.header-button .inner > span { font-size: 18px !important; } .header-button .inner i.fa { font-size: 40px !important; } .comment-form-message { background-color: #f4f4f4 !important; font-size: 14px !important; }

পর্নোগ্রাফি: ঢাকাই চরিতমানস

পর্নোগ্রাফি: ঢাকাই চরিতমানস
সৈয়দ রিয়াজুর রশীদ


মৃত্যুর অধিক লাল ক্ষুধা এবং ক্ষুধা রকমভেদে ক্ষুৎ-পিপাসা কাতরতা ও কামনাবাসনার সংকীর্তনে মনুষ্য জীবনের জৈবিক পরিসরে সমান্তরাল সত্যের মত বদমায়েস চেহারায় প্রবাহিত হয়ে চলেই চলেছে।
বখশীবাজারের কিচলু মিয়া নির্ঘাত ফাল(লাফ)দিয়ে বলবেঃ বুজছি।একটা হইল প্যাটের খিদা আরেকটা চ্যাটের….
ঢাকাই বয়ানে দাড়িকমা দিয়ে লেখাজোখা না পাওয়া গেলেও জবান ও জবানিতে হাজিরনাজির এবং কপালে চিকন ঘাম থাকে।
শরীরে জোশ আনতে খাদ্য তালিকায় মসল্লাদার আয়োজন থাকে;শরবতে দুধ-পেশতা-জাফরানি কামড়ানি না থাকলে এত তড়পানি আসে কোথা থেকে যে, সারা ফুটপাত দখল করে রেখেছে অগোচরে অথচ সরেজমিনে সর্বত্র বিরাজমান সেই তখন এই এখনো পর্ণোগ্রাফির যৌনলেখ,  মূলত শিশ্নলেখ।
নারীগণ লেখেন বলে ধরা পড়ে না কারণ ততদিন পর্যন্ত কাহিনী বিস্তারে উপাগতা থাকতেন।প্রথম রাতে কিভাবে নবনারীটির কোমড় ভেঙে দেয়া গেল নাতো মরদ ক্যায়সে,  তাছাড়া পর্দা ফেটে রক্ত বেরুলো কিনা… হস্তমৈথুন কেন হ্যাণ্ড পল্যুশান এ ক্রাইসিস তো পাতার পর পাতা জুড়ে লেখা ও ছাপা হয়ে আসছে।তবে পরিস্হিতি পাল্টাচ্ছে।
মানে সব ঘোলাটে হচ্ছে।”করিবার হলো তার সাধ”, এটা যে কোনও বোনের স্বামী লিখেছে মানা গেলেও “রতির আঠায় চটচটে বিছানা”কথা ও তিক্ততা নারীকলমে বটতলার উপন্যাস পাঠে পাওয়া গেছে এমন পরিস্হিতি।
ঢাকা শহরের হারিয়ে যাওয়া বইয়ের খোঁজে, এমন কোনও রচনা ও ইঙ্গিত থেকে ইশারা না পাওয়া গেলেও প্রাক্তনীদের আহারবিহারের যে সাধু সংবাদ লভ্য তা বড় উত্তেজনাকর এবং অন্তিমে আঁচ-অনুমান থেকে মূলধারা বেফাঁস বেরিয়ে আসে বইকি।জাফরানি জর্দার মধ্যে থাকে মর্দামি।
আরো খাশ দৃকপাত হয় মুসলিম চিকিৎসার হেকিমি দাওয়াইয়ে  যেখানে মোগলাই পোশ্ তাই হালুয়ার কথা বলা আছে।
বরাবর দেখা যায় শিথিল শিশ্ন ও শিঘ্র পতন নিয়ে হেকিম সাহেবদের দম্ তক্ অবধি নাই।দাওয়াই ও পথ্য বিকশিত হয়।
রন্ধনশালায় সেই তেজও অন্যান্য খাওয়া খাদ্যে আবির্ভূত হতে দেখেছি।
সব যে যৌনতার মেজাজ গড়তে সে ব্যাপারে ধারণা আরো পোক্ত এই জন্য যে, আঁচার ও টক জাতীয় ভোজ্য সব পুরুষাত্মক বলে স্বীকৃতি আজো পেল না বরং নারীদের পাকস্হলি উপযুক্ত এই জন্য যে ধারণা টা চারিয়ে দেয়া আছে টকে মরদানি (মরদ+আমি) থাকি না।
গোলমাল হয়ে যাচ্ছে এই জন্য ঢাকাই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ মানসে পর্নোগ্রাফির খোঁজ ও উৎস বাছতে তক্কে-তক্কে এগুবো বলে জাল পাতা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে মাছের কথা।পুঁটি মাছ বলে বিকাল বেলায় টাটকা চকচকে কুড়মুড় ক্রিসটি ভাজা করে খেয়ে জগৎ সংসারে সব কাজ ফেলে সন্ধ্যা নামতে খেলায় মেতে উঠলে পুঁটি মাছের জানের মত শক্ত লড়ে যাবে…. টাকি মাছের মত হাত ফসকে গেলেও লাফাবে ঝাঁপাবে বেশ।তখন কপালে চিকন ঘাম অথবা ভেজা ঘামের গন্ধে মলিন আঁতরদানি।
আর যদি বোমা না ফাঁটে তো মুখ ফোটে না তবে বুক ফাঁটে বলে বুক স্টোর থেকে অলিতে গলিতে পথে প্রান্তরে যেখানে পদচারি পরিসর সেখানেই হরেক কাগজের পাশে লাজবরণ কুমারীর মত উঁকি দিয়ে জানান দিচ্ছে,  খবর আছে।
ঘর থেকে বে-ঘরে বেঘোরে ঘুরতে থাকে।পাইলেও পাওয়া যায় দুএকখান। বিছানা থাকলে,  বধূটি পাশে শুয়ে ছিল বলে গরম করবার প্রয়োজন হয় বইকি।
সচিত্র নর-নারী থেকে শ্রীমতি  ,  যৌনবিজ্ঞান, রচয়িতা ৎ হাসনাৎ(খণ্ড ত হাসনাৎ)মানে কোড নামে বলা হত আবুল হাসনাৎকে কালিকলম ছাড়া জবানে মাত্র থেকে মকসুদুল মোমেনিন।
ঘাড়ের ওপর মাথা না থাকতে পারে তবে শিশ্ন মুন্ডু রাঙিয়ে দিয়ে যাও তাহারে  ,  এমনই দৌঁড়ের ওপর থাকতে হবে।

যা হোক।ক্ষুধা দিয়ে আলাপটা শেষ করারও প্রয়োজন আছে।
লিবিডৌ(libido) এবং আপ্ পিটাইট্(appetite)ঃ দুই সতীন।   গলাগলি করে থাকে।যৌনতাড়না বা কামনা এবং অপরটি , খাদ্যের জন্য জৈবিক চাহিদা।বলা আছে এমনই।দুই প্রবণতার ঘাটতি এবং বাড়বাড়ন্তি হতে পারে।এ দুটোর পাশে কুকুর হয়ে শুয়ে থাকে বিন্যস্ত পুঁজি ও মুনাফা কাতরতা।এটা ক্যাপিটালিজমের ব্যাধি হলেও তা নিজের জন্য ক্ষতিকর না যতক্ষণ না পতন পরিণতি ঘটছে এবং আগে পর্যন্ত সাপ্টে নিচ্ছে দানবীয় ভাবে অর্থসমুদয়।
পুঁজি গড়ে ওঠে বর্বরভাবে পরার্থপহরণের মধ্য দিয়ে।এখানেই পরার্থপরতার অর্থনীতি ও রাজনীতি।যৌনতা যেমনতেমন ক্ষুধার গাফিলতি বানিয়ে লুটেপুটে চুষে চেটে নেয় সর্বস্ব।
কখনো চিকিৎসা কখনো নারী শরীর কখনো ক্ষুধার অন্ন জোটাতে কখনো অন্নকে বিভিন্ন করতে বিষ ঢালতে ঢালতে এমনকি এখন খাঁটি বিষ পাওয়া যাচ্ছে না বলে করতে করতে আশ্বস্ত ও বিন্যস্ত করতে জারি থাকে ধনিকবণিকের পালা।চাঁদ সওদাগরের বদলে বেশুমার তাতে মৃত্যু-সওদাগর।
পুঁজির ধর্ম হচ্ছে মুনাফা,মুনাফার গর্ভ হচ্ছে ব্যবসায়।রাজনীতির মূল লক্ষ্য যে ক্ষমতা,  সেটা বানরও জানে অর্থাৎ সভ্যতার উষা লগ্ন থেকে বলবৎ।  ক্ষমতার সঙ্গে অর্থ-সম্পদের মিতালী রয়েছে।
অর্থ-সম্পদ আহরণ করার জনূ দ্রুত পদ্ধতি হলো লুঠতরাজ।পুঁজিপতি হতে গেলে বর্বোরচিতভাবে অর্থ নিঙড়ে তুলে আনতে বাছবিচার না করে ক্ষুধা ও কামনাবাসনা তাড়না বেদনাকে বাগে এনে মোক্ষ সাধিত করার ফল স্বরূপ একমুঠো ভাতের জন্য দেহদান থেকে সন্তান বিক্রি তেমনি অভাববোধের সঙ্কট মনের ভেতর দাপিয়ে আবার চুরি করতে পুলিশকে ডেকে এনে এক দ্বিধা-দ্বন্দ্ব এনে ডেকে এমনকি ধর্ম ও শ্লীলতার তকমা পরিয়ে দুষ্প্রাপ্য ও মহার্ঘ বানিয়ে উচ্চমূল্যে চিত্র, লেখন ও চলচ্চিত্রায়িত যৌনতা উপভোগের নিমিত্তে চড়া দামে মড়া যৌনতার হাটবাজার জমিয়ে ফেলা হচ্ছে।
সবই তাদের ইচ্ছা।
ইশ্বরও অসহায়।বানালেন নারী-পুরুষ অথচ সব গিয়ে মিলল শিশ্ন ও যৌনকেশ থেকে স্তন-নিতম্ব,যোনি -নিতম্ব ও জিহবা এবং লালা ও বীর্যপাতের পিচ্ছিল পথে।
তবে শব্দ না হলে জমে নাই।
চড়চড় শব্দে প্রবেশিবে-----;লিখিত দৃশ্য বর্ণনা এরূপ হলেও দৃশ্যপট গতিময় হয়ে সচল চিত্রের বেলায় বাকবাকুম থেকে চাকুমচুকুম শব্দ ঘটনা ঘটার সঙ্গে মেলবন্ধন রচনা করে আপাতত হাল্কা মাত্রা ও পরে তুলকালাম না হয়ে পরবে না।
সেই পর্যন্ত বলবৎ   :
যোনি-লিঙ্গ ঠনঠনানি
ভঙ্গাঙ্কুর বাজায় খন্জনি
কতক্ষণে পাইবা মজা
গরমাগরম যোনিকৃত ভাজা।।
অর্গাজম ও ইজাকুলেশনের মেল বন্ধন চরমপুলক নিয়ে যৌন বয়ানে ধাধার প্রত্যায়নে এমই তো বলা হয়েছিল।এই বর্ণিলতা যৌনলেখে ভাবতে পারা গেছলো আর তা পরে দেখা হল চলচ্চিত্রায়িত পরিসরে।নিঃশ্বাসে ঝড় কথায় আর সাপের মত হিসহিসানি দেখায়।

তাই বিচিত্র অব্যয় ধ্বনি এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বলিহারি নামা-ওঠা রীতিমত শরীর জুড়ে মন্হন চালাচ্ছে।--যুবক বার্ধক্যে পৌঁছে গেল।


ইশ্বর যেন এই পল্লীতে বাস করছেন না বলেই রাজনীতির মধ্যে পলিটিক্স ঢুকে ধাক্কা মারার ফলে এককোষী থেকে দস্তুর মত মানুষ সৃষ্টি /জীবসৃষ্টির প্রাকৃতিক নিয়মকে পাঠ্য জীববিজ্ঞানের অধীত বিষয় হিসবে ঝুলিয়ে দিয়ে সেই ‘সে’ কোষ-কে দ্বি-ভাজিত ও পুং-স্ত্রী সর্বনামে ও কর্মগতভাবে পরিপূরক  বন্ধনে ফেলে যৌনতার মুক্তান্চলে উদরপূর্তির রাজনীতির সমার্থক ও ঘটক প্রক্রিয়া চালুকরণের পর মাতৃতান্ত্রিক ও পুরুষতান্ত্রিক স্বৈরাচার সৃষ্টাচার হল।

জঙ্ঘার উত্থান থাকে, কামনা থেকে কামরাঙাও থাকবে তবে আলাপটা এরকম যে, বীভৎসের ভিয়েন চড়ানো ও শরীরকে বাঁকা করে আরেকটি অধ্যায় রচিত হবে কিনা।
১৮৭৩ তে বঙ্গদর্শন কাগজে অশ্লীলতা সম্পর্কে বলা হচ্ছে-----
“এখন, এমন অনেক সম্বাদপত্র ও পুস্তক দেখিতে পাই,যে তাদৃশঅশ্লীল পত্র বা পুস্তক পাঁচ সাত বৎসর পূর্বেও দেখা যাইত না।এসকল পত্র বা পুস্তক অবশ্য অনেকের দ্বারা পঠিত হয়, নচেৎ লুপ্ত হইত--”।জেমস লঙ সাহেব ‘এরোটিক’বইয়ের তালিকা প্রবেশাধিকার দিয়েছিলেন প্রকাশিত বইয়ের ক্যাটালগিং করতে।
স্বীকারোক্তি ও মান্যতার পাশাপাশি নমনীয়তা দেখা হয়ে যাচ্ছে চক্ষু মেলিয়া।
তখনো “আমাদিগের” সেক্স আসে নাই। যৌন ও যৌনতা যে আলাদা সেজন্য ১৯৩০ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
যৌন নৈতিকতার নামে জাত বোঝানোর প্রক্রিয়া আমাদের উদোম শরীরে প্রহার করার করার আগে পর্যন্ত জনরূচিকে সাঁয় দেয়া তথাকথিত বটতলার প্রকারান্তরে জনপ্রিয় সাহিত্যকে বাছবিচার করা যায় না।

মুখরোচক, কপট ঝগড়াঝাঁটি,গদ্য-পদ্য ব্যবহৃত রসাত্মক,ইন্দ্রিয় সুড়সুড়ি,  ধাঁধাহেয়ালি, ধর্ম ও বিনোদন তৎসহ সমসময়ের বিষয় ও কুৎসার বিকেন্দ্রীকরণসহ নভেলনাটকপ্রহসন নিয়ে গঠিত ও শূন্যে মেলানো এই সাহিত্য চেতনায় নিজস্বগুণপনা ছিল বা আছে বলেই সমাজবিজ্ঞানে সাহিত্য মনস্ক গুরুগম্ভীর সন্দর্ভ রচনা করতে গুরুত্ব
উপড়ে ফেলা যাচ্ছে না। সহজেই প্রণিধানযোগ্য হয়ে উঠেছে ভিক্টোরিয়ান কৌপিন ও কাঁচুলি পরিহিত মূল্যবোধ চারিয়া প্রাচ্যের জ্ঞানদর্শন অপহরণের মত এখানেও চাতুর্য কাজ করেছে বেশ।ডিনায়্যালের আকসেপ্টেন্স না খুঁজেও আবিস্কার হচ্ছে।
পর্ণোগ্রাফি নামে তন্চক শব্দের জাগরণ সাহিত্যের একটি শক্তিশালী ধারাকে রুখে দেয়ার মতলব।সংস্কৃত ও আরবি ফারসি সাহিত্য নিয়ে সম্ভব হয় নাই অথবা সেখানে অবোধ্য হলেও বাংলায় পদকর্তারা যখন সমতুল্য দূতিপ্রকরণকল্পে ধাবমান হলেন ও বাঁধা জুটল,  নৈতিকতার দড়িদড়া লাগানোর চেষ্টা হল বাংলায় যত বিদ্রোহের মত ফাঁস করে দেয়া গেল জারিজুরি।
জেমস লঙের মার্কামারা এরোটিক লেবাস পরা সাহিত্য যে যাবতীয় ঐতিহাসিক কামকেলীর শতাব্দী প্রাচীন প্রবণতা ও শৈলীর সময়োপযোগী নবীকরণ তা তো বলা বাহুল্য।
ইসলামী তাগদেও রোমান্সলীলার পুনর্বাসন সোনাভান,  ইউসুফ জুলেখার কেচ্ছায় পাওয়া যাবে।এসব ভাবনা বিস্তারিত হয়েছিল যৌনতামণ্ডিত পরিবার ও সন্তান জন্মদান, নারীপুরুষের আদর্শবান অবয়ব নির্মাণ, প্রজনন সত্তা বিবিধ তরিকায়।
সামাজিক মুখকে মুখোশ দিয়ে ঢেকে দেয়ার পেছনে রাজনীতির সঙ্গে পুরুষ রচয়িতাগণের বিপরীত বিহারের প্রতি ততদিন পর্যন্ত ভীতি কেবল কাজ করে নাই বরংব্যক্তিক অহমিকা ও পতনের সঙ্ঘর্ষ অধিকন্তু নারী নির্মানের মাধ্যমে “উত্তম জননী,  উত্তম জাতিগঠন” জনিত প্রেরণা কাজ কাজ করছিল।
এইসব টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে আমাদের জাতিরাষ্ট্র গঠনের আবেগ সংলগ্ন ও বিগলন হয় যেনবা গঠিত হয় শূণ্যে মেলায়।

