.header-button .inner > span { font-size: 18px !important; } .header-button .inner i.fa { font-size: 40px !important; } .comment-form-message { background-color: #f4f4f4 !important; font-size: 14px !important; }

‘এতো এতো প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ন্ত্রণের মধ্যে লিটলম্যাগই ভরসা’ : কবি সৈয়দ সাখাওয়াৎ এর সাক্ষাৎকার

কবি সৈয়দ সাখাওয়াৎ এর সাক্ষাৎকার

অনলাইন লিটল ম্যাগাজিন ‘দিব্যক’ এর সম্পাদক হোসাইন মাইকেল ২০ আগস্ট ২০১৯ তারিখে কবি সৈয়দ সাখাওয়াৎ-এর সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় সাক্ষাৎকারটি পুনঃপ্রকাশ করা হলো।

ছোটবেলায় কী হতে চাইতেন? মানে ‘এইম ইন লাইফ’ রচনায় কী লিখেছেন, তা নয়; বরং মনের ভেতরে সুপ্ত বাসনা ছিলো কি কোনো কিছু হবার জন্য?

ছোটবেলায় তো সবকিছু হতে চাইতাম। কী হতে চাইনি ভাবাটাই বরং মুশকিল। ছোট বয়সে যেটা হয় আর কী। সবকিছুতেই প্রভাবিত হওয়া। সব ভালোতেই থাকার চেষ্টা। এটা একটা গড় অনুভূতি। একদম নৈর্ব্যক্তিক জায়গা থেকে বললে, আমি হয়তো কিছুই হতে চাইনি। স্রোত যেখানে এনে দাঁড় করিয়েছে, তা হতে চাইবার চেয়েও বড় কিছু- তা হলো প্রয়োজন। 

একজন  লেখকের  ভেতরের ‘মানুষসত্তা’কে  কীভাবে  ব্যাখ্যা  করেন?

এটা একটা জটিল প্রশ্ন। আমি বরং উল্টো জিজ্ঞেস করি, লেখক কি এই সমাজের বাইরের কেউ? অতিজাগতিক? আমি বরং ভাবি লেখক, যিনি লেখেন না সেই মানুষটার মতোই। লেখকের সত্তা আলাদা কিছু নয় বলে মনে হয়।  তবে যিনি লেখেন, তিনি সৃজনশীল কিংবা গভীর চিন্তা করার ইচ্ছা নিয়ে বাঁচেন। কিংবা লিখতে চাওয়ার মধ্যে বাঁচেন। এটাকে যদি আলাদা মানুষসত্তা বলেন তবে বলা যায়। তবে শেষ পর্যন্ত লেখকের অন্তঃস্থ মানুষসত্তা বলে আলাদা কিছু ভাবতে পারি না। যেমনি প্রতিটি সহ নাগরিকের দায়, লেখকের জন্যও সমান বলে মনে হয়। 

জন্ম-মৃত্যুর  মাঝখানের  জীবন  সম্পর্কে  আপনার  অনুভূতি  কী?

একটা সময়ে যাপন বলে মনে হয়। মৃত্যুর মতো অবশ্যম্ভাবিতা আমার ভালো লাগে না। এজন্যই বোধহয় জীবনকে এতো মোহ ও মুগ্ধকর মনে হয়। এই যে এড়িয়ে যেতে পারবো না, একারণে আমার প্রচুর লেখায় মৃত্যু নানাভাবে এসেছে। মৃত্যু সম্পর্কে আমার কোনো ফ্যান্টাসি নেই। আমি বরং বাঁচতে চাই, তুমুলভাবে বাঁচতে চাই। 

লেখার ক্ষেত্রে আপনার কোনও প্রেরণার জায়গা আছে কি?

প্রেরণা সবসময় এক জায়গায় সীমাবদ্ধ ছিল না, এখনও নেই। ছোটবেলায় বাবার লেখা কবিতা প্রেরণা দিয়েছে। আরেকটু পরিণত হতে হতে, ভালো লিখতে চাওয়া একটা প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। কোন কোন বন্ধু-পাঠক খুব তীব্র প্রেরণা তৈরী করেছিল। ভালো (মানে আমার যেটা ভালো লেগেছে) লেখা পড়াও একটা প্রেরণা। 

বর্তমানে  বাংলা  সাহিত্যের  আলোচনা-সমালোচনা  চর্চা  কতটা  গঠনমূলক হচ্ছে?

কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি বা পিঠ চাপড়ানোর বাইরে যে কেউ করছে না তা নয়। তবে প্রয়োজনের চেয়ে অনেক কম। খুব কম লেখাই পঠিত হয় এবং তারচেয়েও বহু কম লেখা নিয়ে আলোচনা হয়। পরিচিত গণ্ডির বাইরে কেউ কারো লেখার সতীর্থ হতে চায় না। আলোচনা-সমালোচনা জরুরী। ছোট কাগজের সম্পাদক এই কাজটি করতে পারেন। তবে তাঁরাও ব্যক্তি নিরপেক্ষ নয়। নিজেদের জগতে থাকতে চান। এই সমাজের মানস গঠনের সাথে এর সম্পর্ক খুব গভীর। সমাজে প্রচলিত রাজনৈতিক ভাবধারা ও চর্চা জাতীয় সংস্কৃতি তৈরীতে ভূমিকা রাখে। আমাদের সেই চর্চা সম্পর্কে বলা বাহুল্য। অন্যান্য প্রতিশ্রুতিশীল, ক্রিয়াশীল জায়গাগুলোতে যে পরিবর্তন বা ভিন্ন চর্চা  প্রবলভাবে হওয়ার কথা ছিলো-তা কিন্তু হচ্ছে না। এটাই ভয়াবহ।  

‘কবিতায় ছন্দ’ প্রসঙ্গে আপনার অভিমত কী?

“ছন্দ” আমার ভালো লাগে। আমাকে ভাবায়ও বটে। নিজেও নানা ছন্দে লিখতে পছন্দ করি। তবে লিখতেই হবে এমন কোন সীমাবদ্ধ গণ্ডি আছে বলে আমি মানতে চাই না। লেখকের স্বাধীনতা আছে তিনি কীভাবে লিখবেন।

ছোটবেলায় কি লেখালিখি করতেন?

হ্যাঁ লিখতে শুরু করেছি ছোটবেলাতেই। 

আপনি কী ধরনের বই পড়তে পছন্দ করেন?

পড়ার মতো সবকিছুই আমার পছন্দ। সেটা গল্প, উপন্যাস, কবিতা, প্রবন্ধ, রম্যরচনা, ইতিহাস, রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক তত্ত্ব ও তথ্য; মূলত প্রয়োজন ও চাহিদা দুইই আমার পড়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে।   

এখন কোন বইটা পড়ছেন?

পবলো নেরুদা’র দ্য বুক অফ কোয়েশ্চেন ইংরেজি অনুবাদটি পড়ছি।  

আপনি বারবার পড়েন, এমন কবির নাম জানতে চাই।

আবুল হাসান, ভাস্কর চক্রবর্তী এবং উৎপলকুমার বসু।

বর্তমান  সময়ের  কবিতার  বিরুদ্ধে  জনবিচ্ছিন্নতা  ও দুর্বোধ্যতার  অভিযোগ  বিষয়ে  কিছু  বলেন। কবি  কি পাঠকের  রুচির  সাথে  আপোষ করে  কবিতা  লেখা উচিত?

উচিত/ অনুচিত বিষয়টি প্রবল আরোপিত। কে, কীভাবে কবিতা লিখবে তা তার একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। পাঠক , কার কবিতা পড়বেন এবং কার কবিতাকে জনসংশ্লিষ্ট ও বোধগম্য বলে স্বীকৃতি দেবেন; তা পাঠকের দায়। কেননা, এটা ব্যক্তি বিশেষের পছন্দ ও পাঠের গভীরতার উপর নির্ভর করে। যেমন কোন কোন লেখা পড়ার পর আমার নিজেরও দুর্বোধ্য মনে হয়। এজন্য কাউকে দায়ী করার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। 

আমি নিজে আমার চারপাশ, ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক অনুভূতি, জীবনবোধ ও দর্শন এবং রাজনৈতিক বাস্তবতা নিয়ে লিখতে পছন্দ করি। যেখানে ভাষাটাই প্রবল। আরেকজন হয়তো অন্যরকম, অন্যকিছু, অন্য ফর্মে লিখতে পছন্দ করেন। এটাই স্বাভাবিক। নিক্তি দিয়ে মাপার সুযোগ একেবারেই নেই।

লেখা প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে অন্তর্জালকে  কীভাবে দেখছেন?

ভীষণ শুক্তশালী একটি মাধ্যম। অতিদ্রুত আপনার লেখা বড় একটা পাঠকশ্রেণীর কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। কাগজের নির্ভরতা নেই। স্বাধীনতা অনেক বেশি, নির্ভরতা  একেবারেই নেই। আপনাকে প্রকাশের ক্ষেত্রে আপনি একাই যথেষ্ট। 

আপনার কি বিশেষ ধরনের রাজনৈতিক বিশ্বাস আছে?

“বিশেষ রাজনৈতিক বিশ্বাস” বলতে আপনি কী বোঝাচ্ছেন আমার বোধগম্য নয়। প্রতিটি মানুষই তো রাজনৈতিক জীব। এই সমাজ, রাষ্ট্র, সংঘ সবই তো আপনার নিয়ন্ত্রক। যেভাবে এটা চলছে তা আমি মানি না। আমি চাই মুক্ত মানুষের মুক্ত সমাজ। 

আপনি কি এক বসায় কবিতা লেখেন, না কি বারবার সংশোধন করেন?

কবিতা আমি স্বতঃস্ফূর্ত টানেই লিখি-কারণ আমার কবিতার উৎস ভীষণভাবে জীবন। ফলে কোনকিছুর অভিজ্ঞতা আমাকে দ্রুত ওই লেখার মধ্যে নিয়ে যায়। পরে কখনো কখনো সংশোধন করি। 

লিটল ম্যাগাজিনগুলি সাহিত্য বিকাশে কী গুরুত্ব বহন করে?

এতো এতো প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ন্ত্রণের মধ্যে লিটলম্যাগই তো ভরসা।

মন্তব্য

নাম

অনুবাদ,31,আত্মজীবনী,25,আর্ট-গ্যালারী,1,আলোকচিত্র,1,ই-বুক,7,উৎপলকুমার বসু,23,কবিতা,298,কবিতায় কুড়িগ্রাম,7,কর্মকাণ্ড,17,কার্ল মার্ক্স,1,গল্প,54,ছড়া,1,ছোটগল্প,11,জার্নাল,4,জীবনী,6,দশকথা,24,পাণ্ডুলিপি,10,পুনঃপ্রকাশ,13,পোয়েটিক ফিকশন,1,প্রতিবাদ,1,প্রতিষ্ঠানবিরোধিতা,4,প্রবন্ধ,150,বর্ষা সংখ্যা,1,বসন্ত,15,বিক্রয়বিভাগ,21,বিবিধ,2,বিবৃতি,1,বিশেষ,23,বুলেটিন,4,বৈশাখ,1,ভিডিও,1,মাসুমুল আলম,35,মুক্তগদ্য,36,মে দিবস,1,যুগপূর্তি,6,রিভিউ,5,লকডাউন,2,শাহেদ শাফায়েত,25,শিশুতোষ,1,সন্দীপ দত্ত,8,সম্পাদকীয়,16,সাক্ষাৎকার,21,সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ,18,সৈয়দ রিয়াজুর রশীদ,55,সৈয়দ সাখাওয়াৎ,33,স্মৃতিকথা,14,হেমন্ত,1,
ltr
item
বিন্দু | লিটল ম্যাগাজিন: ‘এতো এতো প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ন্ত্রণের মধ্যে লিটলম্যাগই ভরসা’ : কবি সৈয়দ সাখাওয়াৎ এর সাক্ষাৎকার
‘এতো এতো প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ন্ত্রণের মধ্যে লিটলম্যাগই ভরসা’ : কবি সৈয়দ সাখাওয়াৎ এর সাক্ষাৎকার
কবি সৈয়দ সাখাওয়াৎ এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন হোসাইন মাইকেল
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhlB_bMeaZF-mfy1vM89q0pYPWXR8ikg2rGF-SL_rNg-R72WH3SX0SUc0XSwRUyXsS-waR6juy1EN81_2HJFBJ2whZFhH7UgKj9mC9hoyUj40CVkcQ8wp7-kNnnHufmOYriN8IkFGMQZzlhliXigemEkjcCpPPA0GSx9z6ckZGYUj7yKGu1oxmOXzMn/w320-h180/%E0%A6%B9%E0%A7%8B%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%A8-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%B2-%E0%A6%B8%E0%A7%88%E0%A7%9F%E0%A6%A6-%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%96%E0%A6%BE%E0%A6%93%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A7%8E.jpg
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhlB_bMeaZF-mfy1vM89q0pYPWXR8ikg2rGF-SL_rNg-R72WH3SX0SUc0XSwRUyXsS-waR6juy1EN81_2HJFBJ2whZFhH7UgKj9mC9hoyUj40CVkcQ8wp7-kNnnHufmOYriN8IkFGMQZzlhliXigemEkjcCpPPA0GSx9z6ckZGYUj7yKGu1oxmOXzMn/s72-w320-c-h180/%E0%A6%B9%E0%A7%8B%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%A8-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%B2-%E0%A6%B8%E0%A7%88%E0%A7%9F%E0%A6%A6-%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%96%E0%A6%BE%E0%A6%93%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A7%8E.jpg
বিন্দু | লিটল ম্যাগাজিন
https://www.bindumag.com/2022/10/blog-post_2.html
https://www.bindumag.com/
https://www.bindumag.com/
https://www.bindumag.com/2022/10/blog-post_2.html
true
121332834233322352
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts আরো Readmore উত্তর Cancel reply মুছুন By নী PAGES POSTS আরো এই লেখাগুলিও পড়ুন... বিষয় ARCHIVE SEARCH সব লেখা কোন রচনায় খুঁজে পাওয়া গেল না নীড় Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy