaqZWxpjaxh0axe4S0PuzuS6xH7aJZq-fz7dnqBsxpFJv2QsJTOogzvPKsv9KZ1mc94KA-V4sx2HeKvvQ7FrjGAbYY7M7Y/s16000/Syer%20Riazur%20Rashid%20bindumag.png
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiQ_SLPx8jtMMnOq8PGfHW9iOovZF4A35RxxmruUDS1YvWU-fBE9lMqJlVDUSqY-D2IQwblF4u8XiVziPfmbnW0jTqYviYVFbaqZWxpjaxh0axe4S0PuzuS6xH7aJZq-fz7dnqBsxpFJv2QsJTOogzvPKsv9KZ1mc94KA-V4sx2HeKvvQ7FrjGAbYY7M7Y/s72-c/Syer%20Riazur%20Rashid%20bindumag.png
বিন্দু | লিটল ম্যাগাজিন
https://www.bindumag.com/2023/11/blog-post_141.html
https://www.bindumag.com/
https://www.bindumag.com/
https://www.bindumag.com/2023/11/blog-post_141.html
true
121332834233322352
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts আরো Readmore উত্তর Cancel reply মুছুন By নী PAGES POSTS আরো এই লেখাগুলিও পড়ুন... বিষয় ARCHIVE SEARCH সব লেখা কোন রচনায় খুঁজে পাওয়া গেল না নীড় Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy