বাঙলা লিটল ম্যাগাজিন সম্পর্কে যারা খোঁজ-খবর রাখেন তাঁরা জানেন, টেমার লেন মানেই ‘কলিকাতা লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি এবং গবেষণা কেন্দ্র’। যা চার দশকের বেশি সময় ধরে বাঙলা ও বাঙালির লিটল ম্যাগাজিন চর্চা ও তত্ত্বতালাশের আখড়া হিসেবে সুপরিচিত। এই উদ্যোগের প্রাণপুরুষ সন্দীপ দত্ত। ব্রাত্য হয়ে থাকা লিটল ম্যাগাজিনগুলিকে তিনি বুকে টেনে নিয়েছিলেন; একক প্রচেষ্টায় গড়ে তুলেছেন জীবন্ত মহীরূহের মতো প্রতিষ্ঠানটি। তাঁর হাতে গড়া লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত লিটল ম্যাগাজিনগুলোই বাংলা সাহিত্যের মূল ধারার প্রতিনিধি হিসেবে আজ প্রতিষ্ঠিত। তাঁর অস্তিত্বের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গিয়েছিলো লিটল ম্যাগাজিন। তাই নিবেদিতপ্রাণ এই মানুষটি ছুটে গিয়েছেন ভারতের বিভিন্ন জেলায়, গ্রামাঞ্চলে, এমনকি বাঙলাদেশেরও নানা লিটল ম্যাগাজিন মেলায়। যারা তাকে দেখেছেন— একটি বিশেষ ছবি তাদের মস্তিষ্কে গাঁথা রয়েছে, মাথায় আটকানো মোটা কাগজের লম্বাটে ধরনের টুপি, জ্বলজ্বল করছে ‘লিটল ম্যাগাজিন পড়ুন, লিটল ম্যাগাজিন কিনুন, লিটল ম্যাগাজিন ভাবুন’। এরকম টুপি পরে কলকাতা বইমেলার মাঠ জুড়ে তিনি ঘুরে বেড়াতেন।
মাত্র একুশ বছর বয়সে স্কটিশ চার্চ কলেজে বাঙলা নিয়ে স্নাতক স্তরে পড়ার সময়ে একদিন আলিপুরের ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে যাতায়াতের সূত্রে তাঁর চোখে পড়ে লাইব্রেরির একটা ঘরে অবহেলায় স্তূপীকৃত হয়ে রয়েছে বিপুল লিটল ম্যাগাজিনের সম্ভার। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, জঞ্জালের মতো এসব পত্রিকা ফেলে দেওয়া হবে। কারণ, ‘এগুলো নাকি নিয়মিত বেরোয় না, বাঁধাইয়ে অসুবিধা আছে তাই ঠিকমতো সংরক্ষণ করার নানা সমস্যা।’ কলেজপড়ুয়া তরুণ সন্দীপ দত্ত লিটল ম্যাগাজিনের এই অপমান সহ্য করতে পারেননি। বিদ্রোহী সন্দীপ প্রতিবাদ করেন এই ঘটনার। দেখা করেন আচার্য সুকুমার সেনের সঙ্গে; তিনি বলেন, ‘কেন ওইসব আবর্জনার স্তুপ নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন!’ অতঃপর সন্দীপ দত্ত সিদ্ধান্ত নেন, সাহিত্যের চিরকালীন ধারা বয়ে চলেছে যে লিটল ম্যাগাজিনের মধ্যে দিয়ে তাদের সংরক্ষণের জন্য তিনিই কিছু করবেন। এবং প্রতিবাদস্বরূপ ন্যাশনাল লাইব্রেরী যাওয়া বন্ধ করে দিলেন৷ এ প্রসঙ্গে তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “ন্যাশানাল লাইব্রেরীর লিটল ম্যাগাজিনের প্রতি যে ব্যবহার তাতে অবাক হলাম। এত যে কাজ হচ্ছে, ভালো ভালো কাজ। সেইসব সংরক্ষণের ভাবনা থেকেই জেদে শুরু করি।” এরপর এইসমস্ত এবং বিভিন্ন জায়গা থেকে সাড়ে সাতশো ছোটপত্রিকা যোগাড় করে তিনি নিজ বাড়িতে লিটল ম্যাগাজিনের প্রদর্শনী করেন। স্থানীয় ক্লাবের ছেলেদের সহযোগিতায় ১৯৭২-এর ২৩ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পাঁচ দিন ধরে চলেছিলো এ প্রদর্শনী। শিল্পী শুভাপ্রসন্ন প্রদর্শনীটি সাজিয়েছিলেন টাটকা শাকসবজি দিয়ে। জাতীয় গ্রন্থাগারের উপেক্ষা, তাচ্ছিল্য, অবমাননার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে এই প্রদর্শনী বলা চলে। বছর ছয়েক নানাভাবে ভাবতে ভাবতে শেষতক তিনি স্থির করলেন, এগুলোর স্থায়ী সংরক্ষণের জন্য কিছু একটা শুরু করা দরকার। তাঁর ভাষ্যে, “ন্যাশনাল লাইব্রেরির ঐ ঘটনাটা আমায় আরও এগিয়ে দেয়। ভাবলাম যে, ন্যাশনাল লাইব্রেরির যদি এমন অবস্থা হয়, তার একটা কাউন্টার এসট্যাব্লিশম্যান্ট (Counter Establishment) আমি ছোট করে আমার বাড়িতেই করতে পারি! প্রদর্শনী করতে গিয়ে আমার কাছে কিছু পত্রিকা জমেছিল, এইভাবেই শুরু বলা যায়। এইসব চিন্তারই ফসল এই লাইব্রেরি।” তাঁর বাড়ির তিনতলায় ছিল স্টাডিরুম। সেটাই নেমে এলো একতলায়। একটা কষ্টিপাথরের বড় টেবিল ছিলো, ছ’টা চেয়ার বানানো হলো, একটা আলমারি আর মায়ের রান্নাঘর থেকে একটা ব়্যাক। দড়িতেও টাঙানো থাকতো পত্রিকা। এই দিয়ে শুরু। ১৯৭৮ সালের ২৩ জুন, ১৮ এম টেমার লেনের পৈতৃক বাড়িতেই শুরু হলো সেই মহাযাত্রা। লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরির সূচনা। কোনো ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন নয়, ঘটা করে অনুষ্ঠান নয়৷ “ডায়েরিতে লিখে রাখলাম শুরুর দিনটা– ২৩শে জুন, ১৯৭৮ সালে টিপ টিপ বৃষ্টি ছিল। আর লিখলাম – To do something constructive”; এভাবেই তিনি স্মৃতিচারণ করেছেন আনুষ্ঠানিকভাবে লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরী ও গবেষণা কেন্দ্র শুরুর। শুধু ওই ডায়রিতে লেখাটুকু ছাড়া কোনো ঐতিহাসিক তথ্য অবধি নেই উদ্বোধনের। উদ্বোধনটিও প্রতিষ্ঠানবিরোধী; যেভাবে যাত্রা শুরু হয় একটি লিটল ম্যাগাজিনের— সেরকমই আড়ম্বরহীন৷
কলেজ স্ট্রিটের পথে ঘুরে ঘুরে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া প্রাচীন পত্রিকাগুলিকে তিনি পরম ভালোবাসায় তুলে আনতেন নিজের বাড়িতে। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত ‘বঙ্গদর্শন’, প্রমথ চৌধুরী সম্পাদিত ‘সবুজপত্র’ পত্রিকার একেবারে শুরুর দিকের অরিজিনাল সংকলন থেকে শুরু করে প্রবাসী, কবিতা, কৃত্তিবাস, কৌরব, শতভিষা, অচলপত্র, দেশলাই বাক্সের আদলের লিটল ম্যাগাজিন, কী নেই তাঁর সংগ্রহে। লাইব্রেরীর বইয়ের র্যা কে থরে থরে সাজানো জানা-অজানা অজস্র ছোট পত্রিকা। ছোট্ট সে ঘরে প্রায় নব্বই হাজারের কাছাকাছি ম্যাগাজিন।
তবে শুধুমাত্র এই লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠাতা বলা হলে অবমূল্যায় করা হবে তাঁকে। আসলে তাঁকে বাঙলা লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের অন্যতম ধারক, পৃষ্ঠপোষক এবং অভিভাবক বলা হলেও অত্যুক্তি করা হয় না বোধয়। প্রকৃতপ্রস্তাবে তিনি লিটল ম্যাগাজিনের অধিকার, সম্মান প্রতিষ্ঠার জন্যে আজীবন লড়াই করে গেছেন।
১৯৫১ সাল। ২৪ জুলাই কলকাতা কলেজস্ট্রিটের ১৮এম ট্যামার লেনের বাড়িতে জন্ম সন্দীপ দত্তের। সেন্ট পলস স্কুল থেকে তাঁর শিক্ষাজীবনের সূত্রপাত হয়। স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে। এরপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাঙলায় এম.এ. করেন। সেখান থেকেই বি.এড. ডিগ্রি অর্জন করেন। সাহিত্যের সঙ্গে শৈশবেই গড়ে উঠেছিল তাঁর নিবিড় সম্পর্ক। তবে ক্লাসিক্যাল লিটারেচারের বদলে তাঁকে বেশি টানত ছোটো পত্রিকা। শখ ছিল সংগ্রহের, সঙ্গে পেপার কাটিং সংগ্রহ করার নেশা।
কলকাতার মির্জাপুরের সিটি স্কুলের শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। সঙ্গত কারণেই একাধিক পত্র-পত্রিকার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন।
১৯৭০ সাল। কলেজে পা রাখার পরই একটি ছোটকাগজ সম্পাদনা শুরু করেন তিনি— ‘পত্রপুট’। এর বছর দু’য়েক পরই ন্যাশনাল লাইব্রেরির সেই আশ্চর্য ঘটনা। যা শুধু সন্দীপ দত্তের জীবনই নয়, বদলে দিয়েছিল বাঙলার লিটল ম্যাগাজিনের পরিমণ্ডলকেও।
১৯৮২ সাল। লিটল ম্যাগাজিন নিয়ে তাঁর গবেষণার প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। হতাশ হননি তিনি। বরং বছরখানেক বাদে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণেই আয়োজন করেছিলেন লিটল ম্যাগাজিন প্রদর্শনী ও আলোচনা অনুষ্ঠান। হাজির করেছিলেন শঙ্খ ঘোষ, পবিত্র সরকার, শুদ্ধসত্ত্ব বসু, বার্ণিক রায়, দেবকুমার বসুর মতো ব্যক্তিত্বদের। তবে সকলে সাদরে গ্রহণ করেননি তাঁর এই উদ্যোগ। সুকুমার সেন সাফ জানিয়েছিলেন, লিটল ম্যাগাজিন আসলে জঞ্জাল।
সুকুমারের এই কটূক্তির প্রতিবাদে পরবর্তীতে ‘পত্রপুট’-এর বইমেলা সংখ্যায় বড় বড় করে ছাপা হয়েছিল ‘জঞ্জাল রাবিশকে প্রশ্রয় দেবেন না’। সঙ্গে ‘লিটল ম্যাগাজিন কিনুন/ লিটল ম্যাগাজিন পড়ুন’ স্লোগানে সাজানো টুপি পরে, বইমেলায় প্রচার শুরু করেন তিনি। বলতে গেলে তাঁর এই অক্লান্ত লড়াই লিটল ম্যাগাজিন করিয়েদের এনে দিয়েছে দাঁড়াবার প্ল্যাটফর্ম। আজ বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে অনুষ্ঠিত হওয়া লিটল ম্যাগাজিন মেলাগুলিই প্রমাণ করে, তাঁর সেদিনের জেদ-স্বপ্ন বৃথা যায়নি, বরং তা ছিলো অত্যন্ত সময়োপযোগী৷
লিটল ম্যাগাজিনের প্রতি তাঁর ভালোবাসা দেখে সত্যিই বিস্মিত হতে হয়! শুধুই কি লিটল ম্যাগাজিনের সংরক্ষণ? না, বরং অপ্রতিষ্ঠিত লেখকদেরও দাঁড়াবার একটা জায়গা তৈরি করতে চেয়েছিলেন তিনি। বহু লেখক, যারা নিশ্চুপে সাহিত্যচর্চা করেন তাঁদের দাঁড়াবার জন্য ‘লেখক ব্যাঙ্ক’ তেমনই একটি প্ল্যাটফর্ম।
সাল ১৯৯০। অন্তরীপ পত্রিকার একটি সংখ্যায় প্রকাশিত হলো এক অভিনব বিজ্ঞাপন৷ লেটারপ্রেসের হরফে ছাপা ছোট্ট বিজ্ঞাপনের দিকে তাকালে ঘিরে ধরবে একরাশ বিস্ময়। সে বিজ্ঞাপনের বক্তব্য এরকম— “সেইসব লেখক যাঁরা নির্জনে চুপচাপ লিখে যান, কিংবা কোন লেখা কোন পত্রিকায় প্রকাশ করবেন বুঝতে পারেন না, কিংবা সঠিক যোগাযোগ হয়ে ওঠে না, সেইসব লেখকদের জন্য তৈরী হলো লেখক ব্যাঙ্ক। বহির্বঙ্গের লেখকদের যোগাযোগের মাধ্যম হয়ে উঠুক লেখক ব্যাঙ্ক। আপনার প্রিয় লেখাটি নিচের ঠিকানায় পাঠিয়ে দিন।” পাঠক, লেখক— সকলেই অবাক হয়েছিলেন। হ্যাঁ, ভাবনাটি অবাক করার মতোনই! অনেক রকমের ব্যাঙ্ক হতে পারে। তাই বলে ‘লেখক ব্যাঙ্ক’— সে আবার কী? অনামী কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ লেখকদের সাহিত্যের মূলস্রোতে নিয়ে আসতেই এহেন উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি। তাঁদের মাথায় ছাতা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন মহীরুহের মতো মানুষটি৷ সেসময় একাধিক ছোটোপত্রিকায় প্রকাশ পেতো লেখক ব্যাঙ্কের বিজ্ঞাপন। কী জমা হতো এই ব্যাঙ্কে? কবিতা ছাড়াও গদ্য, প্রবন্ধ, গল্প— সবকিছুই জমা দিতেন লেখকরা। সেগুলো থেকে মনোগ্রাহী লেখাগুলি প্রাথমিক বাছাই করে আলাদা করে রাখতেন তিনি। পরে সেখান থেকে পছন্দের লেখাগুলি সংগ্রহ করে নিয়ে যেতেন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার সম্পাদকরা। সন্দীপ দত্তের ভাষ্যমতে, ‘সবমিলিয়ে প্রায় সাড়ে তিনশো’রও বেশি লেখা এভাবেই জায়গা করে নিয়েছিল নানা পত্রিকায়।’ তবে এই অভিনব লেখক ব্যাঙ্কের আয়ুষ্কাল ছিল সামান্যই। বছর তিনেক চলার পরই লেখক ব্যাঙ্ক বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন তিনি। তার পিছনে কারন ছিল মূলত দুটি। অনেক সময়ই তাঁর থেকে লেখা সংগ্রহ করে নিয়ে যাওয়ার পর অন্য নামে তা ছাপতেন সম্পাদকরা। পাশাপাশি কোথাও যেন থেকে যেত অনিশ্চয়তার অবকাশও। কোনো লেখা ছাপা হল কিনা— সে ব্যাপারেও অবগত হতে পারতেন না লেখকরা। এই দুই সমস্যার জন্যই ১৯৯২ সালে থেমে যায় লেখক ব্যাঙ্কের পথ চলা।
এমন বেশ কিছু প্রকাশনা তিনি করেছেন যা রীতিমতো সমীহ আদায় করে নেওয়ার মতো। ২০০০ সালে তাঁর ‘লিটল ম্যাগাজিন ভাবনা’ বইটি প্রকাশিত হয়। ২০০২ সালে প্রকাশিত হয় ‘ভুবনেশ্বরী’ এবং বাংলার বিবাহের নানা রীতিনীতি নিয়ে 'বিবাহ-মঙ্গল'। ২০০৫ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর সম্পাদিত ‘বাংলা ভাষা বিতর্ক’। ২০০৮ সালে তাঁর সম্পাদনায় ‘জন্মদিন’ প্রকাশ পায়। বাংলার অশিষ্ট ভাষা নিয়ে 'স্ল্যাংগুয়েজ' বা ‘জীবনানন্দ প্রাসঙ্গিকী’ কিংবা ‘প্রসঙ্গ লিটল ম্যাগাজিন’ ও ‘লিটল ম্যাগাজিন: স্বতন্ত্র অভিযাত্রা’– এর মতোন বই তিনি লিখেছেন। এছাড়া লিখেছেন কবিতা ও ছড়া; ছড়া সংকলন প্রকাশিত হয়েছে ‘ছড়া দিলাম ছড়িয়ে’ নামে। তাঁর প্রথম কবিতার বই ‘কোলাজ’। পরে আরো তিনটি কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে— ‘বহতা’ (২০০৪), ‘ভুবনেশ্বরী’ (২০০৭), ‘কবিতাভাণ্ড’ (২০১৩)। ‘বাংলা সাময়িকপত্রের ইতিবৃত্ত’ বেরিয়েছে দুই খন্ডে। তাঁর লেখা আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ বই ‘বাংলা গল্প-কবিতা আন্দোলনের তিনদশক’, ও ‘বাংলা কবিতার কালপঞ্জি ১৯২৭-১৯৮৯'। এছাড়াও তিনি সম্পাদনা করেছেন ‘লিটল ম্যাগাজিনে দেশভাগ’ এর মতো অমূল্য গ্রন্থ৷ এর পাশাপাশি তিনি রচনা করেছেন অসংখ্য গবেষণামূলক নিবন্ধ, সাময়িক পত্রের ইতিহাস, ছোট-বড় প্রবন্ধ-নিবন্ধ। সন্দীপ দত্তের সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়েছে একগুচ্ছ লিটল ম্যাগাজিন— ‘পত্রপুট’, ‘হার্দ্য’, ‘উজ্জ্বল উদ্ধার’, ‘অল ইন্ডিয়া লিটল ম্যাগাজিন ভয়েস’। তাঁর সংকলিত ‘উজ্জ্বল উদ্ধার’ সিরিজের প্রকাশনাগুলো আজও সাহিত্যপ্রেমী মানুষের কাছে অমূল্য সম্পদ হিসেবে বিবেচিত।
সাল ২০২৩। ১৫ই মার্চ সন্ধ্যায় ৭২ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন বাঙলায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব সন্দীপ দত্ত। এ প্রয়াণ লিটল ম্যাগাজিনের সংরক্ষণ, অস্তিত্বের ক্ষেত্রে এক বড় আঘাত। তিনি চলে যাওয়ায় লিটল ম্যাগাজিনের জগতে এক অপূরণীয় শূন্যতা তৈরি হলো। সন্দীপ দত্তের সংগ্রহে থাকা বহু দুষ্প্রাপ্য পত্রিকা অভি- ভাবকহীন হয়ে গেল। আশ্রয়হীন হয়ে গেল বাঙলার আগামী দিনের লিটল ম্যাগাজিন।
সন্দীপ দত্ত: ছোটকাগজের বড় যোদ্ধা
সাম্য রাইয়ান
সাম্য রাইয়ান
মন্তব্য