সোনাভান কেচ্ছা বা ইউসুফ জুলেখা রোমান্স কাহিনী হেঁটে হেঁটে ঢাকামুখীন হলেও অসংখ্য এমন পুনরুৎপাদনের জন্য মুদ্রণযন্ত্রের স্হাপনা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়।
ছাপানো পুস্তিকার নজির হতে দেখা যায় ১৮৪৮/৪৯ সাল মুদ্রণযন্ত্র ছিল ঢাকায়।১৮৪৯ সালে ঢাকার কাটরা প্রেস থেকে ইংরেজি ও বাংলা অক্ষরে ভরপুর ৫১পৃষ্ঠা ব্যাপী যে পুস্তিকাটি বের হয় তার নাম
“Scriptural Riddles in Bengali., Rendeered into English verse,with English Notes&c---ধর্ম্ম পুস্তক সম্বন্ধীয় প্রহেলিকা ও ইংরেজি কবিতা ছন্দ অর্থযুক্ত তর্জমা।”
এস বারোইরো নাম্মী কেউ একজন গ্রণ্হটি রচনা করতে গিয়ে সেই জমানায় এদেশীয়দের কাব্যাকর্ষণকে সনাক্ত করে স্বীয় ধর্ম প্রচারের নিমিত্তে ছন্দোবদ্ধ শ্লোক উপস্হাপনের প্রয়াস গ্রহন  করেছিলেন বলেই এমন বিবেচনার  অনুমান থেকে আঁচ করা যেতে পারে যে ,  বটতলার সাহিত্যের প্রবণতাও অনুসৃত হয়েছ।

এস বারোইয়োর ২৪টি প্রহেলিকার অন্যতম যার জন্য প্রযোজ্য এই যে….
“শরীর জন্যে শরীর হইল তাতে শরীর
চেতন পাইল
সে শরীর শরীর শিরোমণি।
যদি আপন হইতে শরীর হয় তাতে কেবল
শরীর ক্ষয়
শরীর বিনা শরীর দুঃখিনী।।”
এই ধাঁধাগুলোর সমাধান আয়াসযোগ্য বলে মতামত /অভিমত প্রদান করা হয়েছিল।এখানে ধর্ম প্রচারণা তথা স্হানীয়দের দুর্বলতাকে পুঁজি করে সংলগ্ন করা হয়েছিল সেই রকম মেজাজ।
 ফলে সুদূর ঢাকার কাটরা প্রেসেও পরিলক্ষিত হল বটতলার দেখনদারি। 
চটকদার যৌনধাঁধা সাকিণ বটতলায় এরূপে নিমজ্জমান,পাতা উল্টে দেখা পাওয়া সম্ভবপর।

“হস্তো পর হস্ত
ইহা পর হস্ত
হস্ত মধ্য ইহা
উহা মধ্যে ঠহা...ইহা উহা কাঁহা  ?

উত্তরঃ লিঙ্গ ও যোনি।
অতএব বটতলা আমতলা জামতলা কীভাবে মিলেমিশে একাকার।

কাঙাল হরিনাথ তখন ঠাকুর বাড়ির জমিদারী জুলুমের বিরুদ্ধে একের পরেএম এক আগুনঝরা স্টোরি প্রকাশ করে যাচ্ছিল।


বাঙালি চেতনায় বরাবর তখনও কতিপয় শব্দ ও অর্থ নিয়ে অস্হিরতা ছিল।
পর্ণোগ্রাফি।এরোটিকা বা রোমান্সধর্মী সাহিত্য।সেক্স। সেক্সুয়ালিটি।এবং অধুনা জেণ্ডার।

সেক্স বলতে জৈবিক পরিচয়। অন্যদিকে সামাজিক পরিচয় জেন্ডার।নারী ও পুরুষ যেখানে সামাজিক নির্মিত ক্যাটাগরি সেখানে বায়োলজিক্যাল ক্যাটাগরি লিঙ্গ পরিচয়।
সেক্স হয়ে আছে জৈব লিঙ্গ এবং অপরটি সামাজিক লিঙ্গ।
সেক্স প্রাকৃতিক ঘটনা এবং প্রাকৃতিক বা শারীরিকভাবে নির্ণিত নারী-পুরুষের ভিন্নতা।জেন্ডার সামাজিক,সাংস্কৃতি ও মনস্তাত্বিক ভাবে নারী-পুরুষ এমত বিপরীত লিঙ্গের সম্পর্ক।এই সম্পর্কের চৌহদ্দিতে আবার প্রান্তিক অবস্হান উভ-লিঙ্গ ও রূপান্তরকামীগণের।  উভয়ের সঙ্গে উভয়ের সম্পর্কও জেণ্ডার বিবেচনায় চড়াইমুখর ভিন্ন প্রেক্ষিত।এই সকল প্রান্তিকতা জেণ্ডার ধারণায় অবস্হান গ্রহণ করে। পর্ণোগ্রাফি চর্চায় এই প্রান্তিকতা গৃহীত হয়েছে।সেখানে নারী, শিশু উভকামী ও রুপান্তরকামীরা অনিবার্যভাবে উপাদেয় এবং রেচন-রসনা বিলাসের শিকার।

বাংলাদেশে উন্নয়ন সাহিত্যে জেন্ডার আলোচিত হচ্ছে।উন্নয়ন ও জেণ্ডার পাঠদানকালে জেণ্ডার স্টাডিজকে পর্ণোগ্রাফির অভিযোগ করে শিক্ষক রিয়াজুল হকের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে আঙুল তোলা হয়।
এই অধ্যয়নে বিবেচিত হয় নারী-পুরুষের বৈষম্য, নারীর প্রতি সহিংসতা,নির্যাতন,  হেনস্তাসহ তাদের অর্থনীতি রাজনীতি সমাজনীতি।
নারীর প্রতি সহিংসতায় জুড়ে থাকে তাকে ভোগ্যবস্তুতে পর্যবসিত করা।বৈষম্যের বড় পরিসরটিও তাতে থাকে।
পাঠদানকালে বৈষম্য রোধ কেন করা জরুরি  ,  এসব বিবেচনায় সার হয়ে থাকা নির্যাতন ও নিগ্রহের ব্যাপক অবস্হা সূত্রে যে পাঠ্য প্রস্তুত হতে থাকে তা যেমন সমাজ থেকে বানানো তেমনি এমন যৌন সন্ত্রাস পর্ণোগ্রাফিতে সর্বত্র অধিকারকের ভূমিকা পালন করে আসছে।

পর্ণোগ্রাফিতে জেণ্ডার বৈষম্য উদযাপন করা হয়।
নারীর প্রতি যৌন সহিংসতা ও বৈষম্যের ধ্রূপদী দৃষ্টান্ত পর্ণোগ্রাফি।হেয় করা হয় নারীকে  এবং তথা সমগ্র মানবেরে তো বটে।
বটতলার সাহিত্য থেকে পর্ণোগ্রাফির দূরত্ব যে কতটা অথবা নৈকট্য কোথায় তা বুঝে নিতে চাইলে জানতে হবে কীভাবে শব্দের মোচড়ে পর্ণোগ্রাফি হয়ে ওঠা ঘটে।
দেখতে হবে পর্ণোগ্রাফি।বুঝতে হবে পর্ণোগ্রাফির চরিত্র।
পর্ণোগ্রাফি এক ভায়োলেন্সের নাম।লেখা যায়, পড়া যায় শোনা যায় এবং প্রদর্শিত হয়।শিশ্ন কদাচিৎ নমিত হয় এবং যোনি মুদিত হয় না।শিশ্নের দখলদারী চলে সর্বত্র।যোনির পিচ্ছিল পথে সে পা হড়কায় না।অশেষ খাদ্য ও পুষ্টি সে আরোহন করে।
পুরুষ তার সর্বাঙ্গ দিয়ে লুটেপুটেচেটেপেটে খায়।একতরফা ও অদ্বিতীয়। কোনও অঙ্গের জন্য কাঁদে না আরেক অঙ্গ।অঙ্গরঙ্গ তরঙ্গ তোলে পাঠক বা দর্শকের পরিসরে।সে বা তারা অর্জন করে না কেবলি অপচয়িত হয়।যৌন অপচয়।সেখানে থাকে শব্দ।হালুম আর পেলুম।খেলুম আর ঢাললুম।
কোথাও কোনও ক্রন্দন নাই।কেবলি হিসহিস।তখনই ঘোঁৎ ঘোঁৎ।এবং তারপর।এবং তারপর।----ফাক মি বেইবি, ফাকায়্যু বেইবিবিবিবি।
দূরে কোথাও আজান হচ্ছে।কাঁসড় বাজছে।জগতের সকল প্রাণী সুখী থাকুক।লা লা ঝরা রাত ফুরালে দিন আরেকটা রতিচটচটে রাতের জন্য অপেক্ষা করে।
যে শব্দগুলোর ব্যাপারে ছুঁৎমার্গ থাকার ফলে শব্দ ও অর্থ অজানাজনিত গুলিয়ে যাচ্ছে হুতোম ও আলালী সাহিত্যের সঙ্গে বটতলার সাহিত্য, বটতলার সাহিত্যের সঙ্গে রোমান্স সাহিত্য, রোমান্স সাহিত্যের সঙ্গে পর্ণোগ্রাফি।এবং ইত্যাদি।
আমাদের নদীমাতৃক দেশের প্রধান উদযাপন ও উপলক্ষ যৌনতা,কামুকতা এমন এক শ্বাশত প্রবণতা যা কৃষি ক্ষেত্র , হল-লাঙল , শ্রমিক মজদুরের ঘরে বেদমভাবে প্রকাশিত তাকে পর্ণোগ্রাফি বলে চালিয়ে দেয়ার ফলে সব এমনভাবে ঘুঁটে যায় যে, অলক্ষে পর্ণো বাণিজ্যালয়ের বাড়বাড়ন্ত বিপত্তিহীন ও মুক্তকচ্ছ।
যৌনতা দেশভেদে বিভিন্ন রকম।বঙ্গদেশে রয়েছে তার সুজলা সুফলা প্রকৃতি।তবু প্রেম কাঠালের আঠা মানলেও গান গাইতে গাইতে জীবনাবসান হলেও বাকি সময় রঙিন তহবন্দ দিয়ে ঢেকে রাখা চলে।কাব্যে যা চলে কাহিনীকাব্যে অচল।যৌনভাবনার কাব্যিকতা আরেকটি পোখরাজ তবে নিঃসন্দেহে এই তকমা আঁটা থাকে যতক্ষণ তা কাহিনী -কথায় আখ্যায়িত ওদৃশ্যশ্রাব্য নয়।নচেৎ মদনদহন ফাঁস হয়ে পড়বে।
যৌনতা শব্দ বিচারে দেখা যাবে যে,বস্তত শব্দটির ভেতরে নারী-পুরুষের অঙ্গ ভাবনা, কামনার উদ্রেক,  রতিক্রীড়া থাকে বলে সেক্সুয়ালিটির বিপরীত এই বাংলা শব্দ মান্য-তা পেয়েছে।
মিথুন অথবা প্রবৃত্তি অনুরূপ ভাবনার সম্পূরক শব্দ দ্বয় অনায়াসে সেক্সুয়ালিটিকে প্রতিস্হাপন করতে সক্ষম।
মিথুন বা প্রবৃত্তির মধ্যে পশুকর্ম ও ধর্ম নিষিক্ত হলেও তাতেই জন্ম তাতেই পুরুত্থান।এসব কথা সত্য অথচ খুল্লাম ভাষায় লিপিবদ্ধ হলে জাত গেল জাত গেল বলে পর্ণো আখ্যা দিতে দিতে খোদ বীভৎস রসের উপযুক্ত উদগাতা পর্ণো ইন্ডাস্ট্রিজ চোখে হারায় না।লালিত পালিত হয় শুধু সাহিত্যকে আঘাত হেনে।
বলাবাহুল্য, ভাষা ও আঙ্গিক নির্ধারিত হয়ে আসছে বিষয় সকাশে।পরকীয়া কিংবা অজাচার যদি হয় বিষয়বস্তু কিংবা অসম প্রেম বা সমপ্রেম তবে শব্দ ও ঘটনাবলীর বিন্যাসে সকল অবতারণা ঝুঁকিপূর্ণ ও সমাজ থেকে বানানো বলে গত্যন্তরহীন। আঙ্গিক এখানে দৃশ্য-শ্রাব্য বা শব্দ মাধ্যম যেখানে যেভাবে বিষয়বস্তুর সর্বোত্তম প্রকাশ সম্ভব।ভাষাও নির্ণীত হয়, শব্দও মোচড় খায়,  ক্লিশে শব্দ ব্যবহার হোক বা না হোক ঘটনার ঘনঘটা চলবে আর লাজ শরমের বালাই থাকবে না ভাষার-----  শব্দ ও অর্থের।এখানে খুল্লাম ভাষাকে তকমা দেয়া আর শব্দের সতিপনা পরীক্ষা করা আরেক অসভ্যতা।
কাব্যে ভরা কলসির মত নিতম্বের কথা লিখে ফেলা গেলেও গদ্যে তা যুক্তির কসরৎসহ কেন,কোথায় কিভাবে  কে কী এসব বিস্তৃত না করলে গদ্য ও পদ্যের ফারাক ধূলিস্মাৎ হতে বাধ্য।ঘটনা ও বিষয় বস্তুর হাত ধরে শব্দেরা আসে, খেলা করে এবং অনুপুঙ্ক্খ রূপালি পর্দায় যেনবা।

সেক্সুয়ালিটি শব্দের ভেতরেঅবগাহিত হয় আরো দু’টি শব্দ সত্তা তা হল লভ্ ও এরোটিক্স। এই তিন ক্রিয়া প্রায়শ পারস্পারিক সীমানা লঙ্ঘন করে।
শৃঙ্গার বলতে কাহিনীতে এরোটিক্স এক রোমান্স ধর্ম।থাকে সন্নিবিশিত সেক্সুয়ালিটিতে।এই যৌনতায় ভালবাসা ও শৃঙ্গাররস অবস্হান করে দূরে ও অদূরে।
এবার তবে ঘন হয়ে বসা যেতে পারল।

শ্লীলতা ও অশ্লীলতার সীমানা পরখ করে দেখা যেতে পারে যে , দুর্ভেদ্য কিনা।
পর্ণোগ্রাফিতে নারী শরীরকে বলি কেন শরীরকে বিষয়ী করে তোলা হয় যেখানে অন্য প্রসঙ্গের অবতারণা পর্ণো চরিত্রকে নষ্ট করে।

এইবার---
 চকবাজারের শিবলি মিয়া গুয়ামুড়ি হাসি দিয়া কয়
বুজছি  , কথা নাই শুধু কাম।।

হ্যাঁ, এই পরিসরে খোদা গাওয়া নাই :তিনি বাস করেন ভদ্র সমাজে।
এই দন্ডে প্রত্যাবর্তন সাদাত হোসেন মান্টোকে পড়তে।কবরে শায়িত তিনি।সমাহিত হয়ে আছে ছোট গল্পের কল-কব্জা , গোপন সন্দেশ ও যাবতীয় রহস্যময়তা।আংটার মত ঝুলে আছে প্রশ্নঃ কে হন মহত্বর ছোটগল্পের পরিসরে  ? তিনি অথবা প্রভু।---
পর্ণো ভূবনে কোনও ইশ্বর বাস করেন না।এবং কোনও রহস্য থাকে না।সব ফকফকা।কেবলই অব্যয় ধ্বনি।শব্দের উত্তেজনা।রাগ মোচন।
কোনও গোপনীয়তা নাই।তল-কুঠরি নাই।নাই রহস্যময় মেঘ।সারাবেলা শুধু কামিং-গোয়িং।আসা -যাওয়ার পথের ধারে শিশ্নের রেতঃপাত মানচিত্র জুড়ে শ্রেষ্ঠত্ব জারি করে।

মান্টো।প্রথম গান ,   দ্বিতীয় মৃত্যুর আগেতে ছিল দাঙ্গা উৎপীড়িত দেশভাগ ও দেশত্যাগ।তিনি রাষ্ট্র কাঠামোর কাছে ছোটগল্পে অশ্লীলতার অভিযোগে দায়ী ছিলেন।তার ঠান্ডা গোশতের গল্প,  খুলে ফেলার গল্প অশ্লীলতা দন্ডিত রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের শিকার।
তিনি  এক সাফাই পত্রে আদালতে ঘোষণা দিয়েছিলেন সাহিত্য কখনও অশ্লীল হতে পারে না।
তিনি বারবার গল্প লিখে অশ্লীলতার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছিলেন।তার দোষ তিনি আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিলেন, পুরুষের দল নারীকে মাংসপিন্ড হিসেবে দেখে কেবল মাংস হসেবে।মাংস ঠান্ডা বলে সে স্পর্শটুকু করে না।

টাটকা সজীব মাংস পেলে ভুলে যায় সে,  ডিম ও মামলেট।
খুলে দাও মতো আহবান শুনলে ত্রস্ত নারী নির্বিকারভাবে নিজেকে উন্মোচিত করে।

সবই নৈতিক স্খলনের উদগাতা বলে সমাজ থেকে রাষ্ট্র তা নির্ধারণ করে বলেই সাব্যস্ত ঠিক হয় যে,সামাজিক মানদন্ড দ্বারা অশ্লীলতা নিরূপিত হয়ে আসছে।
অথচ সমাজের চোখে নর-নারীর সম্পর্ক বক্রদৃষ্টিতে জর্জরিত।
শব্দ চয়ন, শিল্প যোজনা কখনও অশ্লীল ও নোংরা হতে পারে না যতটা না পারে সমাজের বক্রদৃষ্টি নিক্ষেপের কোপানলে পড়ে।

সাহিত্যে শ্লীল-অশ্লীল বর্গীকরণ সমাজের নিত্য কেলেঙ্কারীর প্রতিভাস।সমাজে রয়েছে অজস্র আলো-আঁধারি।কুঁপিয়ে অন্ধকার খুঁড়ে সাহিত্য নিজ গতিতে কাজ চলাতে থাকলে সেই নগ্ন ঘাঁ-পুঁজ-রক্ত ও অমাবশ্যা দেখতে পেলেই হল,  হাজর বাতি জ্বালিয়ে নিজেদের ভেতরকার অন্ধকার-টা দূর করার বদলে পিদিমের নিচে অন্ধকারের মত পুষে রাখে কালো জগতের চেহারা।কেউ দেখে ফেলল কি প্রকাশ করল তাতে অন্যরা জেনে যাবে বলে নিজেদের ঢাকতে অন্যদেরও ঢেকে রাখতে পথ বাৎলাতে নষ্ট কালচারের নাম সাহিত্যে শ্লীল-অশ্লীল আবিস্কার।
শ্লীল-অশ্লীল তকমা আঁটা ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া সমাজেরই বিকৃতির নির্মাণ।সমাজ থেকে তা বানানো হয়।জেন্ডারও যেমন সোশ্যাল ক্যাটাগরি।
নারী-পুরুষের মিলন থেকে ----+জন্মদ্বার কি প্রবেশদ্বার থেকে মানুষের জন্ম।
এই তর্ক তখন উঠে আসে মানব জন্ম ও সৃষ্টির  উপায় অশ্লীল এক রক্তিম যাত্রা কিনা সেইমত বাছবিচার থেকে।
শ্লীল-অশ্লীল চিনি নে চিনি নে---সবচ’বড় অশ্লীল হল মানুষের খিদে নিয়ে চক্রাবর্ত।
“বিশ্বের সকল যন্ত্রণার জননী হচ্ছে ক্ষুধা।ক্ষুধা পাপের জন্ম দেয়।ক্ষুধা দেহ বিক্রী করতে বাধ্য করে।ক্ষুধা চরমপন্হী সৃষ্টি করে।ক্ষুধার হামলা অত্যন্ত ভয়াবহ।ক্ষুধা মানুষকে দিশাহারা করে তোলে এবং বে-দিশায় পড়ে মানুষ আবার ক্ষুধার্ত হয় ওঠে।”
সাদাত হোসেন মান্টো এমনটি বলেছিলেন।
তা বটে।
মান্টোকে পর্ণোগ্রাফিক লেখক বলে আক্রমন রচনা করা হয়েছিল।তার চোখে প্রকৃতই কোনও মোহান্জন ছিল না।পিতৃতান্ত্রিক সমাজে নারী সেক্সুয়াল অবজেক্ট না ভেবে স্বরূপে তিনি দেখেছিলেন নারীকে।এই অভিযোগের তর্জনী উত্তোলনকারীদের কাছে অধরা থেকে গেছে মা ও কন্যা।এমনকি নারীর দেহ বিক্রয়কারীগণের শিরোমনি যে তার অধীনস্ত নারী শরীরধারীদের কন্যা মম স্নেহ করতে পারে  তাও বিস্ময়কর ঠেকে তাদের অভিপ্রায়ের নিকট।মান্টো তুলে ধরেছিলেন অবজেক্ট নয় নারীগণ, কেবলই ব্যবহারে ব্যবহৃত নয়, সে হয় সাবজেক্ট বলে ভোগ্য নয় কেবল সে ভোগও করতে পারে আবার প্রত্যাখানও।
কবি ও সব্যচাচী-লেখক   সৈয়দ শামসুল হক। তিনি রচনা করেছিলেন খেলারাম খেলে যা।স্বাধীনতার আগের বছর মানব সম্পর্কের ধরন নিয়ে রচিত উপন্যাসের গায়ে বাক্স প্যাটরার ভেতর থেকে এনে পর্ণোগ্রাফি বলে খাস্তা তকমা জুড়ে দেয়া হল।কয়েকশ’পৃষ্ঠার উপন্যাসটিকে ধ্বজ গালি পেড়ে এক শব্দে আলোচনা শেষ।বাংলা সাহিত্য শেষ।
ধ্বজ দের মানদণ্ড আগা মোটা গোঁড়া চিকন। হেলে থাকে।দন্ড উচ্ছৃত হয় না, উদৃক্ত করে না সাহিত্য কেবল অপরিণত স্খলন।
সাতচল্লিশ পরবর্তী ইসলামি সাহিত্য থেকে পাকিস্তানি সাহিত্যের নিগড়ে হাঁসফাঁস করে ধুকতে থাকা সাহিত্যের বিরুদ্ধে ছিল।পরাণের গহীণ ভিতরের লেখক তার উপন্যাসের নামকরণেই দেগে জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন ক্ষয়িষ্ঞু টোটেম ও টাবু। খেলারাম খেলে যা কতভাবে গাঢ় আন্ধারে যেখানে কিলবিলানো দাঁত কেলানো হরর্ তাতে সশব্দে দিয়াশলাই কাঁঠি ঠুকলেন।
উপন্যাসটি এ বাংলা সেই উন্মাতাল দেশীয় জাগরণের প্রেক্ষা-পটে আধুনিক তার প্রথম প্রজন্মের প্রধান তম উল্লাস।
মনে পড়ে যাবে , যৌনমিলনে  ভারতীয় শিল্পের মর্যাদায় অভিসিক্ত কল্যাণ মল্ল বিরচিত অনঙ্গ রঙ্গ গ্রণ্হটিকে।লজ্জাতুনেছা বা কোকশাস্ত্রও বলা হয়ে থাকে।
যৌন শাস্ত্র হিসেবে অবাধ যৌনতার খোলামকুচি বিবরণ নয়।বহুগামিতা যখন অবারিত সেসময়ে মনোযোগ এক নারীতে বিনিয়োগ করতে উপভোগ্য ও একঘেয়েমি যৌনমিলনের প্রেক্ষাপট, ঘোষণাপত্র ও মূলনীতি সমন্বিত ইশতেহার।
বাঙালি মুসলিম মননে সুদূর প্রসারী অভিঘাত সৃষ্টি করলেও বিজ্ঞান বলা যাবে না।কামকলা শাস্ত্র নৈতিকতার মূলে রচিত হলেও যৌনতার বৃত্তে তদীয় বিবরণ।
গ্রণ্হটি বাৎসায়নের কামসূত্র রচনার অনেক পরের।
এই অনঙ্গ রঙ্গ ছিল সংস্কৃতভাষায় রচিত কাম বিষয়ক সর্বশেষ গ্রণ্থ।এর হাজার বছর পূর্বে কামসূত্র-এর সূত্রপাত।তখন অনঙ্গভিমার সেই রাজত্বকালে খ্রীস্টিয় চতুর্দশ শতাব্দিতে লোদি পরিবারের কোনও এক রাজার  গরজে রচিত হয়েছিল অনঙ্গ রঙ্গ।
রাজা আহমেদের পুত্র লাদা খানের বিনোদনের জন্য কল্যাণ মল্ল এই গ্রণ্থটি রচনা করলেও আরবিতে, হিন্দুস্হানি ও মুসলমানদের কাছে তা লজ্জ্বাতুন্নেছা বা নারীর আনন্দ। অনেকে বলে কোকা শাস্ত্র।কোকা পন্ডিত কাম শাস্ত্রটি রচনাকারী।এই কোকা পন্ডিত কর্তৃক যৌন অতৃপ্ত রাণীকে রাজার অনুমতি নিয়ে তাপের শীর্ষে বর্ষণের নিপুন বিবরণ যৌন জগতে প্রচলিত জ্ঞানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা প্রদর্শন করে।
এই গ্রণ্থের শ্লোকধর্মী বিবরণের দ্বৈত তাৎপর্য পরিলক্ষিত হয়ঃ প্রেমোদ্দীপক ও আধ্যাত্মিক।
কবি কল্যাণ মল্ল আশা করেছিলেন,  এই গ্রণ্থ প্রশংসিত হবে তাদের দ্বারা, যেসব ব্যক্তি মানুষের সর্বোচ্চ আনন্দের রহস্য ও তদীয় শিল্প সম্পর্কে জানতে বিশেষ আগ্রহী।
যৌনশাস্ত্রকারেরা কয়েকধরনের নারীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক রহিত করার পরামর্শ দিয়েছেন।যেমন,কুমারী, বিধবা,বয়স্কা,শ্বাশুড়ি,মায়ের বোন,চাচি,ফুপু,মামী,আপনবোন,গর্ভবতী,কালো ওহলুদ গাত্রবর্ণের নারী প্রমুখ।
আর ধর্মমতে এ সব সম্পর্কের ক্ষেত্রেও নিষেধের হুশিয়ারি রয়েছে।
আর কি আশ্চর্য যে,পর্ণোগ্রাফিতে এসব সম্পর্ক ঘিরে লালা ঝরানো আছে।
কিছু স্হানবিশেষে যৌনকর্ম অনুচিত বলে শাস্ত্রকারেরা বললেও খোলা জায়গায়,বনেবাঁদাড়ে, শহরের প্রধান সড়কে এমনটি আকছাড় ঘটে বলে পর্ণোগ্রাফিতে তা দেখা যায়।
প্রজন্মান্তরে বাঙালি মুসলমান নারীকে দেখতে চেয়েছে স্বর্ণলতার মত কণ্ঠের বেষ্ঠনী হিসেবে।নারী উচ্চশিক্ষিত হয়ে উঠলেও স্বাধীন ও অধীর হয়ে উঠতে পারেনি।।
বিয়ের রাতে কম শিক্ষিত মাঝারে শিক্ষিত পুরুষরা নবপরিণীতার মনে আদর্শ নারী হয়ে ওঠার উদগ্র তাড়না তৈরি করতে বিবিদের উপহার দিত নজিবর রহমানের আনোয়ারা, আব্দুল ফাত্তাহর গরিবের মেয়ে  ,কোরবান আলীর সালেহা,মনোয়ারা।
সেখানে ছিল অল্প ও মাঝারি শিক্ষিত মুসলমানদের বিবি বা বেগম তৈরির ছক।তাই জনপ্রিয় ছিল উপন্যাসগুলো।
তাই বিবাহসঙ্গি ছিল বইগুলো।বাঙালি মুসলমানরা নিজের জন্য চেয়েছে বিবি যে মাতা বা মাতা মহীদের মত না হয়ে ব্যতিক্রমী হতে পারবে তবে স্বাবলম্বী হওয়া না জায়েজ।তারা হবে কেবল এবং একমাত্র স্বামীর জন্য উপাদেয়

।মকসুদুল মোমেনিন, বিলক্ষণ কাটতির বই আরেকটা।ভঙ্গ করেছে সকল রেকর্ড। বইটিতে মুসলমান নারী ও পুরুষের জন্য শুদ্ধ আচরণ থেকে যৌনাচারণের সহি তরিকা বাৎলেছে যে এমন হয় যেন সঙ্গমকালে প্রারম্ভিক কোন দোয়া পড়তে হবে,সম্পূর্ণ উলঙ্গ হয়ে রতিক্রিয়া না করে কি উপায় অবলম্বন আবশ্যিক,নারীর ভ্যাজাইনার দিকে না অপলক তাকিয়ে দৃষ্টিক্ষয়ের আশঙ্কা রোধ..পুরুষ সন্তান কামনা করলে সঙ্গমকালীন দায়িত্ব
যার যা ভূমিকা এমন সব পদে পদে যতসব অ- বৈজ্ঞানিক পরামর্শ প্রদান এবং ভাষা প্রয়োগ এমনই যৌনস্বভাবা হয়ে থাকে যে, পাঠরত ব্যক্তির নিঃশ্বাস সঘন ও উষ্ঞ হতে বাধ্য।ধর্ম মতে কামশাস্ত্র বলা যেতে পারে।

নিয়ম মেনে যৌনতায় বেহেশতের কুন্জির হদিসদাতা এই গ্রণ্হ।

এহ বাহ্য! ! মূলত নিম্নাঙ্গ কেন্দ্রিক গ্রণ্হ এটি।

অন্য কেউ পাঠ করলেও কামভাব জয়লাভ করতে বাধ্য।
আকিকুন্নেসার আবির্ভাব ঘটেছিল নজিবরদের নভেল রচনার প্রায় দু’দশক পরে।তিনি পরামর্শদাতার ছলে মুসলমান নারীকে স্বামী মদনমোহনী হবার পথ দেখালেন।
এই বই মারমারকাট করে দারুন ভাবে সাতচল্লিশ পরবর্তী সদ্য গুম্ফ গজানো বাঙালি মুসলমান সমাজে পোষ মরেনে যায়।বাঙালি মুসলমান নারীকে শেখানো হয় এমন কামসূত্র যা অনুসরন করে আধুনিকা স্ত্রী হওয়া সম্ভব। নজিবর নারীকে দাসী এবং আকিকুন্নেসা দাসী থেকে স্বামীর জন্য রসবতী বিনোদনী হতে উসকালেন।যেমন, যোনি ঢিল হয়ে গেলে স্বামীকে পরিস্হি অনুধাবনে বিব্রত না করে কামের সময় যোনিপেশী টাইট করার পরামর্শ বিধৃত যেরূপ।
তার মাতমের অন্ত নাই কারণ বহু নারী নিজের প্রতি যত্নশীল না হয়ে স্বামী শরীরকে বেশ্যা দ্বারস্হ হবার সুযোগ বানিয়েছেন।
যৌন ক্রিয়াকে বাজারের মেয়েরা আর্ট হিসেবে গ্রহণ করবার ফলে অনুরূপভাবে ঘরের বধূদের সম আচরণে অস্হির করে তুলবার পথ দেখিয়েছেন।
তিনতালাকে মনস্হিরকৃত স্বামী পায়ে ধরিয়া ফেরানো না গেলেও বিছানায় ফন্দিফিকির করে এনে বেদম সুখ বিতরণ করলে নতুন প্রেমের উচ্ছৃতি দেখান তিনি।
নারী পুরুষ সম্পর্ক নিয়ে তাজা খবর বিতরণ করেছেন।
স্বামীগণ দিন শেষে অক্সিজেন ক্ষয় করে ঘরে ফিরলে নারী তার পেলবতা দিয়ে নাইট্রোজেন মোচন করে অক্সিজেন পূর্ণ করে তুলবে।এটাই নারী-পুরুষ সম্পর্ক।
সবই সুঁড়সুঁড়ি জাগানিয়া।
তিনি চিন্তিত একদিন ঝুলে পড়বে স্তন।তাই চিৎ হয়ে শুলে উন্নত দেখাবে।বডিস পড়ে স্তন খাড়া রাখার ব্যাপারে মতামতও রাখলেন।স্তন ঝুলে পড়ে নি এ দৃশ্যটি দেখে অন্য পুরুষের শরীর কাটা দিচ্ছে এমনটিও অনুভব করতে স্বামী প্রবর আনন্দবোধ করে তাও ধারণার আকার নিয়েছে নারী বিরচিত নারীদের উদ্দেশ্যে নারীর কামসূত্র আধুনিকা স্ত্রী।
আরো তাতে উপদেশ বিছানা বয়সের ভারে পৃথক করা চলবে না।রতিরঙ্গে বেশ্যার ছলাকলায় স্বামীর মুহূর্তে অনবরত মুহূর্মুহু বীর্য পাতে নারীর মুক্তি।
আকিকুন্নেসা নারীকে স্বামীর একান্ত ব্যক্তিগত পতিতা হতে প্রেরণা জোগাল।আধুনিকা স্ত্রী সেই কামসূত্রিত ইশতেহার।
ভাবের ভ্রূণ পয়দা করার জন্য যৌন বিজ্ঞানের পথিকৃৎ ধরা হয় আবুল হাসনাৎ ও নৃপেন্দ্রকুমার বসুকে, ১৯৩০ দশকে।প্রথম যৌন বিষয়ক মাসিক কাগজ নরনারী।১৯৬০ এর মাঝামাঝি বের হয় দু’টি যৌনপত্রিকা ---প্রভাসকুমার দাসের “ জীবন যৌবন” ও সমীর মজুমদারের “ সুন্দর জীবন”।
চিকিৎসা বিজ্ঞান বিষয়ক আলোচনা ছাড়াও পাশ্চাত্যের সমসাময়িক যৌনধর্মী নাটক, চলচ্চিত্র,শিল্পকলা, সাহিত্য।এই দুই পত্রিকা পত্রিকা প্রকাশের কয়েক বছরের মধ্যে সমরেশ বসু বিবর ও প্রজাপতি লিখলেন।রাত ভ’রে প্রকাশিত হয় ১৯৬৭।অশ্লীলতার অভিযোগে প্রকাশনা ব্যহত হল।
নাট্য মন্চে প্রিন্সস শেফালি লোক মাতালো।
১৯৬৫ ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর পাসপোর্ট উভয় দেশের মধ্যে চালু হলে মানুষ ও পণ্য সামগ্রীর অবাধ চলাচল রুদ্ধ।অপরত্ব এসে মুখ ব্যদান করল।
বই ও পত্রিকা নিষিদ্ধ করার অভিঘাতে পঠনপাঠন জগতে নিষিদ্ধ শব্দের নতুন সাঙ্গীকরণ সম্পন্ন হল।
নিষিদ্ধ বইপত্র এমন এক প্রপন্চ্ঞ তা ব্যাখ্যা করার পরিস্হিতি সামাল দিতে পারল না বিশ্বকোষ।আর এ নিয়ে লেখাজোখা শব্দ লিমিটেড বয়ানে দুরুহ।আরো অজস্র শব্দপাত এখানে অনিবার্য।ভিসিআর কিংবা কাটপিসের আবির্ভাবে উদার হাতে হানিয়া আঘাত পর্যন্ত বিবরণ বিশ্লিষ্ট রাখা ছাড়া পথ-প্রান্তর আপাতত রুক্ষ দেখা চলুক।
এখানে পর্ণোধারণা ও রিপু কাহিনীর দ্বৈরথ করা গেল মুন্ডিত।
পুস্তক ও বুকলেট,ছাপা কাগজ কেবলই উচ্চ ও বিবেচ্য।
এগুলো খোলাখুলি কিনতে পাওয়া যায় না।বিশেষ দোকান ও ব্যক্তির কাছে এগুলো প্রাপ্য।
প্রচ্ছদ। অঙ্গ সজ্জা, ভেতরের ছবি ও ভাষা আলাদা হলেও ঘুরে ঘুরে জলের মত এক কথা বলে চলেছে।
জীবনানন্দেরর কবিতা কিংবা সামাজিক অস্গিরতার মতো যে কোনও প্রারম্ভিক সূত্রপাত শেষ পর্যনবত অদ্ভূত রসায়ন ও গণিত বরাতে লালা ঝরিয়ে বিদায় নেবে।তুমুল সেই বর্ণনা।
এসব বর্ণা,  মনোভঙ্গি ও বর্ণনানুযায়ী চিত্র সম্ভার এসব ছাপানো কাগজকে বিশেষ তকমা দেগে দিয়েছে।
বইগুলো নিয়ে দেখলে তেমন কোনও প্রকাশনার বিবরণ পাওয়া যাবে না।
ষাট ও সত্তর দশকের ছাপানো এসব কাগজের বিষয় ও ভাষা পর্যালোচনা করে দেখা যায় নিষিদ্ধ আত্মীয় গমন ও ইতিহর্ষ লাভ পর্যন্ত বিষয় বর্ণনা থেকে পরিবর্তত কাঠামোতে বৈচিত্র্যময় পরিবেশ ও সংশ্লিষ্ট জটিলতার কাব্যময় বিস্তারিত বর্ণনা ঝেপে দেয়া হয়েছে।
দুই-এক ফর্মা যেমন পাওয়া যায় তেমনি সাত-আট ততোধিক ফর্মা বিরল নয়।
এক সময় চিত্র লিপি না থাকলেও ক্রমে ছবি জুড়ে দেয়া হতে লাগল।
ঢাকাই ভঙ্গুর রক্ষণশীল সমাজে ভারতে থেকে একসময় ছবি ও বই লুকিয়ে আনা নেয়া  করা চলত।
তাছাড়া নানা ভঙ্গিমার ছবি তোলা হত পতিতালয় হতে।ব্লকে ছাপা হত।বিদেশী ছবি তো ছিল।
টাটকা জিনিসের দাম বেশী থাকত।পরে দাম পড়ে যেত বিক্রী বাড়লে।
এক পত্রিকার নারী সম্পাদককে ভদ্রঘরের নারী ও থিয়েটারের নারী কর্মীদের নগ্ন ছবি ছাপার দায়ে গ্রেফতার করা হল।৯০দশকের মাঝামাঝি তিনি জোরালো কণ্ঠে জেরার উত্তরে পুলিশ কাস্টডিতে বললেন যে,নগ্ন হয়ে ভদ্রঘরের নারীরা যদি ছবি তোলায় আত্নরতি লাভ করে থাকে সেক্ষেত্র তাদের নগ্নবাজিতে দোষ না থাকলে সেই ছবি কাগজে ছাপতে ছাপাতে দোষের কোনও কারণ থাকা উচিৎ না।
সমাজ চরিত্রটা বোঝা গেল তাহলে।
সেক্স আসে নূপুর পায়ে। বাঁধা দেয়ার কিছু নাই।
যৌনতার প্রত্নচিহ্ন ধারণ করে নৃতাত্ত্বিক ও সাংস্কৃতিক দলিল নিয়ে এসবের ভিত্তিতে বিস্তারিত বর্ণনা ভবিষ্যতের জন্য তোলা রইল। নিশ্চয় সেক্স অতঃপর শিখা অনির্বান।
১৯৭১ এর সেপ্টেম্বর পুজোয় প্রকাশিত “নতুন জীবন”এ অনিল রায় “আমরা ধর্ষিতা হইলাম” লিখলেন।বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নারী নির্যাতন ভিত্তিক মনোগ্রাফ।তাতে দগদগে বিবরণ ছিল।
বাংলাদেশের বাস্তবতার বাইরে রগরগে মনে হতে পারে।শর্মিলা বসু,  ডেথ রেকনিং গ্রণ্হে তারচে’বেশি ভ্রষ্টাচার করেছেন, মিথ্যা করেছেন। তা স্বাধীনতা বিরোধী বাংলাদেশি গোষ্ঠী সুভাষ বোসের নাতনির বয়ান মেনে সগৌরবে পাঠ করে অথচ বেচারা সেই জন অনিল রায় যিনি বসু পরিবারের কেউ নন তো ডাকসাইটে নন।
স্বাধীনতার পরে এখানে আমরা ধর্ষিতা হইলাম ঘুরে ঘুরে এক কথা বলতে থাকলে সেখানে মিজ বসুর মত সত্যের অপলাপ ছিল না।সত্যের বাড়াবাড়ি  ছিল।গা  শিঁউড়ে ওঠা ছিল।পাশবিক ছিল যেহেতু পাশবিক কায়দায় নারী নির্যাতন ঘটেছিল।
মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেয়া অসম্ভব সেই জন্তুস্বভাবি কৃত কর্মের বয়ান ফুটপাতের চটি কাগজে ঠাঁই নিয়ে ব্যবসাপাতি হলো বটে।নির্যাতিত এ ব-দ্বীপের মানুষ তা পড়ল।
হাসান হাফিজুর রহমান সম্পাদিত মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও দলিল পত্রের অষ্টম খন্ড আমার মায়ের শরীর নিংড়ানো ইতিহাস যেভাবে বিবৃত হল তাকে হারাতে পারেনি অনিল রায়।”নেকড়ে অরণ্য”লিখলেন শওকত ওসমান।হয় নাই।ধারে কাছে যায় নাই।
অত্যাচার,  অত্যাচারকে হার মানিয়েছিল।ব্রাত্যজনের ইতিহাস আমাদের রাষ্ট্রীয় ইতিহাসের দিকে এগুচ্ছে।
এখন ফ্লুরসেন্ট উরু দপ করে জ্বলে উঠল।চোখ ঝলসে যায়।

রিপুকাহিনীঃ ঢাকাই চরিত মানস অথবা পর্ণোগ্রাফিয়া আমার ছোট বোন কাশফিয়ার বন্ধু ছিল কিংবা পর্ণোগ্রাফি নয়, রিপু কাহিনীর ইতিহাস যাত্রা নতুবা জলের মত ঘুরে ঘুরে এক কথা বলব ফ্লুরসেন্ট উরুতে চোখ না ধাঁধানো পর্যন্ত।
সৈয়দ রিয়াজুর রশীদ প্রণীত।।
৫ মার্চ মোতাবেক একুশে ফাল্গুন।।

অবলম্বন:
১. কল্যাণ মল্ল বিরচিত অনঙ্গ রঙ্গ।ভাষান্তরঃ মোস্তফা মীর
২. ঢাকার হারিয়ে যাওয়া বইয়ের খোঁজে।মুনতাসীর মামুন
৩. আদর্শ নারী।আকিকুন্নেসা
৪. আধুনিক যৌন বিজ্ঞান।আবুল হাসানাৎ
৫. মোকসুদুল মোমে’নীন
৬. স্বদেশ চর্চা লোক।শারদ ২০১৬।প্রণব সরকার সম্পাদিত।
৭. আধুনিক সেক্স সংহিতা।শিব প্রসাদ সমাদ্দার
৮. কারুবাসনা।২০১৩-১৪, শীত ওগ্রীষ্ম সংখ্যা।সব্যসাচী সেনের সম্পাদনা।
৯. যৌনতা ও বাঙালি।অনুস্টুপ।অনিল আচার্য সম্পাদিত
১০. নিষিদ্ধ বই।শেখ আবদুর রহমান।সাপ্তাহিক বিচিত্রা।
১১. বিজলী রাজ পাত্র, অর্ণব সাহা,সুমন গুণ,অসীম সামন্ত+দীপন চট্টোপাধ্যায়।

মন্তব্য

নাম

অনুবাদ,31,আত্মজীবনী,26,আর্ট-গ্যালারী,1,আলোকচিত্র,1,ই-বুক,7,উৎপলকুমার বসু,23,কবিতা,298,কবিতায় কুড়িগ্রাম,7,কর্মকাণ্ড,17,কার্ল মার্ক্স,1,গল্প,54,ছড়া,1,ছোটগল্প,11,জার্নাল,4,জীবনী,6,দশকথা,24,পাণ্ডুলিপি,10,পুনঃপ্রকাশ,13,পোয়েটিক ফিকশন,1,প্রতিবাদ,1,প্রতিষ্ঠানবিরোধিতা,4,প্রবন্ধ,150,বর্ষা সংখ্যা,1,বসন্ত,15,বিক্রয়বিভাগ,21,বিবিধ,2,বিবৃতি,1,বিশেষ,23,বুলেটিন,4,বৈশাখ,1,ভিডিও,1,মাসুমুল আলম,35,মুক্তগদ্য,36,মে দিবস,1,যুগপূর্তি,6,রিভিউ,5,লকডাউন,2,শাহেদ শাফায়েত,25,শিশুতোষ,1,সন্দীপ দত্ত,8,সম্পাদকীয়,16,সাক্ষাৎকার,21,সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ,18,সৈয়দ রিয়াজুর রশীদ,55,সৈয়দ সাখাওয়াৎ,33,স্মৃতিকথা,14,হেমন্ত,1,
ltr
item
বিন্দু | লিটল ম্যাগাজিন: পর্নোগ্রাফি: ঢাকাই চরিতমানস
পর্নোগ্রাফি: ঢাকাই চরিতমানস
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiQ_SLPx8jtMMnOq8PGfHW9iOovZF4A35RxxmruUDS1YvWU-fBE9lMqJlVDUSqY-D2IQwblF4u8XiVziPfmbnW0jTqYviYVFbaqZWxpjaxh0axe4S0PuzuS6xH7aJZq-fz7dnqBsxpFJv2QsJTOogzvPKsv9KZ1mc94KA-V4sx2HeKvvQ7FrjGAbYY7M7Y/s16000/Syer%20Riazur%20Rashid%20bindumag.png
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiQ_SLPx8jtMMnOq8PGfHW9iOovZF4A35RxxmruUDS1YvWU-fBE9lMqJlVDUSqY-D2IQwblF4u8XiVziPfmbnW0jTqYviYVFbaqZWxpjaxh0axe4S0PuzuS6xH7aJZq-fz7dnqBsxpFJv2QsJTOogzvPKsv9KZ1mc94KA-V4sx2HeKvvQ7FrjGAbYY7M7Y/s72-c/Syer%20Riazur%20Rashid%20bindumag.png
বিন্দু | লিটল ম্যাগাজিন
https://www.bindumag.com/2023/11/syed-riazur-rashid-article-on-pornography.html
https://www.bindumag.com/
https://www.bindumag.com/
https://www.bindumag.com/2023/11/syed-riazur-rashid-article-on-pornography.html
true
121332834233322352
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts আরো Readmore উত্তর Cancel reply মুছুন By নী PAGES POSTS আরো এই লেখাগুলিও পড়ুন... বিষয় ARCHIVE SEARCH সব লেখা কোন রচনায় খুঁজে পাওয়া গেল না নীড় Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy