.header-button .inner > span { font-size: 18px !important; } .header-button .inner i.fa { font-size: 40px !important; } .comment-form-message { background-color: #f4f4f4 !important; font-size: 14px !important; }

সন্দীপ দত্ত সংখ্যা : আশুতোষ বিশ্বাস

সন্দীপ দত্ত বিশেষ সংখ্যা বিন্দু
লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি ও গবেষণা কেন্দ্র, ১৮/এম, টেমার লেন পরিচিতিজ্ঞাপক যে মহামানব তিনি সন্দীপ দত্ত। ‘যে পারে সে আপনি পারে, পারে সে ফুল ফোটাতে’—সেই ফুল ফোটানোর কাজ সম্পন্ন করে ভাবীকালের হাতে ব্যাটন তুলে দিয়ে গেলেন সন্দীপ দত্ত। কে এই সন্দীপ দত্ত? কলকাতার খোদ বনেদি পরিবারের সন্তান, মামা বাড়ি শোভাবাজার, বাবার ব্যবসা কলেজস্ট্রিট, আর তাঁর প্রথম সাহিত্যচর্চার শুরুয়াত টেমার লেন। আজ টেমার লেন তার পুরোন নাম নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেও আসলে সেটা সন্দীপ দত্ত লেন, লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি ও গবেষণা কেন্দ্র। এপার বাংলার প্রায় সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়ার অভয়স্থল। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, প্রেসিডেন্সি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত এম.ফিল, পি-এইচ, ডি. -তে অভিষিক্ত ছাত্র-ছাত্রীদের প্রথম গন্তব্যস্থল এই ১৮/এম, টেমার লেন। কলকাতায় বাগবাজার রিডিং রুম, রামমোহন লাইব্রেরি, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ এমনকি ন্যাশনাল লাইব্রেরি থাকা সত্বেও সন্দীপ দত্তের বাংলা লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি এবং গবেষণাগার স্পর্শ না করলে গবেষণা কর্মের কাজটি পালবিহীন নৌকোর মতই মনে হবে।

ভারতের স্বাধীনতা উত্তরকালে কলকাতার বুকে প্রথম ব্যক্তিগত উদ্যোগে সর্ব-সাধারণের জন্য লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি ও গবেষণা কেন্দ্র গড়ে তোলার অত্যাশ্চর্য পরিকল্পনার জনক সন্দীপ দত্ত। যিনি ব্যক্তিগত জীবনে একজন বাংলার স্কুল শিক্ষক, সূর্য সেন স্ট্রিটের সিটি কলেজিয়েট স্কুলে শিক্ষকতাবৃত্তি ছিল তার পেশা। জানা যায় সিটি কলেজিয়েট স্কুলে চাকুরি পাবার আগে তিনি মেদিনীপুরের রাধামোহনপুরের কাছের একটি স্কুলেও কিছুদিন চাকুরি করেছিলেন। পিতা শ্রী গোলক দত্তের দুই পুত্র সন্তানের মধ্যে বড় সন্তান সন্দীপ দত্ত এবং ছোট সন্তান সুদীপ দত্ত। সুদীপ দত্ত লেখাপড়া শিখে ব্যাঙ্কের চাকুরিতে চলে গিয়েছেন আর সন্দীপ দত্ত থেকে গেলেন ছাত্র আর পড়াশোনার আলোকদিশারী হয়ে। বাংলা ভাষা এবং সাহিত্যের ছাত্র-ছাত্রীদের আলোকদিশারী হয়ে। তিনি ছাত্রদের জন্য, গবেষকদের জন্য চিরকাল শিক্ষক আর তাদের সহযোগী হয়ে ওঠার সাহারা হয়ে উঠলেন, তাদের সহায়ক হয়ে থাকতে চাইলেন। এই কাজটুকু করতে করতে তিনি যে কখন নিঃশব্দ বিপ্লব করে বসেছেন হয়তো নিজেই জানেন না। নিজের হাতেই তৈরি করে ফেলেছেন ইতিহাস। আজকে সেই ইতিহাস খুঁজতে যখন আমরা সবাই উদ্গ্রীব তখন তিনি পাড়ি দিয়েছেন না ফেরার দেশে।

তার দু’চোখে স্বপ্ন। কলকাতার স্কটিশচার্চ কলেজে পড়ার সময় কলকাতার জাতীয় গ্রন্থাগারের একপ্রান্তে ধুলোর মধ্যে বেশ কিছু পত্রিকাকে আস্তাকুড়ে চলে যাবার অপেক্ষায় পড়ে থাকতে দেখে তার বুকটা ধ্বক করে সেদিন জ্বলে উঠেছিল। বলতে গেলে তখন থেকেই স্বপ্ন, সেই স্বপ্নের নতুন নামকরণ ‘লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি ও গবেষণা কেন্দ্র’— বাংলার লিটল ম্যাগাজিনের একটি স্থায়ী ঠিকানা। ২৩ জুন ১৭৫৭, পলাশীর যুদ্ধ। আর ২৩ জুন  ১৯৭৮ সাল, ১৮/এম, টেমার লেনের বাড়িতে এই স্বপ্নকে গ্রানাইট পাথরে মুদ্রিত করা হল—‘বাংলা সাময়িকপত্র পাঠাগার ও গবেষণা কেন্দ্র’। ২৩জুন এই তারিখটি মনে রাখার মত। এই দিনটাতেই সঙ্গে ইংরেজ সেনাপতি রবার্ট ক্লাইভের সঙ্গে যুদ্ধে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার পরাজয়ে বাংলা ইংরেজদের দখলে চলে যায়। সমগ্র বাংলা বিহার উড়িষ্যা ইংরেজের পদানত হয়। কিন্তু লিটল ম্যাগাজিন পা তুলে দাঁড়ানোর দিন হিসেবে ২৩ জুন ১৯৭৮ সাল আমাদের কাছে থাকল। একটা ২৩ আমাদের পরাজয়ের আর একটা ২৩ জুন আমাদের মাথা তুলে দাঁড়ানোর দিন হয়ে সাহিত্যের ইতিহাসে অক্ষয় হয়ে থাকল। লিটল ম্যাগাজিন গবেষণাগার তথা গ্রন্থাগার। ৮মে ১৯৭৯ সালে সেই স্বপ্নের গ্রন্থাগার প্রায় দেড় হাজার লিটল ম্যাগাজিনের ভাণ্ডার নিয়ে সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হল। আনন্দবাজার পত্রিকার ‘কলকাতার কড়চা’র পাতায় শিরোনাম হল— ‘ছোটই সুন্দর’। ১৯৮৬ সালে ‘বাংলা সাময়িকপত্র পাঠাগার ও গবেষণা কেন্দ্র’ নাম পালটে হল ‘লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি ও গবেষণা কেন্দ্র’। ১৯৯৩ সালের শেষের দিক থেকে লিটল ম্যাগাজিন পুরস্কার এবং গবেষক সম্মাননা পুরস্কার প্রদানের ব্যবস্থা করা হল। গ্রাম-গঞ্জ, জেলার প্রান্তিক প্রদেশ থেকে প্রকাশিত লিটল ম্যাগাজিন  যথাযোগ্য সম্মানের জায়গায় উঠে আসল। ঘাম-রক্ত-মেধা এক করে দেওয়া সম্পাদকের খাটুনি আর স্বপ্ন-সেবকদের জাতে ওঠার এক মহানযজ্ঞে সবাইকে এক ছাতার তলায় আশ্রয় দিলেন। হাতে তৈরি একটা ইতিহাসের বুকে তালা চাবি দিয়ে সেই ইতিহাসের দরজা প্রতিদিনের জন্য উন্মুক্ত করে দেবার ঐতিহাসিক প্রক্রিয়া শুরু হল।  মঙ্গল ও বৃহস্পতি বিকেল চারটে থেকে সন্ধে সাটটা, বুধবার সন্ধে ছয়টা থেকে রাত নয়টা, শনিবার দুপুর দুটো থেকে সন্ধে সাতটা, রবিবার সকাল দশটা থেকে দুপুর একটা। অর্থাৎ ‘আমার প্রতিটি দিনই লিটল ম্যাগাজিন দিবস’ বলার মতো স্পর্ধা দেখানোর অনন্য সাধক সন্দীপ দত্ত ছাড়া কলকাতা বাজারে আর কে দেখাতে পেরেছেন! এর আগে কে দেখেছেন কলকাতা বইমেলার এক লিটল ম্যগাজিন স্টল থেকে আর এক লিটল ম্যাগাজিনের স্টলে মাথায় কাগজের টুপি ‘লিটল ম্যাগাজিন পড়ুন, লিটল ম্যাগাজিন ভাবুন, লিটল ম্যাগাজিন কিনে পড়ুন’ স্লোগান শোভিত একটি মানুষ ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এতদিন সাহিত্যের অপাংক্তেয় সাহিত্য পদবাচ্যহীন ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সাহিত্য ভুবন সাহিত্যের মণিকোঠায় জায়গা পেল। জীবন আর ভাবনার মধ্যে ভেদরেখাহীন এই মানুষটিকে ভাবলেই শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে পড়ে। আজকে এই ‘লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি ও গবেষণা কেন্দ্র’-এ পত্রিকা ও লিটল ম্যাগাজিন বিষয়ক গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় আশি হাজার। কতটা প্রয়াস আর আন্তরিক ভালবাসা থাকলে এইরকম কাজ করা যায়—স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়া যায়— এবং লিটল ম্যাগাজিন যে সংগ্রহযোগ্য, সংরক্ষণযোগ্য তা চোখে আঙুল দিয়ে শুধু দেখাননি, প্রমান করে দিয়েছেন।

১৯৭০ সালে কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজে পড়ার সময় ‘পত্রপুট’ নামে একটি পত্রিকার সম্পাদনা শুরু করেন। আর এর পরেই ১৯৭২ সালের মে মাসে কলকাতা ন্যাশনাল লাইব্রেরির কোণে পড়ে থাকা লিটল ম্যাগাজিনের জঞ্জাল বিশেষ তার জীবনকে আরও একরোখা করে দেয়। লিটল ম্যাগাজিনের প্রতি এতদিনের যতটুকু সহানুভূতি ছিল তার সহস্রগুণ ভালবাসা গিয়ে পড়ল এই জঞ্জালকৃত লিটল ম্যাগাজিনের ওপর। এই লিটল ম্যাগাজিনকেই চরম এবং পরম মোক্ষ হিসেবে গ্রহন করলেন এবং বলতে গেলে একটা আন্দোলনের জায়গায় বিষয়টিকে নিয়ে গেলেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তার লিটল ম্যাগাজিন নিয়ে গবেষণা করার বাসনাকে একদিন সজোরে ফিরিয়ে দিয়েছিল কিন্তু আজকের পরিপ্রেক্ষাপট দেখলে বোঝা যায়—তিনি সেদিন যে কাজটি করার জন্য প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন, আজ সেই ক্ষেত্রটি কতটা সম্মানের ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। অনেক অনেক দিকপাল গবেষক তাদের প্রতিভার, গবেষণার সুউচ্চ মেধা বিকিরণে নিজেদের অস্তিত্ব সুগ্রথিত করেছেন।

১৯৮৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণেই আয়োজন করেছিলেন ‘লিটল ম্যাগাজিন প্রদর্শনী ও আলোচনা সভা’। অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ছিলেন ‘বাংলা সাহিত্যের সম্পূর্ণ ইতিহাস’ গ্রন্থের রচয়িতা অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানে বক্তা হিসেবে এসেছিলেন শঙ্খ ঘোষ, পবিত্র সরকার, শুদ্ধসত্ত্ব বসু, বার্ণিক রায়, দেবকুমার বসুর মতো জ্ঞানদীপ্ত সাহিত্যের জ্যোতিষ্কমণ্ডলী। জানি না, ‘বাংলা সাহিত্যের সমগ্র ইতিহাস’ রচয়িতার কাছে কেন লিটল ম্যাগাজিন ‘জঞ্জাল’ বলে মনে হয়েছিল, আজকে সেই জঞ্জালের ভেতর থেকে যে মণিমুক্তা বার হচ্ছে—তা সন্দীপ দত্ত আজীবন আচরিত ধর্মে দেখিয়ে দিয়েছেন। প্রমাণ করে দিয়েছেন— ‘যেখানে দেখিবে ছাই, উড়াইয়া দেখিবে তাই, পাইলে পাইতে পারো অমূল্য রতন’ —গ্রাম-গঞ্জ-বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে ঈশ্বরদত্ত সহজাত প্রজ্ঞা নিয়ে জন্মলাভ করা কবি সাহিত্যিকেরা নিজেদের আনন্দের বশে লেখালেখি করেন। এটা ঠিক মানুষের অগোচরে থেকে লেখালেখি করা, সাহিত্য চর্চাকারী মানুষেরা কেবলই মনের আনন্দে সৃজন নির্মাণের খেলায় মেতে থাকেন, আপনমনে ভাঙেন গড়েন—তাদের অনেকাংশই প্রকাশের আলোয় আসেন না, আসতে পারেন না। সন্দীপ দত্ত সেইসব কবি, সাহিত্যিক, সম্পাদকদের নিয়ে একটা ‘লেখক ব্যাঙ্ক’ গড়ে তোলার স্বপ্নবীজ সেদিন ১৯৯০ সালে ‘অন্তরীপ’ পত্রিকায় বপন করেছিলেন— “সেইসব লেখক যাঁরা নির্জনে চুপচাপ লিখে যান, কিংবা কোন লেখা কোন পত্রিকায় প্রকাশ করবেন বুঝতে পারেন না, কিংবা সঠিক যোগাযোগ হয়ে ওঠে না, সেইসব লেখকদের জন্য তৈরি হলো ‘লেখক ব্যাঙ্ক’। বহির্বঙ্গের লেখকদের যোগাযোগের মাধ্যম হয়ে উঠুক ‘লেখক ব্যাঙ্ক’। আপনার প্রিয় লেখাটি নিচের ঠিকানায় পাঠিয়ে দিন।...” সেই ছোট্ট এক বিজ্ঞাপনেই সেদিন পাঠক, সম্পাদক, লেখক— হতবাক হয়ে  গিয়েছিলেন। লেখকদেরও যে ব্যাঙ্ক হতে পারে! এতদিন আমরা ব্লাড ব্যাঙ্ক, চাকুরীহীন যুবক-যুবতীর বেকার নথিভুক্তির ব্যাঙ্ক, ভোট ব্যাঙ্ক, বুক ব্যাঙ্ক ইত্যাদি নাম শুনেছি, কিন্তু ‘লেখক ব্যাঙ্ক’ একেবারেই নতুন কথা। এই লেখক ব্যাঙ্কে বিভিন্ন জেলার কবি-সাহিত্যিকেরা কবিতা ছাড়াও গদ্য, প্রবন্ধ, গল্প—সবকিছুই জমা দিতেন। সেগুলোকে সন্দীপ দত্ত প্রাথমিকভাবে বাছাই করে রাখতেন। পছন্দের লেখাগুলি সংগ্রহ করে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার সম্পাদকেরা তাদের পত্রিকায় প্রকাশ করতেন। প্রায় সাড়ে তিনশো’রও বেশি লেখা এভাবেই জায়গা করে নিয়েছিল— নামি দামি বিভিন্ন পত্র পত্রিকায়। এই অভিনব লেখক ব্যাঙ্কের আয়ু ছিল বছর তিনেক। ১৯৯২ সালে থেমে যায় লেখক ব্যাঙ্কের অভিনব পথ চলা।

একথা অবশ্যস্বীকার্য যে, সন্দীপ দত্ত শুধুমাত্র একজন লিটল ম্যাগাজিন সংগ্রাহক এবং সংরক্ষকই শুধু নন—নিজে একজন প্রকৃত অর্থেই গবেষক, কবি, প্রাবন্ধিক, সাহিত্যিক এবং আধুনিক বাংলা সাহিত্যের মোক্ষম বিটে বিটে স্ট্রোক ঝঙ্কার নির্দেশক শব্দদ্রষ্টা। তবে এটা ঠিক আমাদের সমাজে কোন কোন প্রজ্ঞাবান মানুষ সম্পর্কে আমরা আলটপকা মন্তব্য করে দিই— তিনি অমুক বিশেষজ্ঞ, তমুক স্রষ্টা, অমুকের জাহাজ, তমুকের সাইক্লোন। তেমনিই সন্দীপ দত্ত সম্পর্কেও হয়েছে হয়তো। ‘লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি ও গবেষণাগার’ এই দিকটিও তার কৃতকর্মের মধ্যে স্বর্ণাক্ষরে লিখিত একটি কর্ম, সেই কর্মের আড়ালে তার প্রতিভা— লেখক-সত্তা কোনভাবে চাপা পড়ে গিয়ে থাকবে। ‘কবিতা কোলাজ’ (১৯৭০) সালে প্রকাশিত তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ, এরপর ‘ভুবনেশ্বরী’ (২০০২), ‘বহতা’ (২০০৪), ‘ছড়া ছড়ির ছড়রা’ (২০০৮),  ‘আলতুং ফালতুং’ (২০১১), ‘ভারতীয় সংস্কৃতি নিগ্রহের ইতিহাস’ (১৯৮৩), ‘বাংলা কবিতার কালপঞ্জি’ (১৯৯০), ‘বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালপঞ্জি’ (১৯৯৪), ‘তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় কালপঞ্জি’ (১৯৯৮), শঙ্খ ঘোষের রচনাপঞ্জি’ (২০২২), ‘প্রসঙ্গ লিটল ম্যাগাজিন’ (১৯৮৭), ‘লিটল ম্যাগাজিন ভাবনা’ (২০০০), ‘লিটল ম্যাগাজিন ভাবনা’ (২০০৯), ‘বাংলা সাময়িক পত্রের ইতিবৃত্ত’ ১, ২, ও ৩ (২০১২), (২০১৬), (যন্ত্রস্থ), ‘লিটল ম্যাগাজিন স্বতন্ত্র অভিযান’ (২০১৯), ‘বাংলা গল্প কবিতা আন্দোলনের তিন দশক’ (১৯৯৩), ‘কবিতা কাজ’ (১৯৯৫), ‘স্ল্যাঙ্গুয়েজ’ (২০০০), ‘বিবাহমঙ্গল’ (২০০২), ‘নষ্ট logic’ (২০২২); সম্পাদনা: ‘জীবনানন্দ প্রাসঙ্গিকী’ (১৯৮০), ‘গল্পের কোলাজ’ (১৯৯০), ‘সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের জীবন ও সাহিত্য’ (১৯৯৫, ২০০২), ‘বাংলা ভাষা বিতর্ক’ (২০০৪), ‘জন্মদিন–জন্মদিন’ (২০০৮), ‘লিটল ম্যগাজিনে দেশভাগ’ (২০১৮)। সম্পাদিত পত্রিকা : ‘পত্রপুট’ (১৯৭০), ‘হার্দ্য’ (১৯৮৭-৮৯), ‘উজ্জ্বল উদ্ধার’ (১৯৯০ থেকে) এবং ‘All India Little Magazine Notice’, (২০১০-২০১১)। লিটল ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়েছে কিন্তু এখন তা হারিয়ে যাবার উপক্রম হয়েছে বা হারিয়ে গেছে— এমন সব লেখাকে তিনি ‘উজ্জ্বল উদ্ধার’ নাম-বিশেষণে গেঁথে দিয়ে আপামর সাহিত্যপ্রেমিদের সামনে তুলে আনার ঐতিহাসিক কাজটি করেছেন। সত্যিই এগুলো সাহিত্যের এক একটি উদ্ধারকৃত স্বর্ণমাণিক্য। হারিয়ে যাওয়া জ্ঞানভাণ্ডারকে আবার সমক্ষে আনার গৌরবময় ‘উজ্জ্বল উদ্ধার’-এ এনে তিনি সাহিত্যের কী যে অভাবনীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন করেছেন তা অনুভবেয়। বাংলা ‘স্ল্যাং ভাষা’ বা ‘ইতর ভাষা’ বলে যেটা পরিচিত সেই ভাষার সংকলন গ্রন্থ হল— ‘স্ল্যাঙ্গুয়েজ’ (২০০০)। এক কথায় বাংলা ‘গালাগালির অভিধান’। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করেছেন— “স্ল্যাঙ্গুয়েজ লিখছেন যখন বলতেন মৃদু হেসে, আমি বাংলা স্ল্যাংয়ের একটি সংকলন করছি। একবার চিঠিতে মজা করে লিখেছিলেন, ‘আমার গালাগালির অভিধান মুখস্ত করছ না কি!’ এ সময় ওঁর মুখ থেকেই জানতে পারি প্রতি ব্যবসায়ে নাকি পারিভাষিক ভাষা আছে। কীভাবে তা বলা হয় তা-ও শুনিয়েছিলেন।”১

বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন এবং ১৯৪৭ সালের ভারতের স্বাধীনতা অর্জনের মুহূর্তে দেশভাগকে কেন্দ্র করে লিটল ম্যাগাজিনগুলি হাত খুলে প্রকাশ করেছে তাদের বিশেষ বিশেষ সংখ্যা। এবং এই সংখ্যাগুলিতে যেসব প্রবন্ধ বা ছোটগল্প মুদ্রিত হয়েছে তার সবগুলিতেই প্রান্তিক ভুক্তভোগী মানুষদের নিজের কথা, নিজের সুখ-দুঃখের কথা অকৃত্রিমভাবে লিখেছেন। কাজেই ভাড়াটে লিখিয়ে নয় বা শাসনযন্ত্রের নির্দেশে লিখিত ইতিহাস নয়—এগুলি একেবারে নিজের মুখে চেখে ঝালের অনুভব, গরম অশ্রুজলে কলম ডুবিয়ে তুলে আনা দ্রোহের অক্ষরলিপি, ভালবাসা, অভিমান, আক্রোশের কার্তুজ। ‘লিটল ম্যগাজিনে দেশভাগ’ (২০১৮) নামের সম্পাদিত গ্রন্থে দেশভাগের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ পাঠকের চোখের সামনে ফুল হয়ে ফুটে থাকল। একজন প্রকৃত সম্পাদকের যে ভূমিকা থাকার কথা সন্দীপ দত্ত সেই ভূমিকাতেই অবস্থান করেছেন, আর আখেরে হাজার বছর পরেও জিজ্ঞাসু পাঠকের জন্য রেখে গেলেন উজ্জ্বল উদ্ধারের মত এক দহন সমুদ্রের তপ্ত বালিয়াড়ি।

একেবারে নেশার মতো তার বাড়ির পাশেই পাতিরাম থেকে অজস্র পত্রপত্রিকা কিনে সংগ্রহ করেছেন সন্দীপ দত্ত। ‘পাতিরাম তাকে আপ-টু ডেট রাখে’ একথা নানাসময়ে নানাভাবে সন্দীপ দত্তের মুখ থেকে শোনা গেছে। তিনি মুখিয়ে থাকতেন, পাতিরামে কবে, কোন-কোন পত্রিকা আসছে, আর এই নেশাটি তার তৈরি হয়েছিল যখন তিনি ক্লাস সিক্স বা সেভেনের ছাত্র তখন থেকে। লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি ও গবেষণাগার প্রতিষ্ঠিত হলে নিজে একেবারে দায়িত্ব নিয়ে প্রতিটি পত্রিকার সূচিপত্র, বিষয় অনুযায়ী বিভাগ করার কাজটি করে ফেলেছিলেন। কোন পত্রিকার কোন সংখ্যায় কী বিষয় আছে, সব তার মস্তিস্কের মধ্যে গাঁথা। সমস্ত পত্রপত্রিকা সবার পড়ার জন্য উন্মুক্ত দ্বার করে দেওয়ার পরেও শিক্ষক-শিক্ষার্থী, গবেষকদের জন্য তাদের প্রয়োজনীয় বিষয়ের সঠিক তাক (রো) সঠিক পত্রিকার সঠিক সংখ্যা অসামান্য নিপুণ দক্ষতায় দেখিয়ে দিতেন। প্রয়োজনে নিজে হাতে সেই পত্রিকা থেকে জেরক্স পর্যন্ত করিয়ে দিতেন- “সকলের জন্য লাইব্রেরি—একথা সগর্বে ঘোষণায় দ্বিধা থাকেনি একটুও। লিটল ম্যাগাজিনের স্বার্থে তাঁর শ্রম-সংগ্রাম-সাধনা ভাবনাকে একত্রিত করেছেন। এ তো সর্বস্ব সমর্পণের পণ।”২ কত ভালবাসা দিয়ে সাজানো তকতকে জেলাভিত্তিক পত্র-পত্রিকার তাক। একটা গোটা জেলা জানে না, তার জেলার কোন প্রান্তে কি লেখালেখি কি পত্র-পত্রিকা বেরোচ্ছে। আর যেটা বেরনোর সঙ্গে সঙ্গে সন্দীপ দত্তের লাইব্রেরিতে সযত্নে রক্ষিত সজ্জিত হচ্ছে, খোঁজ রেখে আগেই কিনে নিয়ে নিজের শখের স্বপ্নের লাইব্রেরিতে স্থান করে দিচ্ছেন। ভারত, বাংলাদেশ পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সমস্ত জেলার লিটল ম্যাগাজিন ১৮এম টেমার লেনে আশ্রয় নেবার অপেক্ষায় যেন বসে থাকত। ক্ষুদ্র পত্রপত্রিকার বিশ্বদর্শন টেমার লেনের লিটল ম্যাগাজিন গবেষণাগার। এমনও শুনেছি—খোদ প্রকাশকের ঘরে সেই নির্দিষ্ট সংখ্যাটি নেই। আতিপাঁতি করে খুঁজেও সম্পাদক পাচ্ছেন না, তখন তার কাছে একটাই ভরসার জায়গা সন্দীপ দত্ত এবং তার লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি।

সন্দীপ দত্ত প্রকৃতিদত্ত প্রতিভা বলে পেয়েছিলেন অসাধারণ মেমোরি পাওয়ার। এটা অবশ্য এমনি এমনি আসে না, হাজার গ্যালন ব্রাহ্মিরসের জারক খেলেও যেটা হয় না, সন্দীপ দত্ত সেটা আয়ত্ব করেছিলেন জীবনের কঠিন কঠোর অধ্যবসায় আর অর্জুনের একাগ্র লক্ষ্যভেদী মৎস্যচক্ষুর দিকে পুরোপুরি দৃষ্টিনিবেশ করার ক্ষমতা একাগ্রতার সার্থক সর্বাত্মক গুণে। একজন লিটলম্যাগ সংগ্রাহক হিসেবেই নিজেকে আটকে রাখেননি, বরং প্রাথমিক কাজের পরবর্তী ধাপে যা যা করণীয় তা করেছেন এবং তার অতিরেক পর্যন্ত নিজেকে নিয়ে গেছেন। সন্দীপ দত্ত মানে এখন লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলন, সন্দীপ দত্ত মানে লিটল ম্যাগাজিনের প্রকাশ এবং তাকে নিয়ে গবেষণার উদাত্ত পরিসর। পৃথিবীর কোন কিছুই ফেলার নয়—আবর্জনা বলে আমাদের বসবাসকৃত পৃথিবীতে কোন কিছু হয় না। সব কিছুই রি-সাইকেলড। দুদে গোয়েন্দারা তাদের সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে স্তুপীকৃত আবর্জনা ঘেঁটে তবেই সিদ্ধান্তে পৌঁছান। সেই ব্যক্তি বা আসামীর নিত্য নৈমিত্তিক ব্যবহার্য ফেলে দেওয়া আবর্জনা থেকে তার চরিত্রের একান্ত উপকরণটাকে আগে দেখে নেন। সন্দীপ দত্তও তার সমস্ত চেতনা আর অধ্যবসায় লিটল নামে পরিগণিত আসলে গ্রেট বিষয়ের দিকে কান খাড়া রেখেছিলেন। তিনি সংগঠক হিসেবে ছিলেন প্রথম থেকে পরিপক্ব—লিটল ম্যাগাজিন পুরস্কার, গবেষক সম্মাননা, গল্পকার, প্রাবন্ধিকদের সম্মাননার প্রবর্তন করেছিলেন। ১৯৯৯ সালে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি আয়োজিত প্রথম লিটল ম্যাগাজিন মেলার প্রবর্তনা এবং ম্যাগাজিন প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করে তিনি লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের জয়তু জাতীয় স্বীকৃতিকে সর্বসমক্ষে এনে দিয়েছিলেন। এটা যে কত বড় জিত তা কেউ বলুক বা না বলুক কালের কপোলতলে চিরস্থায়ী ব্যবস্থা হয়ে থাকল। “সন্দীপ দত্ত সম্পূর্ণ ও সম্পন্ন একটি সাহসী লিটল ম্যাগাজিন মানচিত্রের অবিস্মরণীয় শিরোনাম। যিনি নিজের জীবন ও জীবনীশক্তিকে একটু একটু করে তুলোর মতো হাওয়ায় উড়িয়ে দেন এক একটি ছোট পত্রিকার সঞ্চয়ের জন্য। যিনি নিজের জীবনকে অরক্ষিত রেখে হাজার হাজার লিটলম্যাগ ও কর্মীদের নাম সুরক্ষিত করে গেলেন সুস্থ সাহিত্যের আন্দোলন ও সংগ্রামের ইতিহাসে।”৩  

১৭৩১ খ্রিস্টাব্দে এডওয়ার্ড কেভ সম্পাদিত ‘Gentleman’s Magazine’ প্রকাশের মধ্য দিয়ে ‘ম্যাগাজিন’ কথাটির বৈপ্লবিক বিস্ফার ঘটেছিল। আর যখন সামিয়িক পত্রিকা প্রকাশের শুরুর সময় তখন ‘ম্যাগাজিন’ শব্দটির পিঞ্জরে বাঁধাই করা পত্র-পত্রিকাকে বোঝান হত। আমরা ‘ম্যাগাজিন’ বলতে সাধারণভাবে বুঝি— গুলির প্যাকেট, অর্থাৎ যেখানে অসংখ্যগুলি একটি জ্যাকেটের মধ্যে আবদ্ধ থাকে। এ কে ৪৭ রাইফেলের যে কার্তুজ সেখানে অজস্র গুলি তার ম্যাগাজিনে থাকে। ট্রিগার টেপার সঙ্গে সঙ্গে সেই গুলির ম্যাগাজিন বাক্স থেকে ক্রম-পরম্পরায় একটি একটি করে গুলি বেরিয়ে যেতে থাকে। কিন্তু বাংলা বা ইংরেজি সাময়িকপত্র পত্রিকার নামের সঙ্গে কীভাবে ম্যাগাজিন শব্দটি জুড়ে গেল তা ভাববার বিষয়। গবেষণার বিষয়। তবে এটা ঠিক মানব মনের পিঞ্জর থেকে বেরিয়ে আসা গুলি তা সে সাহিত্য, সমাজ বা সংস্কৃতি, চেতন আধার থেকে উঠে আসুক না কেন, তা তো এক অর্থে ম্যাগাজিন থেকে নিঃসৃত গুলি। সমাজের কোন একটি বিষয়ের বদান্যতায় এই ম্যাগাজিন থেকে গুলিবর্ষণ।  পুরনো চেতনা বা ধ্যান-ধারনাকে সরিয়ে ফেলে নতুন চেতনার বার্তাবাহক হয়ে এই ‘ম্যাগাজিন’ পৃথিবীর সর্বত্র লিটল বা সাময়িকপত্র পত্রিকাকে ম্যাগাজিনের সঙ্গে তুলনীয় শক্তিবহ মাধ্যম হিসেবে গৃহীত হয়েছে। “বারুদশালায় যেমন বারুদ মজুত রাখা হয় তেমনই অক্ষর-শব্দের যেন সংগ্রহশালা পত্রিকাগুলি। সমস্ত কিছু যাতে ঠেসেঠুসে পুরে দেওয়া হয় তাই ‘ম্যাগাজিন’— হয়তো এভাবেই শব্দটি প্রবেশ করেছে পত্রিকার বিকল্পে।”৪ সন্দীপ দত্তের ১৮এম টেমার লেনের গবেষণাগারে ৮০ লক্ষেরও বেশি ম্যাগাজিনের ভাণ্ডার— যা প্রতিদিন চোখের ছোঁয়া পড়ছে। দেশ, সমাজ, মানুষের শত সহস্র চিন্তা-ভাবনার বীজ অক্ষরের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়ে যাচ্ছে—ভাবলে অবাক হতে হয়। এই চিন্তা আর নতুন নতুন ভাবনারাজিকে এক জায়গায় রাখার বিপুল আয়োজনের ভাবনা যার মাথা থেকে আসে তিনিও কত বেশি পরিষ্কার দেখতে পান, সেটাও অনুভবের বিষয়। 

অসম্ভব রকমের স্মৃতিশক্তি নিয়ে সন্দীপ দত্ত আমাদের এই সময়ে জন্মেছিলেন। তার লাইব্রেরিতে যারা যেতেন তাদের মুখ দেখেই বলে দিতে পারতেন গত মাসে কবে এসেছিলেন অথবা এবার কতমাস পরে এলেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সময় আমি মাঝে মাঝে তার লাইব্রেরিতে এটা-ওটা একাডেমিক গবেষণা বিষয়ক পত্রপত্রিকার হাল-হকিকত জানতে যেতাম— তিনি তার ক্লাসে বসা ছাত্রের মতো বলে দিতেন, বুঝিয়ে দিতেন। প্রত্যন্ত গ্রাম বাংলা থেকে কলকাতা পড়তে যাওয়া ছেলেমেয়েদের তিনি কত যে ভরসার জায়গা ছিলেন তা বলে বোঝান যাবে না। দীর্ঘ ২০ বছরের অধিক সময়ের পরেও তাঁর কোন ছাত্র— কোন বিষয় নিয়ে গবেষণা করছে, কার কাছে করছে সব মনে রাখতে পারতেন। এই অভাগা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা সময় থেকে ‘তারারা’ নামে একটি শখের সাহিত্য পত্রিকা করে। একেবারেই অনিয়মিত। দীর্ঘ ২২ বছর কলকাতা ছেড়ে জেলার শহরে চাকুরি নিয়ে চলে আসার পর একসঙ্গে দুটি ‘তারারা’র সাম্প্রতিক সংখ্যা ১৮এম টেমার লেনে পাঠিয়েছিলাম। হঠাৎ একদিন আননোন নম্বর থেকে দুপুরবেলায় আমার ফোন বেজে উঠেছিল। “নমস্কার, আমি সন্দীপ দত্ত বলছি, আপনার ‘তারারা’ পত্রিকা পেয়েছি, বুদ্ধদেব গুহ সংখ্যাটি খুব ভাল হয়েছে…” বলে প্রাবন্ধিকদের নাম ধরে ধরে বলে দিলেন- অমুকেরটা অত্যন্ত ভাল, তমুকেরটা সংশোধিত রিপ্রিন্ট, বাকিগুলো ঠিক আছে। হয়তো ‘তারারা’র পরের সংখ্যা পাঠাব, সন্দীপ দত্তের ফোন কি পাব? বেজে কি উঠবে আমার ফোনের রিংটোন… “নমস্কার, আমি সন্দীপ দত্ত বলছি…!”

ফোন আসুক না আসুক সন্দীপ দত্ত আমাদের কাছেই আছেন, থাকবেন যতদিন লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি ও গবেষণাগার থাকবে।

তথ্যসূত্র:
১। অঞ্জনকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, ‘তেইশে জুন’, ‘কৃত্তিবাসী মেগা’, কৃত্তিবাস পত্রিকা, বর্ষ ৮, সংখ্যা ৮, লিটল নয় গ্রেট’, প্রথম প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৩, সম্পাদক: বীজেশ সাহা, ১৮ এ, গোবিন্দ মণ্ডল রোড, কলকাতা ৭০০ ০০২, পৃ-১৪
২। রমাপ্রসাদ দত্ত, ‘এক অনন্য সংস্কৃতি-সাধক’, ‘কৃত্তিবাসী মেগা’, ‘কৃত্তিবাস’, বর্ষ ৮, সংখ্যা ৮, ‘লিটল নয় গ্রেট’, প্রথম প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৩, সম্পাদক: বীজেশ সাহা, ১৮এ, গোবিন্দ মণ্ডল রোড, কলকাতা ৭০০ ০০২, পৃ-১২ 
৩। কমলেশ দাশগুপ্ত, ‘পুরনো কত ছবি এবং প্রিয় সন্দীপ’, ‘মানবী … অক্ষয় সন্দীপ’, সপ্তদশ বর্ষ, দ্বিতীয় সংখ্যা, এপ্রিল-জুন, ২০২৩, সম্পাদক: শর্মিলা দত্ত, কাছাড় নেটিভ জয়েন্ট স্টক কো. ক্লাব রোড, শিলচর, আসাম, ৭৮৮ ০০১, পৃ-৩৫
৪। সন্দীপ দত্ত, ‘বাংলা সাময়িকপত্রের ইতিবৃত্ত’ (১৮১৮—১৯৯৯), দ্বিতীয় মুদ্রণ: জুলাই ২০১৪, ‘গাঙচিল’, মাটির বাড়ি, ওঙ্কার পার্ক, ঘোলাবাজার, কলকাতা ৭০০ ১১১, ‘কথামুখ’ থেকে উদ্ধৃত।

লিটল নয়, গ্রেট নায়ক সন্দীপ দত্ত 
আশুতোষ বিশ্বাস


মন্তব্য

নাম

অনুবাদ,33,আত্মজীবনী,27,আর্ট-গ্যালারী,1,আলোকচিত্র,1,ই-বুক,7,উৎপলকুমার বসু,26,কবিতা,319,কবিতায় কুড়িগ্রাম,7,কর্মকাণ্ড,16,কার্ল মার্ক্স,1,গল্প,57,ছড়া,1,ছোটগল্প,12,জার্নাল,4,জীবনী,6,দশকথা,24,দিনলিপি,1,পাণ্ডুলিপি,11,পুনঃপ্রকাশ,16,পোয়েটিক ফিকশন,1,প্রতিবাদ,1,প্রতিষ্ঠানবিরোধিতা,4,প্রবন্ধ,160,প্রিন্ট সংখ্যা,5,বই,4,বর্ষা সংখ্যা,1,বসন্ত,15,বিক্রয়বিভাগ,21,বিবিধ,2,বিবৃতি,1,বিশেষ,23,বুলেটিন,4,বৈশাখ,1,ভাষা-সিরিজ,5,ভিডিও,1,মাসুমুল আলম,35,মুক্তগদ্য,37,মে দিবস,1,যুগপূর্তি,6,রিভিউ,5,লকডাউন,2,শম্ভু রক্ষিত,2,শাহেদ শাফায়েত,25,শিশুতোষ,1,সন্দীপ দত্ত,12,সম্পাদকীয়,16,সাক্ষাৎকার,21,সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ,18,সৈয়দ রিয়াজুর রশীদ,55,সৈয়দ সাখাওয়াৎ,33,স্মৃতিকথা,14,হেমন্ত,1,
ltr
item
বিন্দু | লিটল ম্যাগাজিন: সন্দীপ দত্ত সংখ্যা : আশুতোষ বিশ্বাস
সন্দীপ দত্ত সংখ্যা : আশুতোষ বিশ্বাস
আশুতোষ বিশ্বাসের প্রবন্ধ
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiJZVVDi5M7f383Nv2b-B6ufttT84WqiUZmZMjAxFj4X6PmRG344V9_pmcIZY9L11_W4G9nAs-gMgkMig3JaI5VL4c7deBhjKoUMwytQq_-cMrEV207lpgIY89FKYr2w_r5X75ZP38iAhfjorRJTSIVtyt_nDFnqhMAj1wFIDYkq034HLcXHY-Dr2gc71E/s16000/%E0%A6%B8%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%80%E0%A6%AA%20%E0%A6%A6%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%A4%20%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%81%20%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B7%20%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%96%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE.png
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiJZVVDi5M7f383Nv2b-B6ufttT84WqiUZmZMjAxFj4X6PmRG344V9_pmcIZY9L11_W4G9nAs-gMgkMig3JaI5VL4c7deBhjKoUMwytQq_-cMrEV207lpgIY89FKYr2w_r5X75ZP38iAhfjorRJTSIVtyt_nDFnqhMAj1wFIDYkq034HLcXHY-Dr2gc71E/s72-c/%E0%A6%B8%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%80%E0%A6%AA%20%E0%A6%A6%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%A4%20%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%81%20%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B7%20%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%96%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE.png
বিন্দু | লিটল ম্যাগাজিন
https://www.bindumag.com/2025/08/asutosh-biswas.html
https://www.bindumag.com/
https://www.bindumag.com/
https://www.bindumag.com/2025/08/asutosh-biswas.html
true
121332834233322352
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts আরো Readmore উত্তর Cancel reply মুছুন By নী PAGES POSTS আরো এই লেখাগুলিও পড়ুন... বিষয় ARCHIVE SEARCH সব লেখা কোন রচনায় খুঁজে পাওয়া গেল না নীড় Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy