.header-button .inner > span { font-size: 18px !important; } .header-button .inner i.fa { font-size: 40px !important; } .comment-form-message { background-color: #f4f4f4 !important; font-size: 14px !important; }

কামুর ডায়েরি ১৯৪৬ [আলব্যার কামু’র নিউইয়র্ক ভ্রমণকাহিনী]

Camus camel
টাইমস স্কয়ারে ক্যামেল সিগারেটের বিলবোর্ড, ১৯৪৩। ছবি তুলেছেন জন ভাচোন। কংগ্রেস লাইব্রেরি’র প্রিন্ট ও ফটোগ্রাফ শাখা, যুদ্ধ বিষয়ক তথ্যের অফিস, নিরাপত্তা বিষয়ক প্রশাসন এর সৌজন্যে সাদা-কালো নেগেটিভ থেকে

কামুর ডায়েরি
আলব্যার কামু’র নিউইয়র্ক ভ্রমণকাহিনী
অনুবাদ: সুশান্ত বর্মণ

[১৯৪৬ সালের মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত আলব্যার কামু উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চলসহ কানাডা ভ্রমণ করেন। ফ্রান্সের লে হ্যাভরে বন্দর থেকে ‘অরিগন’ নামের এক যাত্রীবাহী কার্গো জাহাজে রওনা হয়েছিলেন। পশ্চিমমুখী এই যাত্রায় তাকে দুই সপ্তাহকাল সাগরবুকে থাকতে হয়। ভ্রমণের অবসরে ‘প্লেগ’ উপন্যাস লিখছিলেন। চার বিছানার একটি কক্ষে চারজন মিলে থাকতেন। আটলান্টিকের অপার প্রকৃতি সহযাত্রীদের মধ্যে বন্ধুত্বের বন্ধন তৈরি করে। জাহাজে বেশ কয়েকজনের সাথে বন্ধুত্ব হয়েছিল কামুর। যুদ্ধবিদ্ধস্ত ইউরোপের অভিঘাত কামুর চোখ খুলে দিয়েছিল। দেখা পেয়েছেন নতুন দর্শনের দিশা। দু’য়ের অভিজ্ঞান সাথে নিয়ে কামু নিউইয়র্কের মাটিতে পা রাখেন। মুখোমুখি হন রাজনীতি ও অর্থনীতিতে বলশালী আমেরিকার। প্রথমেই চারপাশের উপচে পড়া প্রাচুর্য কামুর দৃষ্টি কাড়ে। নিউইয়র্ক, ম্যানহাটান প্রভৃতি শিল্পসমৃদ্ধ শহরের আকাশচুম্বী উঁচু ভবন এবং আলো-ঝলমল বিজ্ঞাপনের বিলবোর্ডগুলোর প্রকট আলো তাকে হতাশ করে তোলে। মানবতার অপচয়ে কাতর হন। ইংরেজি ভাষায় তেমন দখল তার নেই। তারপরও নিজের স্বতন্ত্র দর্শনবোধ দিয়ে তিনি আমেরিকার বিদগ্ধ মানুষদের মন জয় করেছেন। আমেরিকার অনেক কিছু কামু'র ভাল লাগেনি। তবে অকপটে মনের ভাব প্রকাশ করেছেন। কামু'র বক্তব্য আমেরিকার সমালোচকদের কাছে অস্বাভাবিক লাগেনি। তারা ক্ষুব্ধ হননি। বরং আমেরিকার বৈচিত্রময় রূপের অজানা দিক তার দৃষ্টিকোণ থেকে জানতে পেরে খুশি হয়েছেন। গণতন্ত্রের মর্যাদা সমুন্নত রেখেছেন।
১৯৪৯ সালের জুন-আগস্ট মাসে তিনি দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন এলাকায় ভ্রমণ করেন। ততোদিনে তাঁর সাহিত্য ও দর্শনবোধ তাকে বিশ্বনন্দিত তারকায় পরিণত করেছে। ৪৬ বৎসর বয়সে ১৯৬০ সালে এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি মারা যান। মৃত্যুর পূর্বে তার মধ্যে আর পুনরায় আমেরিকা ভ্রমণের আগ্রহ জাগেনি। এটা ঠিক যে, আমেরিকার যে রূপ তিনি দেখেছেন এবং অনুভব করেছেন তা আমেরিকার বহুরূপের এক খণ্ডিত চিত্র মাত্র।
তাঁর ‘নোটবুক’-এ উত্তর এবং দক্ষিণ আমেরিকা ভ্রমণের বিস্তৃত বিবরণ লিখে রেখেছিলেন। রচনাগুলো আয়তনে এতটাই বড় যে সেগুলো আলাদা বই হিসেবে প্রকাশ করা যেত। বইগুলোতে কিছু বিষয়কে আলাদা শিরোনামে লিখেছেন। সেগুলো এরকম- ‘নিউইয়র্কের বৃষ্টি’, ‘কাছের সাগর’, ‘গ্রীষ্মকাল’, ‘বর্ধিষ্ণু পাথর’ ইত্যাদি।
উত্তর আমেরিকার বাড়াবাড়ি রকমের ঐশ্বর্য কামুকে মানসিকভাবে আঘাত করে। প্রথম দেখাতেই বিকট এবং অমানবিক বলেছেন। তবে, আমেরিকার যেখানেই গেছেন, ‘দ্যা স্ট্রেঞ্জার’ উপন্যাসের লেখককে সবাই উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছে। নিউইয়র্কারসহ বিভিন্ন বিখ্যাত পত্রিকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সাক্ষাৎকার ও বক্তৃতা দিয়ে বেড়িয়েছেন। আমেরিকার মানুষ তাঁর বক্তৃতা শুনতে দলে দলে যোগ দিয়েছিল। কলাম্বিয়া’র ম্যাকমিলান একাডেমিক থিয়েটারে প্রদত্ত এক বক্তৃতা শুনতে দেড় হাজারের মত শ্রোতা এসেছিল। প্রত্যেক জায়গায় তিনি যুদ্ধের বিরুদ্ধে, শান্তির পথে, মানবতার আহ্বান ঘোষণা করেছেন। আমেরিকার বৌদ্ধিক চেতনায় দৃঢ় ছাপ রেখে যাওয়া এই ভ্রমণ কাহিনী ফরাসি ভাষায় প্রথম প্রকাশ হয় ১৯৭৮ সালে। রবার্ট ব্লুমকৃত ইংরেজি ভাষার দ্বিতীয় অনুবাদ প্রকাশিত হয় ২০২৩ সালের মার্চ মাসে। কামু'র ডায়রির বঙ্গানুবাদকৃত অংশটি এই অনুবাদের নির্বাচিত অংশ। এখানে উত্তর আমেরিকায় ভ্রমণের কয়েকটি ঘটনা স্থান পেয়েছে। গ্রহণ করা হয়েছে প্যারিস রিভিউ পত্রিকার ১৪ই মার্চ ২০২৩ সংখ্যা থেকে।]
কামুর ডায়েরি
আলব্যার কামু’র নিউইয়র্ক ভ্রমণকাহিনী

রবিবার: তারা ঘোষণা করল, আমরা সন্ধ্যাবেলা পৌঁছাব। ঘুর্ণিপাকের মত সপ্তাহটা কাটল। মঙ্গলবার সন্ধ্যায়, একুশতমবার, আমাদের টেবিল সিদ্ধান্ত নিল যে, বসন্তের আগমন উদযাপন করা হবে। ভোর চারটা বাজা পর্যন্ত এলকোহল চলল। পরের দিনও। আটচল্লিশ ঘন্টার মনোরম আনন্দচঞ্চল সময়। এই সময়ের মধ্যেই আমাদের সম্পর্কগুলো গভীর হয়ে উঠল। ম্যাডাম 'ডি' তার শ্রেণীর বিরুদ্ধে সবসময় সোচ্চার, ‘এল' স্বীকার করেছেন যে তিনি স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য বিবাহ করেছেন। শনিবারের দিন, আমরা উপসাগরীয় স্রোত পার হলাম। আবহাওয়ায় ঠান্ডাভাব চলে এল। তারপরও সময় বেশ দ্রুত চলে যেতে লাগল। শেষ পর্যন্ত পৌঁছাবার কোন তাড়া আমার মধ্যে আর ছিল না। যা বলব সেই বক্তৃতার প্রস্তুতি নেয়া হয়ে গেছে। অবশিষ্ট সময়ে সাগরের দিকে নির্ণিমেষ তাকিয়ে থাকতাম। গল্প করতাম। বেশিরভাগ সময় 'আর' এর সাথে। সত্যি, উনি বেশ চৌকষ। ম্যাডাম 'ডি' এর সাথেও কথা বলতাম এবং হ্যাঁ, ‘এল' সাথে তো অবশ্যই থাকত। সকাল থেকে সীগাল পাখিরা নৌকার পাশ দিয়ে উড়ছে। এমনভাবে ডেকের উপরে সমান গতিতে উড়ে যাচ্ছে যে মনে হচ্ছে তারা যেন শূন্যে আটকে বা ভেসে আছে। আমরা প্রথমে কনি দ্বীপ দেখতে পেলাম। এই দ্বীপটি দেখতে পোর্ট ডি-অরলিন্স দ্বীপের মত। 'এল' বলল এটা 'সেইন্ট ডেনিস বা গিনিভিলিয়ার্স’। একথা একেবারে সঠিক। ঠান্ডার মধ্যে ধূসর বাতাস আর সমতল আকাশের কারণে সবকিছু মনমরা লাগছে। আমরা হাডসন নদীর মুখে নোঙর ফেলব। কিন্তু আগামীকাল সকালের আগে নামতে পারব না। অনেক দূরে কুয়াশার পর্দায় প্রকৃতি ঢেকে আছে। এর সামনে আকাশছোঁয়া ভবনগুলো দাঁড়িয়ে আছে। অভূতপূর্ব দৃশ্যের সামনে দাঁড়িয়ে আমি নড়াচড়া করতে ভুলে গেলাম। হৃদয়স্পন্দন যেন থেমে গেল, হিম হয়ে গেল।

***

সোমবার: গতরাতে দেরী করে ঘুমাতে গিয়েছিলাম। জেগে উঠলাম তাড়াতাড়ি। আমরা নিউইয়র্ক বন্দরের ভিতর দিয়ে গিয়েছিলাম। কেমন যেন ভয়াবহ লাগল, হয়ত কুয়াশার জন্য। আদেশ, শক্তি, আর্থিক ক্ষমতা সবকিছুই এখানে। এরকম উল্লেখযোগ্য মানবীয় কীর্তির সামনে এসে হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায়।

অনেক রকম আনুষ্ঠানিকতার ভিতর দিয়ে আমি ১১টা নাগাদ মাটিতে নামতে পারলাম। এতগুলো যাত্রীর মধ্যে শুধুমাত্র আমাকে সন্দেহজনক মনে করা হয়েছিল। ইমিগ্রেশন অফিসার আমাকে আটকে রাখার জন্য শেষ পর্যন্ত বারবার ক্ষমা চাচ্ছিলেন। বলছিলেন, আমার এটা করার দরকার ছিল, কিন্তু কেন তা আমি বলতে পারব না। এ যেন এক অমীমাংসিত রহস্য- চাকুরীর পাঁচবছর পরও।
...

‘সি', 'ই' এবং দূতাবাসের একজন কর্মী আমাদের স্বাগত জানাল। 'সি' এখনও আগের মতই আছে। পাল্টায়নি। তেমন 'ই'। ইমিগ্রেসনের যাবতীয় সার্কাস শেষে 'এল', ম্যাডাম 'ডি' এবং 'আর' এর সাথে শীতল বিদায় পর্ব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেল।

ক্লান্ত। ফ্লু ফিরে আসছে। নিউইয়র্কের সাথে প্রথম দর্শনের সময় আমার পা দুটো কাঁপছিল। প্রথম দেখায় মনে হয় এক বিকট অমানবিক শহর। কিন্তু মানুষ যে তাদের মানসিকতা পরিবর্তন করতে পারে তা আমি জানি। যেসব ঘটনা আমাকে অবাক করেছে সেগুলোর কিছু বর্ণনা এখানে দিচ্ছি: ময়লা সংগ্রাহকরা হাতমোজা পড়েছে। রাস্তার মোড়গুলোতে অফিসারের প্রয়োজন ছাড়াই গাড়িঘোড়া সারিবদ্ধভাবে চলছে। নিজেদের রাষ্ট্রের কোন পরিবর্তন তারা করেনি; প্রত্যেকেই এমন দেখতে যেন তারা কোন কম বাজেটের সিনেমার শুটিং স্পটে ঢুকে পড়েছে। চারপাশের আলো ঝলমলে আলোর সার্কাসে আমি স্তম্ভিত হয়ে গেছি। আমি পাঁচ বৎসরব্যাপী দীর্ঘ অমানিশা থেকে এসেছি। এই আক্রমণাত্মক আলোর ছটা হল প্রথম জিনিস যা আমাকে নতুন মহাদেশের পরিচয় দিয়েছে। (এক বিশাল পনেরো মিটার লম্বা বিলবোর্ড। ক্যামেল সিগারেটের বিজ্ঞাপন। একজন বৈমানিক, তার মুখ খোলা। একগাল ভর্তি ধোঁয়ার কুণ্ডলী বের হচ্ছে। সম্পূর্ণটা লাল আর হলুদ রঙের)। আমি হৃদয়ের আঘাত শরীরে বয়ে নিয়ে অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে গেলাম। দুইদিনের ভেতর আমার মন পাল্টাবে একথা নিশ্চিত।

***

মঙ্গলবার: গায়ে জ্বর নিয়ে জেগে উঠলাম। দুপুরের আগে ঘর থেকে বের হতে পারলাম না। যখন 'ই' এল, আমি কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠেছিলাম। এক ফরাসি রেস্তোরায় খাবার জন্য তার সাথে এবং মি 'ডি'- হাঙ্গেরি থেকে আসা একজন বিজ্ঞাপন ব্যবসায়ী- দুজনসহ বেড়িয়ে পড়লাম। লক্ষ্য করলাম যে আকাশচুম্বী ভবনগুলো আজ আর ততোটা খেয়াল হচ্ছে না। মনে হচ্ছে এগুলো যেন প্রাকৃতিক। সামগ্রিকভাবে যে কোন অবস্থায় আপনি সবসময় মাথা উঁচু করে হাঁটতে পারবেন না। একজন মানুষ এক ঝলকে অনেকগুলো এপার্টমেন্ট দেখতে পারে। জাঁকালো খাবারের দোকান। সমস্ত ইউরোপকে ভরিয়ে দেয়ার মত যথেষ্ট। রাস্তায় দেখা নারীদের জামার রঙের বৈচিত্রের প্রশংসা করি। ট্যাক্সিগুলোর রঙ আকর্ষণীয়। দেখে মনে হয় কিছু পোকা রবিবারের জন্য লাল, হলুদ ও সবুজ রঙে সাজিয়ে সবচেয়ে সুন্দর পোষাক পড়েছে। টাইয়ের দোকানের কথা বলি। সেগুলো কেমন ছিল, তা বিশ্বাস করতে হলে দেখতে হবে। কল্পনাতীত খারাপ রুচি। 'ডি' আমাকে নিশ্চিত করে জানাল যে, আমেরিকার মানুষরা নতুন ভাবনা পছন্দ করে না। ওরা এসবই বলে। আমি সত্যিই এই 'ওরা'দের উপর আস্থা রাখতে পারছি না।

তিনটার সময় আমি জুনিয়র রেজিনির সাথে দেখা করার জন্য গেলাম। এই অনিন্দ্যসুন্দরী কুমারী যা পেয়েছে আমাকে তাই পাঠিয়ে দিত। কারণ তার বাবা সাতাশ বৎসর বয়সে যক্ষা রোগে মারা যায় আর তখন থেকে… সে দুইটা রুম নিয়ে থাকে। বাড়িতে তৈরি হ্যাটের পাহাড়ের মাঝে। হ্যাটগুলো দেখতেও বিশ্রী। সে যা বলছে তাতেই যেন আলোর দীপ্তি ছড়াচ্ছে। তার উদার ও আন্তরিক হৃদয়ে কোন কিছু ছায়া ফেলতে পারেনি। আমি তাকে ছেড়ে চলে এলাম। বিছানায় ফিরে যাওয়া ছাড়া আর কিছু করতে পারছিলাম না। জ্বর আমাকে যেন গিলে খেয়েছে। নির্ধারিত সাক্ষাৎগুলোর জন্য খারাপ অবস্থা। নিউইয়র্কের গন্ধ হল লোহা এবং সিমেন্টের গন্ধ। এ এক লোহার রাজ্য।

সন্ধ্যায় 'এল' এবং 'এম'কে সাথে নিয়ে রুবেনের ওখানে ডিনারে গেলাম। সে আমাকে তার সেক্রেটারির বিশাল 'আমেরিকাসুলভ ট্রাজেডি'র গল্প বলল। নিজের দুটো বাচ্চাসহ সে একজনকে বিয়ে করেছিল। একদিন সে আর তার মা আবিষ্কার করে যে পুরুষটি সমকামী। বিচ্ছেদ ঘটল। মাতা একজন বিশুদ্ধবাদী প্রোটেস্ট্যান্ট। মেয়ের পিছনে মাসের পর মাস লেগে থাকল। ধীরে ধীরে মেয়েকে বোঝাল যে তার সন্তানদের অধঃপতন ঘটবে। বোকা মেয়ে শেষ পর্যন্ত দুজনকেই শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলে। উন্মাদগ্রস্থতার অজুহাতে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা যায়নি। ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আমেরিকার মানুষদের সম্পর্কে 'এল' এবং 'এম' তাদের ধারণা আমাকে জানাল। এ ধরণের ঘটনা আগেও শুনেছি। এটা পনেরোতম।

পূর্বের প্রথম রাস্তার কোণে যে খাবারের দোকানটা আছে সেখানে এক চিৎকাররত যান্ত্রিক ফোনোগ্রাফ মানুষের সকল কথাবার্তাকে ডুবিয়ে দেয়। সেখানে পাঁচ মিনিটের নীরবতা পেতে আপনাকে পাঁচ সেন্ট ব্যয় করতে হবে।

***

বৃহস্পতিবার: এই সকালে আরো ভাল বোধ করছি। 'দ্যা নিউইয়র্কার' থেকে লিবলিং এসেছিল। বেশ মজার মানুষ। তারপর এলেন চিয়ারামন্ডে এবং রুবি। শেষের দুজন এবং আমি এক ফরাসি রেস্তোরায় দুপুরের খাবার খেতে গেলাম। আমেরিকা এমন, যেন কেউ কিছু করেনি- একথা 'চ' বলতেছিল। এক অন্ত্যেস্টিক্রিয়ার দোকানের দিকে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করলাম। সে এর কার্যপদ্ধতি আমাকে বলল। কোন একটা দেশকে ভালভাবে জানার উপায় হল এটা জানা যে সেই দেশের মানুষরা কীভাবে মারা যায়। এখানে সবকিছুর পরিকল্পনা করা আছে। “তুমি মারা যাবে এবং বাকী কাজগুলো আমরা করব”। প্রচারপত্রে একথা লেখা ছিল। কবরস্থানগুলো ব্যক্তিগত সম্পত্তি। “তাড়াতাড়ি করুন এবং নিজের জায়গা নিশ্চিত করুন”। সবকিছু কেনা এবং বেচা হয়ে গেছে। পরিবহন, বার্ষিকী পালন ইত্যাদি। একজন মৃত মানুষ হল সেই মানুষ, যিনি তার নিজের জীবন যাপন সম্পূর্ণ করেছেন। এরপর গেলাম গিলসনের বাড়ি, তারপর রেডিওতে। তারপর আমার ঠিকানায় ফিরে এলাম ভারকরস, থিমেরিয়াস এবং ও ব্রিয়েনকে সাথে নিয়ে। আমরা আগামীকালের বক্তৃতা নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। ছয়টার সময় ‘সেইন্ট রেজিস’ এ গিয়ে গ্লাল এর সাথে ড্রিংক করলাম। ব্রডওয়ে ধরে আমি একা একাই হোটেলে ফিরে আসি। মানুষের ভীড় ও বিকট চকমকে আলোর ঝলকানিতে আমি পথ হারিয়ে ফেলেছিলাম। হ্যাঁ, ‘আমেরিকাসুলভ ট্রাজেডি’ আছে। যখন এখানে এসেছি, তখন থেকে একটা বিষয় আমাকে পীড়ন করছে। যদিও তখনও জানিনা যে এটা কী দিয়ে তৈরি।

বোয়েরি স্ট্রিটে প্রায় পাঁচশ মিটার লম্বা একটা বিবাহ সম্পর্কিত দোকান আছে। আমি এই বিকাল থেকে একা একা রেস্তোরায় খাচ্ছি আর লেখার জন্য ফিরে আসছি।

এবার নিগ্রো প্রসঙ্গ। আমরা একজন মার্টিনিকের মানুষকে এখানে একটি কাজের জন্য নিয়োগ দিয়েছি। তাকে আমরা হারলেমে রেখে দিয়েছিলাম। তার ফরাসি সহকর্মীর মুখোমুখি করেছি। প্রথমবারের মত সে বুঝতে পেরেছে যে তাদের দুজনের রঙ কালো হলেও জাত এক নয়। এই প্রসঙ্গে একটা উল্টো পর্যবেক্ষণের কথা বলি। বাসে আমার সামনে বসা আমেরিকার পুরুষদের বেশিরভাগ কোন একজন বৃদ্ধা নিগ্রো নারীকে সীট দেবার জন্য দাঁড়িয়ে যায়।

উপচে পড়া সম্পদের ধারণা লাভ। একজন আমেরিকার মানুষ আমাকে বলেছে যে মুদ্রাস্ফীতি আসছে।

***

বুধবার: সারাদিন আমি বক্তব্য দিয়ে কাটালাম। সন্ধ্যার দিকে কিছুটা ভয় পেয়েছিলাম। কিন্তু মাথা সোজা ছিল। শ্রোতারা আঠার মত আটকে গিয়েছিল। সেই সুযোগে কেউ একজন ক্যাশবাক্সটি চুরি করে। বক্তৃতার টিকিট বিক্রির আয় ফরাসি শিশুদের কাছে যাবে। বক্তৃতা শেষ করে ও' ব্রিয়েন যা ঘটেছে তা মাইকে ঘোষণা করল। শ্রোতৃমণ্ডলীর মধ্যে কেউ একজন দাঁড়িয়ে প্রত্যেককে ঢোকার সময় যত টাকা দিয়েছিল, বের হবার সময় তত টাকা করে দেয়ার আহ্বান জানাল। বের হবার পথে প্রত্যেকে বেশি করে টাকা দিয়েছে। পর্যাপ্ত প্রাপ্তি ঘটেছিল। এমন মহত্ত্ব আমেরিকার মানুষদের মধ্যে খুব সাধারণ। তাদের আতিথেয়তা এবং হৃদয়াবেগ এরকমই। তাৎক্ষণিক এবং কোনরকম প্রতিদানহীন। এদের সবচেয়ে ভাল দিক এটাই।

***

প্রাণীদের প্রতি রয়েছে তাদের প্রবল আন্তরিকতা। এক বহুতলবিশিষ্ট পোষাপ্রাণীর দোকানের কথা বলি। এর দ্বিতীয় তলায় রয়েছে ক্যানারি পাখি। বড় জাতের বানর রয়েছে শীর্ষ তলায়। কয়েক বৎসর আগে নিজের ট্রাকে এক জিরাফকে তুলে নিয়ে শহরময় ঘুরে বেড়ানোর জন্য একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। লোকটি ব্যাখ্যা করে বলেছিল যে, হারলেম এলাকার যেখানে জিরাফটাকে রাখা হয়, সেখানে সে পর্যাপ্ত বাতাস পাচ্ছিল না। এভাবে গাড়িতে করে ঘুরে নিয়ে বেড়ালে কিছু বাতাস তো সে পাবে। একজন ভদ্রমহিলা সেন্ট্রাল পার্কে একটি গেজেল হরিণকে চড়ে নিয়ে বেড়াচ্ছিল। কোর্টে মহিলা দাবি করলেন যে, গেজেলটি যদিও কথা বলতে পারে না, তবুও তার একটি স্বতন্ত্র স্বত্ত্বা আছে। বিচারক বলেছিলেন – “ওহ, আচ্ছা, হ্যাঁ, এটাতো দয়ার্দ্র ভালবাসাবাসির কথা বলে”। পাঁচ ডলার জরিমানা করা হল। হাডসন নদীর নিচ দিয়ে তিন কিলোমিটার লম্বা টানেল আছে। নিউ জার্সির দিকে রয়েছে এক মনোমুগ্ধকর ব্রিজ।

কথা বলা শেষে স্কিফরিন এবং ডলারেস ভ্যানিটি'র সাথে পান করলাম। আমার শোনা সবচেয়ে জঘন্য অশ্লীল শব্দ ব্যবহারে ইনি পটু। আমি কখনও অভিনেতা ছিলাম কী না, তা ম্যাডাম স্কিফরিন জানতে চাচ্ছিলেন।

***

শুক্রবার: ‘নফ' প্রকাশনীতে এসেছি। এগারোটা বাজে। সবচেয়ে ভাল ঘটনা ঘটছে। রেডিওতে আমার কথা প্রচারিত হচ্ছে। গিলিসন বেশ ভাল মানুষ। আমরা দুজনে ছায়াঢাকা প্রান্তরে বেড়াতে যাব। রুবি এবং জে. দ্যা. লানাক্স এর সাথে দুপুরের খাবার খেলাম। তারপর লানাক্স সমস্ত নিউইয়র্ক গাড়িতে করে ঘুরে দেখাল। আমরা যে লিসবনের মত একই অক্ষাংশে আছি, তা সুন্দর নীল আকাশ দেখে মনে পড়ল। এটা ভাবতেই পারিনি। রাস্তার স্রোতের সাথে যেতে যেতে সোনালী আলোয় রাঙা আকাশছোঁয়া ভবনগুলো ঘুরে যেতে লাগল। মাথার উপরের নীল আকাশের সীমানায় মোচড় খেতে লাগল। বেশ স্বস্তিদায়ক মুহূর্ত।

শহরতলীর উপরে অবস্থিত ট্রাইয়ন পার্কে বেড়াতে গিয়েছিলাম। এটা একটা দুর্গের অংশ। আমরা এর উঁচু অংশে গিয়ে একদিকে ব্রনক্স এলাকা এবং আরেকদিকে হাডসন নদী দেখতে পেয়েছি। চারপাশে ম্যাগনোলিয়া ফুল ফুটে আছে। ভাল লাগার মত এক বিশেষ ধরণের আইসক্রিম খেলাম। এ যেন আরেকটি আনন্দময় মুহূর্ত।

চারটার দিকে ব্রুমলি আমার জন্য হোটেলে অপেক্ষা করছিলেন। নিউ জার্সির দিকে দুজনে রওনা হলাম। ফ্যাক্টরি, ব্রিজ, রেলরাস্তা মিলে এক বিস্তীর্ণ দৃশ্যপট। হঠাৎ করে পশ্চিম অরেঞ্জ এলাকায় চলে এলাম। হুবহু পোস্টকার্ডের ছবির মত গ্রামাঞ্চল। সহস্রাধিক কুড়েঘর, পরিস্কার এবং গোছানো ম্যাগনোলিয়ার বাগান এবং লম্বা পপলার গাছের সারির মধ্যে সবকিছু খেলনার মত লাগছে। ওরা আমাকে এক ছোট আকারের গণগ্রন্থাগার দেখাতে নিয়ে গেল। চারপাশের উজ্জ্বল পরিবেশ মনকে প্রফুল্ল করে তুলল। আশেপাশের এলাকার সবাই এই গ্রন্থাগার ব্যবহার করে। শিশুদের পড়ার কক্ষটি অনেক বড়। (অবশেষে আমেরিকার একটি শহর পাওয়া গেল, যারা শিশুদের কথা মাথায় রেখেছে)। আমি কার্ড ক্যাটালগে ডব্লিউ জেমসের দর্শন বিষয়ক বই খুঁজেছি এবং পেয়েও গেলাম।

ব্রুমলির সাথে থাকলে আমেরিকার মানুষদের আতিথেয়তার পরিচয় পাওয়া যায়।

তিনি আমার ‘কালিগুলা’ নাটক অনুবাদের কাজ শেষ করেছিলেন। আমরা এর উপর কাজ করছিলাম। কীভাবে নিজের প্রচারণা চালাতে হয়, তা যে আমি জানিনা, সেকথা তিনি বোঝাচ্ছিলেন। আমার একটি ‘অবস্থান’ আছে। এর মাধ্যমে কিছু সুবিধা আমি নিতে পারি। কালিগুলা'র সফলতা আমার, আমার সন্তানদের চাওয়া পাওয়ার সীমাবদ্ধতা থেকে মুক্ত করতে পারে। তার হিসাব মতে আমি পনেরো লক্ষ ডলার আয় করব। আমি হাসলাম আর তিনি তার মাথা ঝাঁকালেন- “ওহ্‌, তোমার ধারণা নেই”। তিনি সঙ্গীদের মধ্যে সবার সেরা। আমাদের সবাইকে নিয়ে মেক্সিকোতে যেতে চান। (নোট: তিনি আমেরিকার এমন এক মানুষ, যিনি পান করেন না)

***

শনিবার: রেজিনি। তাঁর জন্য আনা উপহারগুলো নিয়ে গেলাম। সে আকুল হয়ে আনন্দের কান্না কাঁদতে লাগল। ডলোরি'দের ওখানে এক চুমুক পান করলাম। এরপর রেজিনি কয়েকটি 'আমেরিকাসুলভ ডিপার্টমেন্টাল স্টোর' দেখাতে নিয়ে গেল। আমি ফ্রান্সের কথা চিন্তা করছিলাম। প্লাজা'র ছাদে সন্ধ্যাবেলায় ‘এলএম’-এর সাথে রাতের খাবার খেলাম। পাথুরে দৈত্যে ছাওয়া দ্বীপটির প্রশংসা করলাম। রাতের বেলা লক্ষ লক্ষ আলোকিত জানালা আর লম্বা কালো সুউচ্চ ভবনগুলোর মুখ মিটমিট করে জ্বলছিল। স্বর্গের পথে অর্ধেক এগিয়ে যাওয়া উর্ধ্বমুখী জ্বলজ্বলে আলো দেখে নিজেকে জ্বালানো এক দানবীয় আকারের অগ্নিকুণ্ডের কথা মনে হল। যে রেখে যায় ধিকিধিকি আগুনে জ্বলে পুড়ে অঙ্গার হয়ে যাওয়া কালো মৃতদেহ। এ যেন এক মনোহর রূপসী।

***

রবিবার: চিয়ারামন্টি ও আবেলের সাথে স্ট্যাটেন দ্বীপে ঘোরাঘুরি। ফিরে আসার পথে দেখলাম ম্যানহাটানের নীচু জায়গায় চাপাচাপি করে থাকা আকাশছোঁয়া ভবনগুলোর মাঝে বড়সড় করে প্রত্নতাত্ত্বিক খননকাজ চলছে। পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় এক প্রাচীন ইতিহাসবোধ আমাদের ছুঁয়ে দিয়েছিল। চায়না টাউনে রাতের খাবার খেলাম। এই প্রথমবার। সহজে নিঃশ্বাস নিতে পারলাম। সত্যিকারের জীবন খুঁজে পেলাম। পরিপূর্ণ এবং অটল। ঠিক যেমনটা আমার ভাল লাগে।

***

সোমবার সকালে জর্জিটি পোপের সাথে এলোমেলো ঘুরে বেড়ালাম। সে আমার হোটেল পর্যন্ত এসেছিল। ঈশ্বর জানেন কেন। উনি নিউ ক্যালিডোনিয়া থেকে এসেছেন।

“আপনার স্বামী কী করেন?”
“জাদুকর”

অ্যাম্পায়ার স্টেট ভবনের শীর্ষ তলায় কনকনে ঠান্ডা বাতাসে আমরা দাঁড়িয়েছিলাম। দুজনে মিলে নিউ ইয়র্কের প্রাচীন জলাশয় এবং পাথরের আধিক্যের প্রশংসা করলাম।

দুপুরের খাবারের সময় ‘সেইন্টএক্স’ এর স্ত্রী- একজন উচ্ছ্বল মানুষ—বলছিলেন যে সান সালভাদরে তার পিতার সতেরোজন বৈধ সন্তানের সাথে চল্লিশজন জারজ সন্তান ছিল। তারা প্রত্যেকেই এক হেক্টর পরিমাণ করে জমি পেয়েছে।

সন্ধ্যায়, ইকোলে লিব্রে দে জ্যোত জ্যুদে (École libre des hautes études) বিশ্ববিদ্যালয়ে সাক্ষাৎকার দিলাম। অবসন্ন। জে. এস. এর সাথে ব্রডওয়ের পশ্চিমদিকের বায়ান্ন নম্বর রাস্তায় ‘রোলে স্কেটিং’ ক্লাবে গিয়েছিলাম। এক বিশাল গোলাকার ঘর, স্কেট ও সাইকেল চালানোর র্যাম্প রয়েছে। মখমল ও ধুলোয় ঢাকা। ছাদের কাছাকাছি একটি চারকোনা বাক্সের মত ঘর রয়েছে। সেখানে একজন বয়স্ক নারী পাইপ অর্গান দিয়ে হৃদয়গ্রাহী প্রশান্তিময় সুর তুলছিলেন। জাম্পসুট পরিহিত শতশত নাবিক এবং মেয়েরা অনুষ্ঠানের জন্য সেজেছে। নারকীয় কোলাহল করতে করতে ধাতব চাকা এবং পাইপ অর্গান হাত থেকে হাতে নিয়ে স্থানান্তর করছে। এই ঘটনার বর্ণনা আরো দীর্ঘ করা যায়।

এরপর ‘লিয়ন এন্ড এডিস’-এ গেলাম। এ এক মজার ক্লাব। ক্লাবে যাওয়ার জন্য আমরা ভিন্নভাবে নিজেদের সাজিয়েছিলাম। ‘জে. এস.’ এবং আমি মেলাতে পাওয়া ছবিগুলোতে যেমন দেখা যায়, আদম এবং ইভের ঠিক তেমন ছবির মত করে সেজেছিলাম। খোলা কার্ডবোর্ডের বাক্সের ভিতরে শরীর ঢুকিয়ে উপরের একটি ছিদ্র দিয়ে মাথা বের করার মত আমাদের সজ্জা ছিল।

প্রাসঙ্গিক তথ্য:
ট্রাভেলস ইন দ্যা আমেরিকাস: নোটস এন্ড ইমপ্রেসন্সস অফ এ নিউ ওয়ার্ল্ড
আলব্যার কামু
সম্পাদক: এলিস কাপলান
অনুবাদ: রায়ান ব্লুম
এলিস কাপলান এবং রায়ান ব্লুম এর টীকাসহ।
প্রকাশকাল: মার্চ, ২০২৩
প্রকাশক: ইউনিভার্সিটি অফ চিকাগো প্রেস
ফরাসি ভাষায় প্রথম প্রকাশের সময় নাম ছিল
জার্নাক্স দি ভয়েজ
প্রকাশক: এডিসনস গিলিমার্ড
প্রকাশকাল: ১৯৭৮

মন্তব্য

BLOGGER: 3
  1. ভালো লাগলো পড়ে। বেশ ইনফরমেটিভ। অনুবাদককে ধন্যবাদ।- সাখাওয়াৎ

    উত্তরমুছুন
  2. আগে পড়া হয়নি৷ অনুবাদ সত্যিই মনোরম৷ ধন্যবাদ

    উত্তরমুছুন
  3. কামুর ডায়রির কথা শুনেছিলাম। আজ প্রথম পড়লাম। অনুবাদককে ধন্যবাদ। সম্পূর্ণ ডায়রি অনুবাদ করার আহ্বান জানাই।

    উত্তরমুছুন
মন্তব্য করার পূর্বে মন্তব্যর নীতিমালা পাঠ করুন।

নাম

অনুবাদ,33,আত্মজীবনী,27,আর্ট-গ্যালারী,1,আলোকচিত্র,1,ই-বুক,7,উৎপলকুমার বসু,25,কবিতা,319,কবিতায় কুড়িগ্রাম,7,কর্মকাণ্ড,15,কার্ল মার্ক্স,1,গল্প,56,ছড়া,1,ছোটগল্প,12,জার্নাল,4,জীবনী,6,দশকথা,24,দিনলিপি,1,পাণ্ডুলিপি,11,পুনঃপ্রকাশ,16,পোয়েটিক ফিকশন,1,প্রতিবাদ,1,প্রতিষ্ঠানবিরোধিতা,4,প্রবন্ধ,156,প্রিন্ট সংখ্যা,5,বই,4,বর্ষা সংখ্যা,1,বসন্ত,15,বিক্রয়বিভাগ,21,বিবিধ,2,বিবৃতি,1,বিশেষ,23,বুলেটিন,4,বৈশাখ,1,ভাষা-সিরিজ,5,ভিডিও,1,মাসুমুল আলম,35,মুক্তগদ্য,37,মে দিবস,1,যুগপূর্তি,6,রিভিউ,5,লকডাউন,2,শম্ভু রক্ষিত,2,শাহেদ শাফায়েত,25,শিশুতোষ,1,সন্দীপ দত্ত,8,সম্পাদকীয়,16,সাক্ষাৎকার,21,সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ,18,সৈয়দ রিয়াজুর রশীদ,55,সৈয়দ সাখাওয়াৎ,33,স্মৃতিকথা,14,হেমন্ত,1,
ltr
item
বিন্দু | লিটল ম্যাগাজিন: কামুর ডায়েরি ১৯৪৬ [আলব্যার কামু’র নিউইয়র্ক ভ্রমণকাহিনী]
কামুর ডায়েরি ১৯৪৬ [আলব্যার কামু’র নিউইয়র্ক ভ্রমণকাহিনী]
ভ্রমণের অবসরে 'প্লেগ' উপন্যাস লিখছিলেন। চার বিছানার একটি কক্ষে চারজন মিলে থাকতেন। আটলান্টিকের অপার প্রকৃতি সহযাত্রীদের মধ্যে বন্ধুত্বের বন্ধন তৈরি করে
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhvhH1kWMdL_e99PFJ6pg9y2_KJmT14BNsA0pFUL7dx4ikX89yDooPRp4UGzRiSbVkH_iwTQ9D1X5LbSGal4hTQughrCuVbW0Wt0Kl2Nsg-b3m1bevl75twHhIXMswvq61-cEHJOTBUv6MBnL5cCdYqWM-CtlAKBtVfYtoOa-H7CH9zoozxwTae2uWX7ZB2/s16000/camus-camel.webp
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhvhH1kWMdL_e99PFJ6pg9y2_KJmT14BNsA0pFUL7dx4ikX89yDooPRp4UGzRiSbVkH_iwTQ9D1X5LbSGal4hTQughrCuVbW0Wt0Kl2Nsg-b3m1bevl75twHhIXMswvq61-cEHJOTBUv6MBnL5cCdYqWM-CtlAKBtVfYtoOa-H7CH9zoozxwTae2uWX7ZB2/s72-c/camus-camel.webp
বিন্দু | লিটল ম্যাগাজিন
https://www.bindumag.com/2025/07/camuss-new-york-diary-1946.html
https://www.bindumag.com/
https://www.bindumag.com/
https://www.bindumag.com/2025/07/camuss-new-york-diary-1946.html
true
121332834233322352
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts আরো Readmore উত্তর Cancel reply মুছুন By নী PAGES POSTS আরো এই লেখাগুলিও পড়ুন... বিষয় ARCHIVE SEARCH সব লেখা কোন রচনায় খুঁজে পাওয়া গেল না নীড় Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy